thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ 24, ৫ চৈত্র ১৪৩০,  ৯ রমজান 1445

ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্র্য বিমোচন হয় না, লালন হয়: প্রধানমন্ত্রী

২০১৯ নভেম্বর ১৪ ১৪:৪২:২৪
ক্ষুদ্রঋণে দারিদ্র্য বিমোচন হয় না, লালন হয়: প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত করেছি। এবার লক্ষ্য দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা। দেশের প্রতিটি পরিবারকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই।’

তিনি বলেন, সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপের লক্ষ্য- টেকসই উন্নয়ন। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির ফলে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। আগামীতে এটিকে ১৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে চাই।

বহুমুখী পরিকল্পনার মাধ্যমে মানুষের জীবন মানোন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় ক্ষুদ্রঋণ আমরা সমর্থন দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম দারিদ্র্য বিমোচন হবে। পরে দেখলাম দারিদ্র্য বিমোচন না হয়ে দারিদ্র্য লালনপালন করা হয়।’

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত হলে জনগণ করতালির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

কৃষিপ্রধান দেশে এই সরকার কৃষিঋণ সহজ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্গাচাষি ঋণ পেত বিনা জামানতে। আমরাই তাদের ঋণ দিতে শুরু করি। সহজেই কৃষি সরঞ্জাম পেতে কৃষকদের কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষকদের যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার আমরা করি। পাশাপাশি শিল্পায়নের দিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিই। এবং এই শিল্পায়ন যাতে সারা দেশে হয় এবং কৃষিজমিও যেন আমাদের রক্ষা পায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছি।’

তিনি আরও বলেন, আমরা ভূমিহীনদের ভূমি দিয়েছি। যারা গৃহহারা তাদের ঘর করে দিয়েছি এবং এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। মানুষ যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি।

‘আমার বাড়ি আমার খামার’সহ বেশ কিছু কর্মসূচির মাধ্যমে প্রত্যেক গ্রামীণ পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে এই সরকারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

দেশকে ভিক্ষুকমুক্ত করার জন্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা করেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কিছু জেলা ভিক্ষুকমুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা শহরের বস্তিতে বসবাস করে তাদের জন্য ঘরে ফেরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।

তিনি যোগ করেন, ‘জাতির পিতা একটি কথা বলতেন- ভিক্ষুক জাতির কোনো ইজ্জত থাকে না। আমরা ভিক্ষুক জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাই না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখন ভূমি ব্যবহারের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই নীতিমালা যাতে যথাযথভাবে কার্যকর হয়, সে পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। কেউ যাতে তিন ফসলি ও দুই ফসলি জমি নষ্ট না করে সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ আমাদের দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, যা আমরা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করে ফেলেছি। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আমাদের ধরে রাখতে হবে।’

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ রচিত ‘এসো সাম্যের গান গাই’ জাগরণের গান পরিবেশন করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ। কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় বেগম মতিয়া চৌধুরীকে আজীবন সম্মাননা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদের উৎপাদিত পণ্যপ্রদর্শনী ও বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এ মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পিকেএসএফের সহযোগী সংস্থা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানসহ ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের ১৯০টি স্টল এ মেলায় স্থান পাবে।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ১৪,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর