বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) প্রধান কার্যালয়ে বদলির চেষ্টা শুরু করেছেন টেলিযোগাযোগ স্টাফ কলেজের (টিএসসি) ডিজি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ তৌফিক।

সরকারের রাজস্ব আত্মসাতের দায়ে বিটিসিএলের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি মামলাতেই তিনি আসামি।

বিটিসিএলের সদস্য (অর্থ) মো. বাহাদুর আলী ৬ জানুয়ারি অবসরোত্তর ছুটিতে (পিএলআর) যাবেন। ফলে ওই পদ খালি হবে। এ কারণে মোহাম্মদ তৌফিক ওই পদের জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বিটিসিএল সূত্রে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চইলে বিটিসিএলের সদস্য (অর্থ) মো. বাহাদুর আলী দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের পত্রে আমি ওই তারিখ দেখেছি। তবে সামনে সরকারি ছুটি আসছে। অফিস যখন চার্জ করবে আমি তখনই যাব।’

এদিকে দুদকের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামি হলেও অজ্ঞাত কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত কিংবা সংযুক্ত করা হয়নি। অপরদিকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামি হওয়া সত্বেও দুদক তাকে গ্রেফতার করেনি।

তবে দুদক জানায়, মামলার তদন্তের স্বার্থে যাকে গ্রেফতার করা প্রয়োজন শুধু তাকেই গ্রেফতার করা হয়। সব মামলায় সব আসামিকে গ্রেফতার করা হয় না।

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর দুদকের দায়ের করা মামলায় আসামির তালিকায় ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ তৌফিকের নাম থাকায় বিটিসিএলের সদস্য (র. ও চা.) পদ থেকে তাকে টিএসসি’র ডিজি হিসিবে বদলি করা হয়। ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে বৈদেশিক কল আদান-প্রদান বিলের রাজস্ব বাবদ বিটিসিএলের প্রাপ্য ১৫ কোটি ৫১ লাখ চার হাজার ১০৭ টাকা আত্মসাতের দায়ে ওই মামলাটি দায়ের করে দুদক।

দুদকের তদন্তে দুর্নীতির অধিকতর তথ্য-প্রমাণ বেরিয়ে এলে ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট মোট প্রায় ৬০৮ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে আরও চারটি মামলা করে কমিশন। বিটিসিএলের আন্তর্জাতিক এক্সচেঞ্জ আইটিএক্স-৫ এবং আইটিএক্স-৭ এ প্রবেশ করা বৈদেশিক ইনকামিং কলের রেকর্ড গায়েবের মাধ্যমে ওই অর্থ আত্মসাত করা হয়। এরমধ্যে দু’টি মামলায় ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ তৌফিক আসামি। যার একটি মামলায় (মামলা নম্বর- ৪০) অর্থের সম্পৃক্ততা ৫৭৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮২ হাজার ৯৭৬ টাকা এবং অপরটিতে (মামলা নম্বর- ৩৯) ২২ কোটি ৭২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৮২ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিটিসিএলের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘অবৈধ ভয়েস অভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি) সংক্রান্ত অভিযান চলাকালে মোহাম্মদ তৌফিককে বিটিসিএলের প্রধান কার্যালয় থেকে টিএসসিতে বদলি করা হয়। তাকে যদি আবারও বিটিসিএলের প্রধান কার্যালয়ে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে সরকারের মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর জন্য এ সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।’

(দ্য রিপোর্ট/এইচবিএস/লতিফ/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৩)