‘সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম ওসমান ফারুক অভিযোগ করে বলেছেন, ভোটারবিহীন নির্বাচন করে সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একই সঙ্গে প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করারও দাবি জানান তিনি।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘এখনও সময় আছে, ৫ জানুয়ারির ভোট বন্ধ করুন। সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের জন্য সংলাপের ব্যবস্থা করুন। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, প্রহসনের এই নির্বাচনে জনগণ মানে না, কেউ ভোট কেন্দ্রে যাবে না।’
গুলশানে নিজ বাসভবনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আকস্মিক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন। এ সময় তিনি দেশের সার্বিক অবরোধের চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এ নির্বাচন নিয়ে সারাবিশ্ব উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সরকার এ বিষয়ে নির্বিকার। দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করার আহ্বান জানান তিনি।
ওসমান ফারুক বলেন, ‘দেশের মানুষ সকল দলের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়, কিন্তু সরকার ও নির্বাচন কমিশন তাদের একদলীয় আকাঙ্খা পূরণে ব্যস্ত। মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। এ জন্য একগুয়েমি পরিহার করে সরকারের সমঝোতায় আসা উচিৎ।’
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করুন। জনগণ এ তামাশার নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। এর বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। আন্দোলনের মাধ্যমেই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটানো হবে। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে- অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকেই এ কমিশন তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এ নির্বাচনের জন্য সরকার ও কমিশন ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।’ নির্বাচনকে দেশের কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে আখ্যা দেন তিনি।
তিনি বলেন, বিরোধী দলের নেতাকে অবরুদ্ধ করে রেখে সরকার ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ দমিয়ে রাখতে পারবে না। দেশে গণতন্ত্রের লেশমাত্রও নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি জনগণের আশা-আকাঙ্খা ধারন করে রাজনীতি করে। কারও প্রেসক্রিপশনে দলটি তাদের কর্মসূচি দেয় না।’
তিনি বলেন, বিএনপি সংঘাত চায় না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চায়। কিন্তু সরকারের নির্যাতন আর উস্কানিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকে না।
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী দল নিধন ও একদলীয় বাকশাল কায়েমের যে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করেছে তা বাস্তবায়নের উদ্দেশে যৌথবাহিনী (র্যাব, বিজিবি, পুলিশ) গঠন করে গোটা দেশকে আজ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের লীলাভূমিতে পরিণত করা হয়েছে।’
জনগণের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনী যেভাবে সরকারের পক্ষে দলীয় সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তাতে স্ব স্ব বাহিনীর দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম, মর্যাদা ও ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ওসমান ফারুক জানান, ছয় দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিন (বৃহস্পতিবার) চলছে। এর মধ্যে বুধবার বিকেলে চাঁদপুর জেলায় যৌথবাহিনীর গুলিতে যুবদলের নেতা ফারুক চৌধুরী নিহত হয়েছেন। সারা দেশে এ পর্যন্ত যৌথবাহিনী বিভিন্ন জেলা থেকে তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
(দ্য রিপোর্ট/টিএস-এমএইচ/এমএআর/জানুয়ারি ০২, ২০১৩)