thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ১৯ মে 24, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ১১ জিলকদ  1445

সহিংসতার আশঙ্কায় কড়া নিরাপত্তা

২০১৪ জানুয়ারি ০৪ ২২:১৯:৫৬
সহিংসতার আশঙ্কায় কড়া নিরাপত্তা

কাজী জামশেদ নাজিম ও আহমদুল হাসান আসিক, দ্য রিপোর্ট : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য নির্বাচনী এলাকায় বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা করছে গোয়েন্দা সংস্থা। সহিংসতা ঠেকাতে ভোটকেন্দ্রগুলোকে ঘিরে ইতোমধ্যেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, ভোটকেন্দ্রে আগুন দেওয়াসহ ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালানো হতে পারে। মূলত ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দিতে এ নাশকতার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও জানায় তারা।

এদিকে ভোট কেন্দ্র ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে দ্য রিপোর্টকে জানিয়েছেন পুলিশ মহা-পরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার। তিনি বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা থেকে ভোটকেন্দ্র ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালন শুরু করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ ও র‌্যাব মাঠ পর্যায়ে নাশকতা রোধে কাজ করছে।’

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হলেও এখনও আশঙ্কা কাটেনি। যে কোনো সময় ভোটকেন্দ্রে নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে।

বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা

নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেও শুক্রবার উত্তরার একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা শনিবার সকালে দক্ষিণখান থানা এলাকায় একটি ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। এ ছাড়া শনিবার কদমতলী থানা এলাকায় একটি ভোটকেন্দ্র থেকে ৬টি হাতবোমা উদ্ধার করে পুলিশ।

দেশের অন্যান্য স্থানের মধ্যে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময় ব্যালট পেপার ও বাক্সে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভোট উপলক্ষে উপজেলা সদর থেকে বিকেলে ব্যালট বাক্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভটভটিতে করে কুঞ্জমহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই ভটভটিতে পুলিশ ও আনসার সদস্যরাও ছিলেন। ভটভটিটি উপজেলার মহিপুর বাজারে পৌঁছালে শতাধিক লোক এসে তা আটকে দেয়। পরে তারা ভটভটি থেকে ভোটের ব্যালট বাক্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লতিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আগুনে ব্যালট বাক্স ও প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত বিদ্যালয়গুলোতে আগুন দেওয়া শুরু হয়। শনিবার দুপুর পর্যন্ত শতাধিক বিদ্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের দায়ী করেছে পুলিশ। তবে অধিকাংশ স্থানেই এর সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

ফেনীর দাগনভূঁইয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে সাতটি বিদ্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরে ১১টি এবং টাঙ্গাইল, বরগুনা, রংপুর ও রাজশাহীতে চারটি করে ভোটকেন্দ্রে আগুন দেওয়া হয়। গত ৩৬ ঘণ্টায় ৬৬টি কেন্দ্র পুড়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি ভোটকেন্দ্রে মলমূত্র ছিটানোর ঘটনাও ঘটেছে।

রাজধানীর ভোটকেন্দ্রে আগুন দেওয়া নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী রাজধানীর সব কেন্দ্রই পুড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করায় নাশকতা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে ভোটার ও ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।’

ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঢাকার ৮টি আসনের এক হাজার ২১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ ভোটকেন্দ্রের জন্য আলাদাভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে সারা দেশেই নিরাপদে ভোট গ্রহণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পুলিশ প্রধান হাসান মাহমুদ খন্দকার। তিনি বলেন, ‘শনিবার থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে র‌্যাব, বিজিবি’র সঙ্গে সমন্বয় করে পুরো রাজধানীসহ সারা দেশে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়াও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গেও সমন্বয় করা হচ্ছে। এর ফলে কোনো কেন্দ্রেই গোলযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে না।’ ভোটাররা নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে আসতে পুলিশের যা যা করণীয় তার সবই করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/কেজেএন-এএইচএ/এসকে/এনআই/জানুয়ারি ০৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশেষ সংবাদ এর সর্বশেষ খবর

বিশেষ সংবাদ - এর সব খবর