দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘বিদেশি পর্যবেক্ষক না আসলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না এটা আমাদের দেশে একটি ব্যাড প্রাকটিস শুরু হয়েছে। এ ব্যাড প্রাকটিস থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বিদেশি পর্যবেক্ষক আসলে সেটা সারপ্লাস। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দেশের মানুষ। যেমনি নিয়েছিল গত ৫ থেকে ৬ হাজার নির্বাচনে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশে বিদ্যমান সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন তিনি।

বিরোধী দলের অনির্দিষ্টকালের অবরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী অনির্দিষ্টকালের তথাকথিত অবরোধ কর্মসূচি অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। অন্যথায় গণবিরোধী এ কর্মসূচির বিরুদ্ধে জনগণ আরও কঠোর প্রতিরোধের পথ বেছে নেবে। ৫ বছরের আন্দোলন করে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেননি, আগামী ৫ দিনেও পারবেন না।’

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলনের নামে জনগণের দৃষ্টিকে ঘুরিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়। কোনো শক্তি নেই বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের সূচিত এ ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। তাই আমরা বলতে চাই, জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। বুলেট নয়, ব্যালটই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র নিয়ামক।’

আগামী ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গণবিরোধীরা জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়ার কোনো সুযোগ পাবে না। জাতীয় অগ্রগতি, উন্নয়ন, গণতন্ত্র, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখতে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’

নানা বিষয়ে মতভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও বিরোধী দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত এবং সাংঘর্ষিক রাজনীতির পথ পরিহার করে সহিষ্ণু রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে আসুন একযোগে কাজ করি।’

নানক বলেন, ‘বিরোধী দলের গোপন এজেন্ডা হচ্ছে- স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ও খালেদা জিয়া পরিবারের প্রায় ডজনখানেক সদস্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলা থেকে নিজেদেও রক্ষা করা।’

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বারবার সংলাপের মাধ্যমে দেশের চলমান সঙ্কট নিরসনের আহ্বান জানানো হলেও বেগম জিয়া ও তার নেতৃত্বাধীন জোট সমঝোতার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে সংঘাত ও সহিংস অপরাজনীতির পথ বেছে নিয়েছে। জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে নিপতিত করেছেন। যা দেশ, জাতি, জনগণ, গণতন্ত্র কোনো কিছুর জন্যই শুভ ফল বয়ে আনবে না।’

সুপ্রিম কোর্টের ঘটনায় বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার কাছে জনগণের পক্ষে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান, ড. এম ওসমান ফারুক ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী উপস্থিত থেকে যে সহিংস কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন তা কী দেশবাসী দেখেনি? সর্বোচ্চ আদালতের সম্মান, মর্যাদা, ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মহামান্য আদালত ও প্রধান বিচারপতির সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। প্রয়োজন মতো আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণেরও দাবি জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এইউএ/এনডিএস/এনআই/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৩)