রাজধানীতে পুলিশ ও র্যাবের ১২ হাজার সদস্য
আহমদুল হাসান আসিক, দ্য রিপোর্ট : অবরোধের মধ্যেও সারাদেশে ২ দিনের হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। রবিবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলের দাবিতে শনিবার ভোর ৬টা থেকে সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এ হরতাল ডাকা হয়। হরতাল-অবরোধে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে রাজধানীতে পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) ১২ হাজার সদস্য নেমেছে।
নাশকতার আশঙ্কা থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাবের সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি সূত্র জানায়, দশম জাতীয় নির্বাচন বাতিলের দাবিতে ডাকা হরতালে নাশকতার আশঙ্কা করছে গোয়েন্দারা। এ আশঙ্কা থেকেই শুক্রবার সন্ধ্যার পরেই মাঠে নেমেছে অতিরিক্ত ১০ হাজার পুলিশ এবং ২ হাজার র্যাব সদস্য।
এ ছাড়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাবে যৌথবাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনো ধরনের নাশকতা চালাতে না পারে সে লক্ষ্যে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে।
ডিএমপি জানায়, রাজধানীতে বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো নির্বাচন সামগ্রীর নিরাপত্তা, নির্বাচন কমিশনের ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তার বিষয়গুলোও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। যেখানে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ন্যূনতম আশঙ্কা আছে সেখানেই অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
ডিএমপি আরও জানায়, শনিবার ও রবিবার হরতালকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে ব্যাপক নাশকতার পরিকল্পনা করছে নাশকতাকারীরা। এমনকী তাদের পরিকল্পনা হচ্ছে যে কোনো মূল্যে নির্বাচনকে ঠেকানো।
এর আগে অবরোধকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নাশকতার চেষ্টা করেছে নাশকতাকারীরা। সর্বশেষ শুক্রবার জুমার নামাজের পরও উত্তরার আজমপুরের কাঁচাবাজার এলাকায় নাশকতার চেষ্টা করলে ৬ শিবিরকর্মীকে আটক করে দক্ষিণখান থানা পুলিশ।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে রাজধানীতে নাশকতার লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে একত্রিত হচ্ছে নাশকতাকারীরা। তাদের পরিকল্পনা আছে রাজধানীর যে সব এলাকায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সে সব এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা। আর এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে তারা যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে। এ ছাড়া রাজধানীর ভোট কেন্দ্রগুলোতেও আক্রমণ করতে পারে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, নাশকতাকারীরা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে ভোটারদের মনে ভীতি সৃষ্টি করার মাধ্যমে ভোটদান থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবে।
আর এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই ডিএমপি নিরাপত্তা জোরদারে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থান, মিরপুর এবং উত্তরা এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই এ সব এলাকায় নিরাপত্তার বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
ডিএপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যে কোনো ধরনের নাশকতা রোধে ডিএমপির আগাম প্রস্তুতি রয়েছে। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, নির্বাচনী সরঞ্জামসহ রাজধানীবাসীর নিরাপত্তার বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ডিএমপি সন্ধ্যার পর থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।’
এ বিষয়ে র্যাবের মিডিয়া উইং এর পরিচালক একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নাশকতা হতে পারে এ আশঙ্কা থেকেই আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। রাজধানীতে ৩ হাজার র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।’
(দ্য রিপোর্ট/এএইচএ/এনডিএস/জানুয়ারি ০৪,২০১৪)