দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর সিলেটের ধলই চা বাগানে পাকিস্তান বাহিনীর গুলিতে শাহাদাত বরণ করেন।

ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জের খদ্দ খালিশপুর গ্রামে ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সালে হামিদুর রহমানের জন্ম। বাবা আক্কাস আলী মণ্ডল ছিলেন ভূমিহীন কৃষক এবং মা কায়েদুন্নেসা গৃহিণী। খালিশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েন এবং পরে স্থানীয় নৈশ বিদ্যালয়ে ষষ্ট শ্রেণিতে ভর্তি হলেও দারিদ্রের কারণে পড়ালেখা আর এগোয়নি।

১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেয়ার পরই চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে যান। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। এর পরদিন মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে চলে যান যশোরের কাছে অবস্থানরত ১নং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে। সিপাহী হিসেবে রেজিমেন্ট থেকে তার সৈনিক নাম্বার দেওয়া হয় ৩৯৪৩০১৪। নিযুক্ত হন রান্নার কাজে। সম্মুখ যুদ্ধের প্রতি আগ্রহের কারণে তাকে লে. কাইয়ুমের রানার হিসেবে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। কোদালকাঠি পাকিস্তানি অবস্থানে আক্রমণে তিনি বীরত্ব প্রদর্শন করেন।

২৮ অক্টোবর ১নং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট পাকিস্তান বাহিনীর সিলেটের ধলই চা বাগানের ফাঁড়ি আক্রমণ করে। কিন্তু কোনভাবেই শত্রুর মেশিনগানের আক্রমণকে প্রতিহত করা যাচ্ছিল না। তখন পাকিস্তানি বাংকার ধ্বংসে এগিয়ে যান হামিদুর রহমান এবং শত্রুর মেশিনগানের গুলিতে শাহাদত বরণ করেন। কিন্তু স্তদ্ধ করে দিয়ে যান শত্রুর মেশিনগান।

ফাঁড়ি দখলের পরে মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হামিদুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে। তার মৃতদেহ ভারতের ত্রিপুরার হাতিমের ছড়া গ্রামের স্থানীয় এক পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

২০০৭ সালের ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার হামিদুর রহমানের দেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই অনুযায়ী ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ রাইফেলসের একটি দল ত্রিপুরা সীমান্তে তার দেহাবশেষ গ্রহণ করে।

১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানকে ঢাকার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

(দিরিপোর্ট২৪/ওএস/ডব্লিউএস/জেএম/অক্টোবর ২৮, ২০১৩)