সোহেল রহমান, দ্য রিপোর্ট : সরকারের কাছে এক হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঋণ চাওয়ার পর এবার ‘যৌথ দায় পরিশোধ টিম/কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে বেসরকারি সংগঠন ‘যুবক’ (যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি)।

‘মামলা-হামলা’ ঠেকানোর পাশাপাশি বিতর্কিত সংগঠনটি পুনরায় চাঙ্গা করতে যুবক-এর নির্বাহী পরিচালক হোসাইন আল মাসুম সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন পাঠিয়েছেন।

এর আগে ২ অক্টোবর (২০১৩) গ্রাহকদের দায় পরিশোধে সংগঠনের স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পদের বিপরীতে এক হাজার কোটি টাকা ‘প্রণোদনা ঋণ’ চেয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে যুবক। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই সংগঠনের পক্ষ থেকে এবার ‘যৌথ দায় পরিশোধ টিম/কমিটি’ গঠনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, যুবক-এর এই দুই দফা প্রস্তাবের বিষয়ে সরকার এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান।

যুবক-এর প্রস্তাব অনুযায়ী, সরকার ও যুবক-এর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নয় সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠিত হবে। এর সভাপতি/চেয়ারম্যান হিসেবে সাবেক গভর্নর ও যুবক বিষয়ক প্রথম তদন্ত কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দীন-এর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

যৌথ দায় পরিশোধ টিম/কমিটির অপর সদস্যরা হবেন- মো. রফিকুল ইসলাম (সাবেক সচিব ও যুবক বিষয়ক দ্বিতীয় তদন্ত কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান), মো. মজনুল আহসান (যুবক বিষয়ক প্রথম ও দ্বিতীয় তদন্ত কমিশনের সাবেক সদস্য), প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী অথবা দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, যুবক চেয়ারম্যান আবু মো. সাঈদ, সংগঠনের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ রাশেদুল হুদা চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক হোসাইন আল মাসুম, যুবক হাউজিং-এর চেয়ারম্যান মো. লোকমান হোসেন ও ঢাকা মহানগর যুবক-এর দায়িত্বে নিয়োজিত মো. নূর হোসাইন জুয়েল।

যুবক-এর প্রস্তাবে যৌথ দায় পরিশোধ টিম/কমিটির কাজ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কমিটি পাওনাদারদের ডিড-ডকুমেন্টস যাচাই-বাছাই করে পাওনাদার তালিকা ও পাওনার পরিমাণ চূড়ান্ত করবে। রুগ্ন শিল্প বা অন্য যে কোন প্রযোজ্য আইন/সুযোগের বিবেচনায় দায় মোচনের লক্ষ্যে প্রণোদনা ঋণের এক হাজার কোটি টাকা পাওনাদারদের মধ্যে বিতরণ করবে। যুবক-এর স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পদ সরকারের কাছে গ্যারান্টি হিসেবে প্রদান করবে এবং আগামী ৩/৪ বছরের মধ্যে সরকারের ঋণ পরিশোধ করা হবে মর্মে যুবক কর্তৃপক্ষ সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবে।

লিখিত প্রস্তাবনায় হোসাইন আল মাসুম বলেন, ‘যুবক-এর তিন লাখ সদস্য ও ৫০ হাজার কর্মী এবং তাদের পরিবারের ভোগান্তি জেল-জুলুম, অপমান, হয়রানি লাঘবে দায় পরিশোধের বিকল্প নেই। এ প্রস্তাব গৃহীত হলে ৩/৪ মাসের মধ্যে সকল দায় মেটানো সম্ভব হবে’ বলেও দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ‘অযৌক্তিক, অন্যায় ও অপরিণামদর্শী’ হিসেবে দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ না করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে মেনে নিয়েছে যুবক।’ একই সঙ্গে ‘যুবকের ভাগ্যের নির্মম এই পরিণতির’ জন্য ‘কতিপয় মিডিয়ার অপ-প্রচার’কে দায়ী করেন তিনি।

লিখিত প্রস্তাবে ‘বিবেকের তাড়নায় হয়রানি সহ্য করেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি, পালিয়ে যাইনি’ উল্লেখ করে হোসাইন আল মাসুম দাবি করেন, ‘গত সাত বছরে দুই লাখ ২৫ হাজার গ্রাহকের সাত শ’ কোটির টাকার অধিক পরিশোধ করা হয়েছে।’

লিখিত প্রস্তাবে যুবক-এর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বর্তমান মোট মূল্য এক হাজার কোটি টাকা বলে দাবি করা হয়। অন্যদিকে, যুবকের তিন লাখ সদস্যের বর্তমান পাওনার পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৫৫০ কোটি টাকা।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এমএআর/ এনআই/জানুয়ারি ০১, ২০১৪)