মাগুরায় ১৭৯টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা
তিন জেলায় ভোট কেন্দ্রে আগুন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুইদিন আগে শুক্রবার তিন জেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আরো দুই জেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালিয়েছে দৃর্বৃত্তরা। এ ছাড়া আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে মাগুরার ১৭৯টি ভোট কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
কুমিল্লা: কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ভোট কেন্দ্রে পেট্রোল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত পৌনে ১০টায় উপজেলার পীর যাত্রপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুর্বৃত্তরা রাত পৌনে ১০টার দিকে মাদ্রাসা কেন্দ্রে ২টা ককটেল ও একটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এতে মাদ্রাসার বারান্দায় আগুন ধরে যায়। স্থানীয়রা তাৎক্ষনিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। এ ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
চট্টগ্রাম: জেলার সীতাকুন্ডে সৈয়দ আলম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সামনে টানানো সামিয়ানা ও ৩টি বুথে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার বাবুল আক্তার (গোয়েন্দা) জানান, অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরপরই যৌথবাহিনীর অভিযান জোরদার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ডেইলি করটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় লোকজন এবং প্রসাশনের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা জেলা নির্বাচন অফিসের পিছনে দু’টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
একই সময়ে শহরের কাটিয়া মিলবাজার, বাঁকাল ব্রীজ ও কদমতলা এলাকায় আরো ৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।এসব ঘটনায় শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নির্বাচন অফিসের ভেতরে লোকজন কাজ করার সময় ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে দুই ব্যক্তি মটর সাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।
এদিকে, ভোমরা স্থল বন্দরে চালভর্তি একটি ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করে দূর্বৃত্তরা। পরে যৌথ বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
জেলার পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর কে বা কারা নির্বাচন অফিসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মটর সাইকেলযোগে পালিয়ে গেছে উল্লেখ করে বলেন, সেখানে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।এছাড়া ভোমরা বন্দরে ট্রাকের সামনের অংশে দূর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে বলে জানান তিনি।
বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোরলগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসে শুক্রবার রাত পৌনে ৯টায় অগ্নি সংযোগের চেষ্টা করে দুস্কৃতিকারীরা। অফিসের স্যানিটারী পাইপে অগ্নি সংযোগ করে পালিয়ে যায় তারা। আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই ঘটনাটি স্থানীয় লোকজনের চোখে পড়লে তারা আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হন।
খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. আব্দুল হালিম, ওসি আজিজুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার এসএম হাবিবুর রহমান জানান, দুস্কৃতিকারীদের দেওয়া আগুনে স্যানিটারী পাইপের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মাগুরা: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরার ২টি সংসদীয় আসনের মোট ২৬৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৭৯টিকেই ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
মাগুরার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির জানান, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জেলা পুলিশের পাশাপাশি খুলনা থেকে আরআরএফ, এপিবিএন, সিআইডির প্রায় ৩শ সদস্য ইতিমধ্যে জেলায় এসে পৌঁছেছেন। এর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর একটি ব্যাটেলিয়ান স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভ্রাম্যমান টহল ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি অন্য বারের মত প্রয়োজনীয় সংখ্যক আনসার ভিডিপি সদস্য ভোট কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন। ইতিমধ্যে সেনা সদস্যরা মহাসড়ক ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার মো. রোকনুজ্জামান জানান, ইতিমধ্যে জেলার ১৬৯টি কেন্দ্রের জন্য ১৬৯জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১ হাজার ৩৩৪ জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও ২ হাজার ৬৬৮ জন পোলিং অফিসারের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। শনিবার সকালে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের নির্বাচনী সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
(দ্য রিপোর্ট/এইচকে/জানুয়ারি ৪, ২০১৪)