আমরা যারা
দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর। এর আগে ইন হাউস নিউজ আপ করা শুরু হয় অক্টোবরের প্রথমদিকে। আর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করছে ২০১৪ সালের ৩ জানুয়ারি।
এতো গেল বরফ চাঁইয়ের উপরের দিক। পোর্টালের কর্মযজ্ঞ শুরু হয় আরও প্রায় বছরখানেক আগে। সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মিণ্টু, যুগ্ম সম্পাদক আমিরুল ইসলাম নয়নসহ আরও কয়েকজন মিলে পরিকল্পনা ও প্রাথমিক কাজ গুছিয়ে নেন। মিণ্টু ভাইয়ের প্রচেষ্টার বিষয়ে একটা কথা বললে তার সম্পর্কে খানিকটা বুঝা যাবে। প্রাথমিক বাছাই ও সাক্ষাৎকারের আগে বেশির ভাগ এমপ্লয়ির ক্ষেত্রেই তিনি নিজে কথা বলেছেন। এক কথায় বলা যায়, মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে তার একটি নির্দেশের কথা বলতেই হয়- কোনো খবরেই পূর্বানুমানের সাহায্য নেওয়া যাবে না।
উপদেষ্টা সম্পাদক ফকির শওকত- যিনি নির্বিশেষ দাদা ভাই। সবার দাদা। তার সম্পর্কে নতুন কোনো তথ্য দেওয়ার দরকার নেই। সচরাচর তার লেখা প্রকাশ পেলেও আনুষ্ঠানিক যাত্রা উপলক্ষে তার কবি প্রতিভার সঙ্গে পরিচয় ঘটল হাউসের সবার। কবি ফকির শওকত দীর্ঘজীবী হোন।
যুগ্ম সম্পাদক আমিরুল ইসলাম নয়ন ভাইয়ের আরেকটি পরিচয় হল- নাট্য অভিনেতা ও পরিচালক। তাকে বেশির ভাগ সময় চুপচাপ দেখা গেলেও ইন হাউস মিটিংয়ে তার বুদ্ধিদীপ্ত মতামতের স্ফূরণ লক্ষ্য করা যায়।
হাউসে দুইজন বার্তা সম্পাদক। ইংরেজি সংস্করণে মো. আল আমিন ও বাংলা সংস্করণে হোসেন শহীদ মজনু। তাদের এক সঙ্গে দেখা যায় ইন হাউস মিটিংয়ে। আল আমিন ভাইয়ের লক্ষ্যণীয় দিক হল মার্জিত ও স্টাইলিশ উচ্চারণ। তিনি প্রায়শ নিউজ আইডিয়া দেন। তবে যে বিষয়টা স্পষ্ট হয়- তাহল অনলাইন নিউজ মিডিয়া নিয়ে তার ব্যাপক অভিজ্ঞতা। অন্যদিকে মজনু ভাইয়ের সঙ্গী হল একটি নোটখাতা। ভালো-মন্দ সবকিছু তিনি নোট করেন। আসলেই কি নোট করেন! তার ধমক দেওয়ার ভঙ্গি আর্টিস্টিক! সদা যেন দ্বিধায় থরথর-বেশি কড়া হয়ে গেল কিনা!
চিফ রিপোর্টার এমএকে জিলানী। যার সম্পর্কে সম্পাদক বলেন, তার কবরের আজাব মাফ। …তার মুখ তিতা। কিন্তু কাজ ও আইডিয়ায় তার জুড়ি মেলা ভার। কড়া কথায় রিপোর্টারের কাছ থেকে খবর বুঝে নিতে কোনো ছাড় দেন না। এ কথা বুঝার জন্য হয়ত মারফতি জ্ঞানের দরকার হবে- অন্তত ডেস্কের লোকজনের কাছে। কারণ তিনি প্রায়ই নিউজ রুমে গিয়ে মিষ্টি স্বরে এটা সেটা জানতে চান।
আউটপুট এডিটর মো. সালাউদ্দিন দেখতে ছোটখাট মানুষ। শেয়ারবাজারে খুবই অভিজ্ঞ। এক সময় রীতিমত লোকজনকে শেয়ারবাজার নিয়ে প্রশিক্ষণ দিতেন।
স্পোটর্স এডিটর আরিফ সোহেল সদা হাসিখুশি মানুষ। শুধু খেলার খবর নয়; যেকোনো খবরেই তিনি দারুণ আইডিয়া দেন। ক্রীড়া লেখক সমিতির সাবেক এ সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে সভাপতি পদের জন্য লড়ছেন। যতক্ষণ হাউসে থাকেন মিষ্টি মধুর বাদ-বিবাদে তার কণ্ঠস্বর শোনা যায়। স্পোটর্সের চঞ্চল ঘোষের যোগ্যতা শুধু লেখালেখি নয়। মিষ্টি বুলির সঙ্গে থাকে আরেকটা চিন্তা খাবার-দাবার। স্পোর্টস ডেস্কের অন্যজন হলেন ওবায়দুল ইসলাম চঞ্চল। শান্তশিষ্ট এ মানুষটি কখন আসে-কখন যায় বুঝার উপায় নেই।
বিজনেস এডিটর সোহেল রহমান চুপচাপ মানুষ। কাজের ফাঁকে তাকে বসে থাকতে দেখা যায়। টাইপিংয়ে তার নিয়ন্ত্রণ দেখার মতো। রিপোর্টিংয়ে দক্ষ হলেও বিজনেসে জিরো, ব্যবসা বাণিজ্য মোটেই বোঝেন না।
সাহিত্য ও ধর্ম পাতার সম্পাদক কবি মহিউদ্দিন মোহাম্মদ। তাকে কদাচিত দেখা যায়। তার মাথায় সারাক্ষণ আইডিয়া গিজগিজ করে। আইডিয়া আর মানুষটাকে আলাদা করা মুশকিল।
ডেস্কের দুই ইনচার্জ জসীম উদ্দিন মজুমদার ও মনোজ কুমার দে। জসীম ভাইয়ের চেয়ার কদাচিত খালি দেখা যায়। কাজের বাইরে কিছু নাই। কাজ শেষে তার অন্যরূপ। আর মনোজ দা আর মিটি মিটি হাসি সমর্থক।
সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুর রহমান স্বপন রিপোর্টিংয়ে সবচেয়ে সিনিয়র হলেও মনের দিক থেকে সবচেয়ে তরুণ। বিজনেস বিটের অন্যতম সিনিয়র রিপোর্টার হলেও মো. আমিনুল ইসলামের ঝোঁক প্রযুক্তিতে। সংসদ বিটের প্রতিভাবান রিপোর্টার রাজু হামিদ নতুন নতুন আইডিয়া দিতে সিদ্ধহস্ত। চিড়িয়াখানার চিড়িয়াদের প্রতিও তার আকর্ষণ রয়েছে।
আরেক বয়োজ্যেষ্ঠ রিপোর্টার মতিনুজ্জামান মিটু খুব সহজে জুনিয়রদের সঙ্গে মিশে যান। মজা করতে ভালোবাসেন। তারেক সালমান অনেকটা শান্ত দিঘির মতো। কিন্তু মাঝে মাঝে মজার কথা বলে ঘূর্ণি তোলেন। অপরাধের কাজী জামশেদ নাজিমের বেশ গুরুগম্ভীর ভাব! তবে মনের দিক থেকে নরম ও আমুদে। জুনিয়রদের হুকুম দিতে পছন্দও করেন! ইমাম মাহাদীর তথাকথিত সেনাপতির পেছনে সৈন্য-সামন্ত নিয়ে দৌড় ছিল দেখার মতো। সচিবালয় কাভার করতে করতে রানা মুহাম্মদ মাসুদ হয়ে উঠেছেন শান্ত শিষ্ট, চুপচাপ। শিক্ষা বিট অনুসারে সৌরভ রায় জ্ঞানী টাইপের মানুষ। আবু হানিফ রানার ওপর সম্পাদক আর চিফ রিপোর্টারের অনেক আস্থা। বেশি ওজনদার কিছু হলে তার ঘাড়টাই পছন্দ। ইসলামী দল নিয়ে কাজ করা কাওসার আজম পছন্দ করেন ওয়েস্টার্ন লেবাস। দিন দিন ড্যাশিং হয়ে উঠছেন। বিএনপি বিটের মাহমুদুল হাসান নয়াপল্টনের মতো শান্ত। তবে এর জন্য পুলিশি পাহারার দরকার হয় না। জাতীয় পার্টি ও বাম দলের সাগর আনোয়ার এরশাদের খাস লোক! আওয়ামী বিটের মো. আমানউল্লাহ আমান রাজনীতিবিদের বুলি অনেকটাই আয়ত্ত করে নিয়েছেন। ক্ষমতার প্রভাব কিনা কে জানে! আওয়ামী বিটের বাহরাম খান ঘটনা আড়ালের আড়ালেও যেতে যান। অনেকটা বিদ্বান টাইপ! অর্থনীতি বিটের মো. আমজাদ হোসেন সবকিছুতেই ‘এখনি’ অর্থাৎ অস্থির টাইপ। কাজ না থাকলে হুদায় হাটাহাটি করে। দুদকের হাসিব বিন শহীদ একেবারে দুর্নীতিমুক্ত।
পরিকল্পনা কমিশনের রিপোর্টার জোসনা জামান মাইডিয়ার টাইপ মানুষ। সবার খোঁজ-খবর নেন। রিপোর্ট ছাপতে দেরি হলে টেনশনে পড়ে যান। মৌমিতা মাশিয়াতের ভাই ভাই টাইপ ব্যাপারটা সহকর্মীরা পছন্দ করে। সে খুবই চঞ্চল। এর সঙ্গে ভাইয়ের কী সম্পর্ক কে জানে! এনবিআরের আল-হেলাল শুভ কিচ্ছু জানে না টাইপ এবং জোসনা জামানের সঙ্গে তার ঠাকুর পো টাইপের খাতির! অপরাধের নিজাম উদ্দিন দীপু হাউসের অন্যতম শয়তান! তার মুখ দিয়ে আগুন বের হয়, তবে কেরোসিন লাগে। আহমেদুল্লাহ আশিক নতুন মানুষ- না জ্বালাই। মো. শামীম রিজভী নিয়া কী বলা যায়- সে তো সবাইরে নিয়া বলে। হাইকোর্টের এসএম শাকিল আহমেদ ও নিম্ন আদালতের জাহাঙ্গীর আলম নিয়ে কিছু না বলাই ভালো। মানহানি হতে পারে!
ইসহাক ফারুকী ও মুহম্মদ আকবর- এরা দুইজনেই বিনোদনের মানুষ। কিন্তু এতো চুপচাপ কেন?
শেয়ারবাজার নিয়ে কাজ করেন ওয়ারেছুন্নবী খন্দকার। তার সম্ভবত স্থান পাল্টানোর ভীতি আছে। সবসময় তাকে একই পিসিতে কাজ করতে দেখা যায়। শেয়ারবাজার নিয়ে কাজ তার অন্য দুই সহকর্মী নিয়ে মন্তব্য স্নেহপূর্ণ। যেমন- সদা হাস্যোজ্জ্বল রেজোয়ান আহমেদ খুবই ভালো ছেলে। অনলাইন রিপোর্টিংয়ে পুরস্কার পাওয়া নুরুজ্জামান তানিম একটু পাগলাটে হলেও জিনিয়াস মানুষ।
সিনিয়র সাব এডিটর ও মফস্বল এডিটর আবু রাসেলকে ক্লান্তি স্পর্শ করে না। কেউ তাকে মেজাজ খারাপ করতে দেখেনি। তবে একজন রিপোর্টারের রিপোর্ট দেখা নিয়ে তার ভীতি আছে। মোস্তাফিজুর চৌধুরী মোস্তাককে দেখে বুঝার উপায় নেই তিনি গান কতো পছন্দ করেন। পুরনো বাংলা থেকে পপ মিউজিক সবটাই তার পছন্দের।
সাব এডিটর নাজিম-উদ-দৌলা সাদী প্রথমদিকে হলুদ জামা কাপড় পরে আসতেন। সবাই হিমুর কথা বললে মন খারাপ করতেন। ইদানিং সে বেশে দেখা যায় না। আনোয়ার সাদাত সবুজ ঢাকার বাইরের খবর নিয়ে থাকেন। ঢাকায় না থাকা নিয়ে তার মন একটুও খারাপ করে না। বদিয়ার রহমান গ্লাস ছাড়া জল খেতে পারেন না। আমাদের যখন গরম লাগে, তখন উনার লাগে শীত। সম্পাদকের ভাষায়, ইকবাল জাফর খন্দকার একজন কবি। তার কবি প্রতিভার দেখা সহকর্মীরা না পেলেও সম্পাদনা ও ব্যাকরণের দৌড় স্পষ্ট। প্রশান্ত অধিকারী চুপচাপ মানুষ কিন্তু মজা করার সুযোগ পেলে ছাড়ার লোক নন। ওয়াহিদ সুজনের ব্যক্তিগত ব্লগের নাম ইচ্ছাশূন্য মানুষ। ইচ্ছাশূন্য মানুষকে নিয়ে বলার কিইবা থাকে! শাহনেওয়াজ খান আন্তর্জাতিক খবর থেকে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠছেন। কামরুননাহারের ঝোঁক মজার মজার লেখার প্রতি। দুনিয়াতে অনেক মজার ঘটনা ঘটলেও তার একার পক্ষে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্র ছেড়ে কতোটাই আর মজার পেছনে ছোটা সম্ভব। মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদও আন্তর্জাতিক ঘোড়ার পেছনে দৌড়ান। মাঝ মাঝে ক্লান্তি এলে দুই এক লাইন গান গেয়ে উঠেন। ফারজানা শারমীন ও মেহেদী হাসান সবার স্নেহভাজন। তারা থাকুন দুধে-ভাতে। খেয়া মেজবাকে ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে দেখা গেলেও মাঝে মাঝে লাইফস্টাইল ও স্বাস্থ্য নিয়ে লিখেন। যা তার ললাটে দৃশ্যমান।
ফটো সাংবাদিক মো. গোলাম সিদ্দীক জাণ্টু সবকিছুতেই ‘আচ্ছা ঠিক আছে, হয়ে যাবে’ টাইপ। মো. মেহরাজ রাজ সবাইরে গুরু মানেন। কারণ, শিখার কোনো শেষ নাই। তবে আত্মসম্মানবোধ টনটনে। মো. শাহীন ভুইয়া ইদানিং পক্ষীমানব। সুযোগ পেলেই ছোটদের জ্ঞান দিতে পছন্দ করেন। শাহাদাত হোসেনের দারুণ পরিবর্তন লক্ষ্যণীয়। একদম গব্বর সিং থেকে অমিতাভ বচ্চন টাইপ! সুমন্ত চক্রবর্তী ফটো ক্যাপশনে সবার সেরা। ক্যামেরাই পারে আমির শোয়েবের সব স্বপ্ন পূরণ করতে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল রিপোর্টার সোহেল রানা অদৃশ্য মানব। যাকে কখনো দেখা যায়নি। তবে ডেস্কের লোকেরা প্রতিদিন তার কথা শোনে। আরও কিছু অদৃশ্য মানুষ আছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহিদ-ই-হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুৎফর রহমান সোহাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল্লাহ শুভ ও কলকাতার সুমন মুশাফির।
ইংরেজি সংস্করণে কাজ করেন আনিসুর রহমান, মাহমুদুল হাসান ও মো. ইমাম হোসেন। তারা থাকেন সাত সমুদ্রের ওপারে।
মাস শেষ হওয়ার একদিন আগে এইচআর হেড অ্যান্ড অ্যাডমিন মো. রওশন আলী বুলবুল ও অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. আলমগীরকে দেখলেই ভালো লাগে! চোখ কপালে তুলে বলেন, এখনো বেতন তুলেন নাই! শেখ জহুরুল ইসলাম, শেখ শাহীন আহমেদ ও আলমগীর হোসেন মার্কেটিংয়ের মানুষ- তাই অদৃশ্য! ওয়েব ডেভেলপার রাজিব আল মামুন পুরো সাইট তার মাথার ভেতরে। তাই রাত-বিরাতেও মাথাটার সাহায্য লাগে!
আইটি দেখেন মো. মনির ও মো. মাহবুব হাসান। সদা জাগ্রতদের নিয়ে মশকরা করতে নাই। তারা অটল থাকুক। লেখাজোখা যাদের হাত ধরে আপলোড হয়- মো. সাইফুল ইসলাম, সৈয়দ রিয়াজুল ইসলাম, মো. ইন্তাজুল ইসলাম, মো. ইমরান হোসেন ও মো. আরেফিন ইসলাম। এরা সবাই ‘যথা আজ্ঞা’ টাইপ।
বানান ঠিকঠাক করে দেন- আবদুল হালিম, মো. নুরুল ইসলাম, মো. শাহাজাদা, সাদিকুল ইসলাম, ফয়সাল খান রাসেল, মো. আবদুল লতিফ। যাদের ভুল ধরতে পারলেই আমরা খুশি!
অফিস সহকারী হিসেবে আছে মো. আমিন, মো. মিঠু ও শরীফুল ইসলাম। এরা না থাকলে কি যে হতো!
লেখক : নাম প্রকাশ না করায় শ্রেয়!