thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

‘বিদেশ যাওয়ার চেয়ে দেশে ভিক্ষা করা ভাল’

২০১৭ মার্চ ০৮ ১৮:১৯:০৭
‘বিদেশ যাওয়ার চেয়ে দেশে ভিক্ষা করা ভাল’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ভাগ্য বদলাতে চেয়েছিলেন শিপ্রা খাতুন। বিদেশে গেলে নাকি বেশি টাকা পাওয়া যায়, ভাল খাওয়া-পরা যায়। বিদেশ গেলে ভাগ্য বদলে যায় নিমেষেই। সে জন্য দালালের মাধ্যমে জর্ডান গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিদেশ গিয়েও ভাগ্য ফেরাতে পারেনি শিপ্রা। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি কাজ করেও টাকা না পাওয়া, সপ্তাহে একবার ভাত খাওয়া বা নিয়মিত মারধরের কারণে সে স্বপ্নে চিড় ধরে শিগগিরই। দেশে ফিরতে পারলে বেঁচে যায় শিপ্রা। কিন্তু মালিকের চাপে দেশে ফিরতে পারে না সে। বাথরুমে লুকিয়ে লুকিয়ে কান্না করে নিজেকে হালকা করে। দশ মাস কাজ করে ছয় মাসের বেতন না পেয়েই দেশে চলে আসে সে। এসে সবার উদ্দেশ্যে বলে, বিদেশে যাওয়ার চেয়ে দেশে ভিক্ষা করা ভাল।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বুধবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ওয়্যারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক নারী অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় কান্নাভরা কণ্ঠে কথাগুলো বলেন শিপ্রা। তার সঙ্গে শাহিনা আক্তার, রহিমা খাতুন, রেজিয়া আক্তারসহ বিদেশ ফেরত ভুক্তভোগী নারীরা অংশ নেয়।

তারা বলেন, দেশি দালালরাই তাদের বেশি সর্বনাশ করে। দালালরা তাদেরকে পারলে বিদেশিদের কাছে বিক্রি করে দেয়। বিদেশি মালিকরা তাদেরকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের সাথে ভাল ব্যবহার করলেও বাংলাদেশি শ্রমিকদের তারা মিসকিন বলে জানে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের কাছে এমন নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে সে সব থেকে পরিত্রাণ চান এসব বিদেশফেরত নারীরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ওয়্যারবির পরিচালক জেসিয়া খাতুন বলেন, দেশের নারীরা বিদেশে গিয়ে নানা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। শারীরিক নির্যাতন থেকে শুরু করে যৌন নির্যাতন কোন কিছু বাদ নেই যা তাদের সাথে করা হয় না। দালালদের দৌরাত্ম্যের কাছে নারীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ নজর রাখা প্রয়োজন। যেহেতু তারা দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক রিনা রায় বলেন, অভিবাসন নিয়ে জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি। পাশাপাশি শ্রমিকদেরকে বিদেশে পাঠানোর আগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে তারা বেশি আয় করতে পারবে, রিজার্ভ বাড়বে।

সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে যতটা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেটা যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারকে এ বিষয়ে আরও গুরুত্ব দিতে হবে।

অভিবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব শাহিনা ফেরদৌস বলেন, সরকার নারী অভিবাসীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। অচিরেই এসব সমস্যার সমাধান হবে।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়্যারবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুল হক, ওয়্যারবির সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এএস/এমএইচএ/এপি/মার্চ ০৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর