thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল 24, ৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ১০ শাওয়াল 1445

বিজ্ঞানীদের তথ্য আমলে নিচ্ছে না সরকার : সুলতানা কামাল

২০১৭ জুন ১৭ ১৯:৪৪:৪৫
বিজ্ঞানীদের তথ্য আমলে নিচ্ছে না সরকার : সুলতানা কামাল

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘রামপাল প্রকল্পের ক্ষতির বিষয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাত বিজ্ঞানীদের গবেষণা ও তথ্য কোন কিছুই আমলে নিচ্ছে না সরকার। বরং এগুয়েমী ভাবে ঢালাও বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছে। সরকারের নীতি নির্ধারকরা কোন প্রকার যুক্তি খণ্ডন না করেই বারবার শুধু বলছেন আমাদের বক্তব্য ভিত্তিহীন।’

শনিবার (১৭ জুন) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি হল কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘পারদের নিঃসরণ, বায়ুমন্ডলে সঞ্চয়ন ও প্রতিবেশ দূষণ : সুন্দরবনের জীব-ভৌগলিক বলয়ে রামপাল থেকে নির্গত পারদের প্রভাব’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ব্লু-প্ল্যানেট ইনিশিয়াটিভ ও ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে।

সুলতানা কামাল বলেন, রামপাল প্রকল্পের ক্ষতির বিষয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাত বিজ্ঞানীদের গবেষণা ও তথ্য কোন কিছুই আমলে নিচ্ছে না সরকার বরং এগুয়েমীভাবে ঢালাও বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছে। সরকারের নীতি নির্ধারকরা কোন প্রকার যুক্তি খন্ডন না করেই বারবার শুধু বলছেন আমাদের বক্তব্য ভিত্তিহীন।

তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্য যদি ভিত্তিহীন হয়, তাহলে আপনারা যুক্তি ও তথ্য দিয়ে তা খন্ডন করুন এবং কোন তথ্যটি ভিত্তিহীন তা জনগণের নিকট প্রকাশ করুন।

তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে এই প্রকল্পটি ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক। এর ক্ষতিকর প্রভাব শুরু হলে থামানোর পথ থাকবে না। যার প্রভাবে মানুষ মারা যাবে, পঙ্গুত্ব সৃষ্টি হবে। পরিবেশ ও সুন্দরবনে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। পারদ বিষাক্ত পদার্থ, এটা আমরা জানি। রামপালে এর উদগীরণের ফলে পরিবেশ, প্রতিবেশ, প্রাণীকূল ও খাদ্যচক্রের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকিতে পড়বে। বিজ্ঞানীদের গবেষণাগুলো বিবেচনা ও পর্যালোচনায় নিয়ে ভবিষ্যত বিপর্যয়ের হাত থেকে পরিবেশ-প্রতিবেশ মানুষকে রক্ষার জন্য নীতিনির্ধারক ও সরকারের প্রতি আহবান জানান।

বিজ্ঞানীদের গবেষণাগুলো বিবেচনা ও পর্যালোচনায় নিয়ে ভবিষ্যত বিপর্যয়ের হাত থেকে পরিবেশ-প্রতিবেশ মানুষকে রক্ষার জন্য নীতিনির্ধারক ও সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, শুধুমাত্র ক্ষমতার কথা না ভেবে দায়বদ্ধতার কথাও চিন্তা করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সিরাকাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ও গবেষক চার্লস টি ড্রিসকল এর পক্ষে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম। এ সময় বক্তব্য দেন বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ও ডক্টরস ফর হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্ট এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুন নাহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশ, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল মতিন ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি-পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। রুহিন হোসেন প্রিন্স, মিহির বিশ্বাস ও আলমগীর কবিরসহ বাপা ও সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক বদরুল ইমাম গবেষণার সার সংক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পারদ নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের কোন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে না। এই কেন্দ্র সন্নিহিত অঞ্চল পারদ দূষণের বড় ঝুঁকি বহন করবে। এই ঝুঁকি নদী ও বায়ু পথে জলজ এবং বনজ পরিবেশ যেখানে পশুর নদী ও গাঁ-ঘেষা সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্যস্থান অবস্থিত সে সমূহকে অন্তর্ভূক্ত করে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এই অঞ্চলের বণ্যপ্রাণীকূল যারা মাছ খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে যেমন-পাখি সরীসৃপ ও বাঘ, তাদেরকে পারদ দূষণের ঝুঁকিতে ফেলবে। একই কারণে এখানে বসবাসকারী মানুষ যারা মাছ খেয়ে থাকে তাদেরকেও পারদ দূষণের আওতায় নিয়ে আসবে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএম/এজে/এপি/জুন ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর