দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা সংলাপের মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে জনগণের কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে মঙ্গলবার বিকেলে বৈঠক শেষে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। বেলা ৩টা ০৫ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত মজিনা বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে তার বাসায় বৈঠক করেন।

মজিনা আশা প্রকাশ করেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো এখনই সংলাপে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ খুঁজে বের করবে। এটা আরো জরুরি হয়ে পড়েছে এবং এটার উপর আমি গুরুত্বারোপ করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছি।’

‘সহিংসতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’ উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ‘সকল দলকে সংহিসতা বর্জন করতে আমাদের আহ্বান আমি পুনরায় ব্যক্ত করছি। কারণ সংহিসতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এটা অগ্রহণযোগ্য এবং এটা এখনই থামতে হবে।’

লিখিত বক্তব্য সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন মার্কিন দূতাবাসের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা সৈয়দ শাহনেয়াজ মহসিন।

মজিনা বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব বিরোধী দলকে স্বাধীনভাবে নিজ মতামত প্রকাশের সুযোগ প্রদান করা এবং বিরোধী দলের দায়িত্ব এ সুযোগ শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা। বিষয়টিও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট, প্রেস ক্লাব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রবিবার সংঘটিত ঘটনাবলী অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ সহিংসতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী এবং কোনোভাবেই যেন এই ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

সম্প্রতি বিরোধী দলের সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের গ্রেফতারের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে মজিনা বলেন, ‘যে বা যারা নিজ গণতান্ত্রিক অধিকার শান্তিপূর্ণভাবে চর্চা করতে চায় তাদের ওপর বিষয়টি ভীতিমূলক প্রভাব ফেলে। দুই পক্ষের মধ্যে ভবিষ্যতে সংলাপের সাফল্যের ক্ষেত্রে সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

এর আগে বেলা ৩টা ৫ মিনিটে খালেদা জিয়ার বাসা গুলশানের ‘ফিরোজা’য় আসেন মজিনা। খালেদা জিয়ার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহ উদ্দিন আহমেদ।

এদিকে, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র ম্যারি হার্ফ সোমবার সাংবাদিকদের কাছে এ হতাশার কথা জানান। বার্তাসংস্থা পিটিআই- এ সংবাদ প্রকাশ করেছে।

ম্যারি হার্ফ বলেন, বাংলাদেশের প্রধান দলগুলো এখনও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো উপায় খুঁজে না পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র হতাশ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। বিশেষ করে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি হলে যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠাবে।’

হার্ফ আরো বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশে আর কোনো সহিংসতা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি জানান, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রধান দলগুলোর সংলাপে বসা এখন সবচেয়ে জরুরি।

হার্ফ বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। সহিংসতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। তাই যত দ্রুত সম্ভব এটা বন্ধ করা উচিৎ।’

অবস্থার শীঘ্রই অগ্রগতি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ-কেএন/এমএআর/এমডি/এনআই/ ডিসেম্বর ৩১, ২০১৩)