দুঃসহ অতীত ভুলে সমৃদ্ধির ভবিষ্যতে যাত্রা হোক শুরু
২০১৩ খ্রিস্টবর্ষের শেষ, শুরু হচ্ছে নতুন বছর ২০১৪ সালের পথচলা। যারা সন-তারিখ-ক্ষণ গণনা করেন তাদের কাছে এটি তাৎপর্যপূর্ণ। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বর্ষগণনা আজ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মানুষ এখন সন-তারিখের আলোকে তার সভ্যতাকে সাজায়। সভ্যতার দাবিদার জাতির ইতিহাসে বর্ষগণনা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি তার জাত্যাভিমানও বটে।
খ্রিষ্টবর্ষের জন্ম মানবসভ্যতার ইতিহাসের এমন একটি সময়ে যখন খ্রিষ্টধর্ম পৃথিবীতে মানুষের মুক্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে চলছিল। আর সে কারণেই খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায় নতুন এই সনগণনা পদ্ধতি পুরাতন পদ্ধতির স্থান দখল করে নেয়। খ্রিষ্টান অধ্যুষিত ইউরোপীয় জনগোষ্ঠীর বিশ্বজয়ের পর তা সারা দুনিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করে। পুরাতন সভ্য-জাতির নিজস্ব বর্ষগণনা পদ্ধতি থাকলেও খ্রিষ্টবর্ষ গণনাও তাদের ওপরে চেপে বসে। জাত্যাভিমান দিয়ে কেউই আর এই বর্ষগণনাকে অস্বীকার করতে পারেনি। বরং পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক দাপটের সাথে সাথে খ্রিষ্টবর্ষ আরও দুনিয়াব্যাপী জেঁকে বসেছে।
যা হোক, একটি আন্তর্জাতিক বর্ষগণনা হিসেবে খ্রিস্টবর্ষই আধুনিক সভ্যতার মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত। আমাদের জাতীয় জীবনে যে বছরটি হারিয়ে গেল তার সুখ ও বেদনার অনুভূতি অনেক দিনই আমাদের বয়ে বেড়াতে হবে। সম্ভবত একাত্তর সালের পরে যে ক’টি বছর এ জাতির কাছে দুঃসহ কেটেছে তার মধ্যে এটিও একটি। সে কারণে নতুন বছরকে ঘিরে শান্তিকামী মানুষের চাওয়া অনেক। কেননা ২০১৩-এর দুঃসহ যন্ত্রণায় মানুষ ফিরে যেতে চায় না। তারা এক সুন্দর শান্তিময় ও সমৃদ্ধ ২০১৪ সাল দেখতে চায়।
জাতির সাথে আমরাও আশা করব, রাজনৈতিক অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর নতুন বছরের শুরুতেই মীমাংসা হবে। আমরা আরও আশা করব, দুঃসহ অতীত ভুলে সমৃদ্ধির ভবিষ্যতের যাত্রা শুরু হবে।