দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত দুইদিনে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবরুদ্ধ অবস্থা মঙ্গলবার কিছুটা কমেছে। একইসঙ্গে কমেছে সাধারণ নাগরিক হয়রানিও।

এ দুইদিন সাধারণ নাগরিক ও এলাকাবাসীর কড়া তল্লাশি ও হয়রানির শিকার হতে হয়। অনেকে নিজেদের পরিচয়পত্র দেখানোর পরও গন্তব্যে যেতে না দিয়ে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে চিত্র পাল্টে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকা। খুলেছে পলওয়েল, গাজী ভবন, প্রিন্স প্লাজাসহ আশপাশের বিভিন্ন শপিং সেন্টার, হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ অন্যান্য দোকানপাট।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পৌনে দুইটা পর্যন্ত নয়াপল্টন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দুই পাশের পুলিশি ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে আগের মতোই রয়েছে পুলিশের জলকামান, এপিসি, প্রিজন ভ্যান, সাদা মাইক্রো, পুলিশ ভ্যানসহ অন্যান্য পুলিশি যানবাহন। নেই শুধু বন্ধ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সমাগম।

গত দুইদিন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলার অন্যান্য বাহিনীর দৌড়ঝাপ ছাড়া রাস্তায় কোনো মানুষ চলাচল না থাকলেও মঙ্গলবার সাধারণ মানুষ ও যান চলাচল শুরু হয়েছে। মাঝে মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটও।

এ কদিন বিএনপি কার্যালয়কে কেন্দ্র করে যেখানে শত শত পুলিশ ও র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিজেদের ব্যস্ত রেখেছিল, সেখানে আজ তাদের জনবল স্বাভাবিক দেখা গেছে।

একই সঙ্গে নয়াপল্টন মসজিদ গলি, পুরানা পল্টন লেন, মহানগর বিএনপি কার্যালয় ভাসানী ভবন গলি, আনন্দ ভবন গলি, পলওয়েল মাকের্ট গলিসহ ফকিরাপুল মোড় ও পশ্চিমের নাইটিঙ্গেল মোড়ের কয়েক স্তুরের পুলিশের কঠিন ব্যারিকেডও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এ সব এলাকায় আগের চেয়ে স্বাভাবিক অবস্থা দেখা গেলেও মানুষের মধ্যে রয়েছে চাপা আতঙ্ক। মার্কেটগুলোর প্রায় সব দোকান খুললেও ক্রেতার সংখ্যা ছিল খুবই কম।

নয়াপল্টনের গাজী ভবনের ফ্যাশন অ্যাপারেলসের মালিক মো. সেলিম খান জানালেন, দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্তও তার দোকানে কোনো কিছু বিক্রি হয়নি। গত কয়েকদিনে এ এলাকায় পুলিশের যুদ্ধ যুদ্ধ সাজে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আতঙ্কের কারণেই তারা একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কাস্টমার না থাকায় আমাদের অবস্থা মর মর।

তিনি বলেন, ‘আমরা যারা এখানে দীর্ঘদিন ব্যবসা করে আসছি, তারাই এ কদিন এ এলাকায় আসতে পারিনি। সাধারণ মানুষ আসবে কোথা থেকে?’

উল্লেখ্য, বিএনপির ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’কে বন্ধ করতে সরকারের নির্দেশে গত তিনদিন আগে থেকে নয়াপল্টন ও এর প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে পুলিশ কঠিন ব্যারিকেড ও চেক পোস্ট বসায়। বিরোধী দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ওই এলাকাকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে পুলিশ।

(দ্য রিপোর্ট/টিএস/এনডিএস/ডিসেম্বর ৩১,২০১৩)