হরতালের দ্বিতীয় দিন : গণপরিবহন কম, যাত্রীদের ভোগান্তি
রানা হানিফ, দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা ৬০ ঘন্টা হরতালের দ্বিতীয় দিন সোমবার রাজধানীতে গণপরিবহনের সংখ্যা কমে গেছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অফিসগামী যাত্রীদের। গাড়ি না পাওয়ায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর অবশেষে বাড়তি ভাড়া দিয়ে রিকশা অথবা সিএনজিতে অফিসে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
হরতালের প্রথম দিন রবিবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংস ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় নিহত হন পাঁচজন। রাজধানীর যত্রতত্র বাসে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই বাসে ঝুলে রওনা দেন গন্তব্যে।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে সোমবার সকালে দেখা যায়, অফিসগামী অনেক যাত্রী অপেক্ষা করলেও গণপরিবহনের উপস্থিতি কম। তাই বাধ্য হয়ে ঝুলে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। হরতালের প্রথম দিন মোহাম্মদপুর বিআরটিসি বাস ডিপো থেকে বাড্ডা-নতুন বাজার ও মতিঝিল-তালতলা রুটে বাস চলাচল করলেও সোমবার সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত বাস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ।
বিআরটিসি বাস কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা আবুল কাসেম এ প্রসঙ্গে দিরিপোর্ট২৪কে বলেন, ‘গতকাল গাবতলী বিআরটিসির বাস ডিপোতে পাঁচটি দ্বিতল বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আজ সকল ডিপো থেকে বাস একটু দেরিতে ছাড়ছে। আমাদের প্রতিটি ডিপোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উপরের নির্দেশ পাওয়ামাত্রই আমরা বাস ছাড়তে শুরু করবো।’
গণপরিবহনের স্বল্পতার জন্য অফিসগামী যাত্রীদের নির্ভর করতে হচ্ছে রিকশা, লেগুনা অথবা সিএনজি অটোরিকশার ওপর। তবে এক্ষেত্রে তাদের গুনতে হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া।
গুলশান ১ নম্বরে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা শাকিল আহমেদকে সকাল ৭টা থেকে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডে। প্রতিদিন তিনি বিআরটিসি অথবা তরঙ্গ পরিবহনে অফিসে যান। কিন্তু আজ দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও তিনি কোন ব্যবস্থা করতে পারছেন না।
শাকিল বলেন, ‘গতকালের চেয়ে আজ পাবলিক পরিবহনের সংখ্যা কমে গেছে। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু বাস নেই। শুনেছি তরঙ্গ পরিবহন চলাচল করবে না। বিআরটিসি আজ ছাড়তে দেরি করছে। অন্যদিন কোন কিছু না পেলেও লেগুনায় যেতে পেরেছি। কিন্তু আজ ভয় লাগছে লেগুনায় চড়তে। যেভাবে ককটেল ও আগুন দেওয়া হচ্ছে তাতে লেগুনা নিরাপদ নয়। সিএনজিতে আজ ভাড়া চাচ্ছে অতিরিক্ত।’
শাকিলের মতো অনেকেই দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর উপায় না পেয়ে লেগুনা অথবা সিএনজিতে চড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
হরতালের দ্বিতীয় দিন রাজধানীর মোহাম্মদপুর, জিগাতলা, শুক্রাবাদ, সোবহানবাগ, কলাবাগান, সিটি কলেজ, কাটাবন ও শাহবাগ এলাকায় পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এসব এলাকায় কিছুক্ষণ পরপর টহল দিচ্ছে র্যাব-বিজিবি ও পুলিশের গাড়ি।
(দিরিপোর্ট২৪/আরএইচ/এমএআর/অক্টোবর ২৮, ২০১৩)