তাওফীক আল্-হাকীমের উপন্যাস
লায়লাতুয্ যিফাফ্

তরজমা : ড. এম. এ মোত্তালিব (পূর্ব প্রকাশের পর)
(দুই)
দিনের পর দিন অতিবাহিত হতে থাকে। বর সুদক্ষ নায়কের ন্যায় তার প্রতিশ্রুত অভিনয়কর্ম যথাযথভাবে চালিয়ে যায়। দুর্ব্যবহারের মাধ্যমে শাশুড়িকেও সূক্ষ্মভাবে বুঝাতে চেষ্টা করে- এ যাবত তার একমাত্র ললনা-দুলালীর জন্যে যেমন স্বামী কামনা করতেন- এ সে ধরনের নয়। কিন্তু সমস্যা একটাই। ঐ সমস্যাটাই তার কাছে প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা হল- একই ঘরে ভাগাভাগি করে অবস্থান করার প্রশ্ন। এ রকম অকল্পনীয় ও অবিশ্বাস্যভাবে নকল স্বামী-স্ত্রীর অভিনয় করে আর কয় দিন টিকা যায়। একটা ভরা যৌবনা নারীর সাথে একই ঘরে রাত কাটানো তার পক্ষে আর সম্ভব হয়ে ওঠছে না। এক ঘরে অবস্থান করেও তারা উভয়ে যেন একেবারেই অচেনা। ভরা যৌবনের উম্মাদনা সদ্য বিবাহিত নব দম্পতিকে সারাক্ষণ নাড়া দিতে থাকে। প্রতি মুহূর্তে জৈবিক বাসনা পূরণে উচ্ছ্বসিত কামনা তাড়িত করে। বর অনুভব করে আলাদা বিছানায় থাকা সত্ত্বেও কনের শ্বাস-প্রশ্বাসের গরম বাতাস যেন তার মুখমণ্ডলকে ঝলসে দিচ্ছে। টগবগে যৌবনে ভরা এ রমণীর প্রতিটি নড়াচড়া যেন বরের চোখের সামান্যতম তন্দ্রাকেও কেড়ে নিতে থাকে।
কনে যখন কাশি দেয়, বর তখন নড়েচড়ে পাতলা কম্বলের নীচে মাথা গুঁজে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে। জানালা দিয়ে পূর্ণিমা চাঁদের মিষ্টিআলো কনের মুখে পড়ে। আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে বর ভাবতে থাকে চাঁদের আলোয় কনের চেহারার প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ অপরূপ শোভায় কি-না চমৎকার লাগছে! চাঁদের আলোও যাতে কনের ঘুমে কোনো ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে সে জন্য জানালায় ঝুলিয়ে দেয় একটা পর্দা। কালেমা পড়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েও অপরিচিতা নারীটি যখন এপাশ থেকে ওপাশ হয় বরও তার পাশ বদলিয়ে অন্য কাত হয়। গভীর রাতে কনে যখন প্রয়োজন সারতে জেগে ওঠে বর তখন গভীর ঘুমের ভান করে। অস্থিরতার ভারী শ্বাস-প্রশ্বাসকে কঠিনভাবে চেপে রাখে। কনে বুঝতেই পারে না- সে জেগে আছে। খাটের ওপর এ যেন এক শান্ত-ঘুমন্ত অবিচ্ছেদ্য আপদ। ওদিকে কনেও পুরোপুরিই জাগ্রত। তার চোখেও বিন্দু মাত্র ঘুম নেই। কনের তন্দ্রাহীন চোখের চাহনি বরের বিছানার সবকিছুকে যেন জড়োসড়ো করে ফেলে। শিথিল হয়ে আসে তার সকল শিরা-উপশিরা। চুর্ণ-বিচুর্ণ হতে থাকে তার সকল আশা-আকাঙ্ক্ষা। বিছানায় সে অস্থির হয়ে কাতরাতে থাকে। নিজেকে মনে হয় একেবারে তুচ্ছ কোনো খড়-কুটো।
সম্পূর্ণ ভিন্ন বিছানায় থাকা সত্ত্বেও নাকে ভেসে আসতে থাকে কনের শরীরের মেয়েলী ঘ্রাণ। অনুভব করে ঘুমের মাঝে কনের ছন্দ মিলানো শ্বাস-প্রশ্বাসের কোমল পরশ। মৃদু-অস্পষ্ট ও থেমে থেমে আসা কনের নাকের ডাক বরের কাছে বাদ্যযন্ত্রের নীরবচ্ছিন্ন ঝংকার বলে মনে হয়। তার ঘুমোনোর বিশেষ ভঙ্গি বরকে আরও বেশী আকৃষ্ট করে। মুখের ওপর ভর দিয়ে উপুর হয়ে শোয়া। কাজল-কালো কেশগুলো এলোমেলো। বুকের উপরিভাগ উন্মুক্ত। আর যে বালিশের উপর ঠেস দিয়ে শুয়ে আছে সেটিকে এক অকল্পনীয় ভঙ্গিতে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরেছে। রাতের এ দৃশ্য সত্যিই অসহ্য। রক্তে-মাংসে গড়া কোনো মানুষের পক্ষে এ আযাব সহ্য করা সম্ভব নয়। হৃদয়কে পাষাণ করে সহ্য করে চলে একরাত, দুইরাত- তিনরাত- চাররাত। এভাবে প্রায় সপ্তাহ গড়িয়ে যায়। কিন্তু ঐভাবে রাত কাটানো তার ধৈর্য ও সহ্যের বাইরে চলে যেতে থাকে। ভাবতে থাকে- কীভাবে কী করা যায় ?
আর বাড়িটা এমন যেখানে পাঠকক্ষ, ডাইনিং স্পেস কিংবা তাদের বাসর ঘরের বেলকনি ছাড়া অন্য কোনো বেডরুম নেই। অন্য যে কক্ষটি শোবার মতো আছে সেখানে তার শাশুড়ি গভীর ঘুমে অচেতন। বর ভাবতে থাকে তবে কি সে ডাইনিং স্পেসে গিয়ে রাতগুলো কাটিয়ে দিবে? সদ্য বিবাহিত বরের এ আচরণে বাড়ির কাজের লোক কিংবা শাশুড়িই বা কী ভাববে? আর শাশুড়ি তো নতুন মেয়ে-জামাইয়ের এমন আলাদা থাকাকে কখনই বরদাস্ত করবেন না। উপরন্তু কলিজার টুকরা এ মেয়েটিই তাঁর একমাত্র ভরসা। বর ভেবে দেখে এক্ষেত্রে কঠিন ধৈর্যধারণ ছাড়া আর কোনো পথ নেই। অতিসত্ত্বর বিষয়টির একটা চূড়ান্ত সমাধান হওয়া উচিত।
দিনের পর দিন তাই সে তার দুর্ব্যবহারের মাত্রা বাড়াতে থাকে। কিন্তু শাশুড়ি তাঁর মেয়ের মধুর দাম্পত্য সম্পর্কের আশায় বিষয়টিকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে। তার মেয়েও বরের শিখানো অভিনয়ে তেমন পারদর্শী নয়। তাই বরও অনেক সময় তার কাল্পনিক স্ত্রীর উপর রাগ-ধমক ও ক্রদ্ধ প্রকাশ করতে থাকে। তবে কনে ভালো করেই জানে- রাতে বর যখন তার সাথে নির্জন কক্ষে মিলিত হবে তখন সারা দিনের দুর্ব্যবহারের কারণ সে এমনভাবে পেশ করবে- তার অন্তরাত্মা পর্যন্ত হিম হয়ে যাবে। রকমারি অভিনয়ের কারিশমায় কষ্টদায়ক বিষয়কেও আনন্দময় করে তুলবে। কনেকে তখন একটা কচি খুকীর ন্যায় মনে হবে। সে রাগের পরিবর্তে হাঁসতে শুরু করবে। বর তাকে চোখের ঈশারায় মনের ভাষা বুঝাবে। কনেকেও তার অব্যক্ত কথা ইশারায় প্রকাশ করতে উৎসাহিত করবে।
কিন্তু তবুও অনেক সময় তার ভুল হয়ে যায়। সে তার মায়ের সামনেই বরের অভিনয়মূলক আচরণের প্রতিবাদ করে বসে। কিংবা উপস্থিত দর্শকদের সামনে কোনো সমালোচনা করলে তাও প্রতিহত করে। কিন্তু রাতে কৃত অভিনয়ের অঙ্গীকারের কথা স্মরণ হওয়া মাত্র থুক্কু কেটে তার দু'ঠোটের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসে- ‘হায় আল্লাহ এ কোন জ্বালা’!
সময় তার আপন গতিতে গড়িয়ে চলে। একদিন অভিনয়ের পরিকল্পনাকারী স্বামীর মাথায় একটা নতুন প্লান আসে। অসহ্য মনোকষ্ট নিয়ে রাত্রিযাপন থেকে মুক্তির একটা পথ সে পেয়ে যায়। প্লান করে- প্রতিদিন সে তার পূর্ব পরিচিত এক ব্যাচেলর বন্ধুর বাড়ি গিয়ে সময় কাটাবে। তার সাথেই চুটিয়ে আড্ডা দিবে। এমনকি আসরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানেই ঘুমিয়ে কাটাবে। ওদিকে স্ত্রী ও শাশুড়িকে খবর দিবে নানা কাজের ব্যস্ততাই তার এ অনুপস্থিতির কারণ। রাত দশটার আগে ফেরা হবে কি না বলতে পারছে না। কোনো কোনো দিন মাঝ রাতও হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া তার কোনো উপায় নেই। অভিনয় তালিকার সাথে দুর্বিষহ ও অপছন্দনীয় এ অধ্যায়টি এভাবেই সংযোজন করা সম্ভব হতে পারে।
দ্বিতীয় আর এক রাতে বর একেবারে ভোর রাতে বাড়ি ফিরে। বন্ধুর জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে দাওয়াত ছিল। আনন্দমূখর সে রাতটিতে গান-বাজনা, হাসি-তামাসা, আনন্দ-ফূর্তি আরও কত কি। ফিরে এসে দেখেই তো চোখ চরক গাছ! এ কি। স্ত্রী সারা রাত জেগে খাটের ওপর বসে আছে। তার আগমনে ভ্রূকুঞ্চিত করে ক্রুদ্ধের দৃষ্টিতে তাকায়। না! এ চাহনি তো অভিনয়ের নয় । বরং সত্যি সত্যিই সে রাগে চোখ-মুখ কালো করে বসে আছে। বর তার বিলম্বের জন্য অজুহাত পেশ করে। ব্যাখ্যা করতে থাকে বিলম্বের প্রকৃত কারণ। কনে খুশী কিংবা রাগ কিছুই প্রকাশ না করে চুপ-চাপ বসে থাকে।
এভাবে কয়েক সপ্তাহ পার হয়ে যায়। কনে একদিন স্বামীর কাছে বায়না ধরে, তাকে নিয়ে সিনেমায় যেতে হবে। শাশুড়িও তার এ আবদারে সমর্থন দিয়ে বলে :
- হাঁ ! জামাই বাবাজী যাও না। সব স্বামী-স্ত্রী যেভাবে বাইরে বেরোয়, সেভাবে তুমিও স্ত্রীকে নিয়ে একটু ঘুরে-ফিরে এসো না বাবা। বর ভাবে শাশুড়ির আদেশের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন একান্ত প্রয়োজন, নইলে আদবের বরখেলাপ হয় সে বলে :
- আমার যেতে কোনো আপত্তি নেই তবে অসুবিধা তো একটাই : আমি আপনার মেয়েকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাব ?!
- কেন বাবা, বাধা কীসে ? সে চালাক-চতুর কিংবা রূপে-গুণে কম নাকি? সে তোমার মতো স্বামীর সাথে বেশ মানিয়ে চলতে পারবে।
- এটা তো আপনার একার নিজস্ব মত।
- জামাই বেটা! দোষের কিছু।
- যখন-তখন আপনার মেয়েকে নিয়ে ফূর্তি করার সময় আমার নেই।
পাশেই রাগে স্ত্রীর চেহারা লাল হয়ে যায়। সে বলে :
হাঁ! গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরে-ফিরে মাঝ রাতে যখন বাড়ি ফিরেন তখন আপনার সময় হয়। তখন আর সময় নষ্ট হয় না?! তাই না।
- দেখ সোনিয়া সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
- আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি না গেলেন। আমি আর জীবনে কখনও কোনো দিনও আপনার সাথে বাইরে বের হব না।
এই বলে সে ক্রদ্ধভরে দ্রুত তার শোবার ঘরে চলে যায়। মনক্ষুণ্ন ও মনকষ্ট নিয়ে শাশুড়িও নির্বাক-নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে। বরও প্রতিদিনের ন্যায় তার কর্মের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। বাড়িতে যা কিছু ঘটলো তার কিছুই সে মনের সাথে জড়ায় না। নাট্যাভিনেতা যেমন ভয়ংকর ও দুর্দান্ত পাঠ শেষে একেবারেই স্বাভাবিক থাকে। সব দোষ সে তার স্ত্রীর ওপরই চাপায়। তাকেই দোষারোপ করে এবং কথায় কথায় আহত করে ছাড়ে। সন্ধ্যায় ফিরে দেখে স্ত্রী খাটের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। মাথা গুজিয়ে রেখেছে বালিশের মাঝে। বালিশ তার চোখের পানিতে ভিজে একেবারে স্যাঁতসেঁতে। বর ঘরে প্রবেশ করলেও বিন্দুমাত্র নড়াচড়া তার মাঝে দেখা গেল না। চাপা কান্নার ফোঁপানী এবং নিঃশব্দ গুনগুনানী যদি না শোনা যেত তবে বর মনে করত সে গভীর ঘুমে অচেতন। ধীর পদক্ষেপে বর কাছে গিয়ে বলে :
- সোনিয়া! তোমার কী হয়েছে? তোমার কি কিছু হয়েছে?
কনে বালিশ থেকে মাথা তুলে। বরের দিকে এক পলক তাকায় কিন্তু কোনো উত্তর করে না। তখনও তার মসৃণ গালে অশ্রুর রেখা স্পষ্ট হয়ে আছে। সহানুভূতির সূরে বর বলে :
- আমি তো অনেক দিন যাবত তোমাকে এভাবে কাঁদতে দেখি না। তাঁর কি কিছু হয়েছে?
- কার কথা বলছেন?
- সামরিক অফিসার।
- কোথাকার কোন সামরিক অফিসার? অ্যা-
তার কথার প্রতিটি শব্দ প্রতিবাদী কণ্ঠেই উচ্চারিত হয়। তারপর সে মৃদু-ভর্ৎসনার সূরে চিৎকার দিয়ে ওঠে। দ্রুততার সাথে বলে :
- না, আর না। আপনি আর আপনার দুর্ব্যবহারের অপরাধকে এড়িয়ে যেতে পারবেন না। বরং বারবার আপনার দুর্ব্যবহারের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এ যাবত অনেক সহ্য করেছি। আর নয়। আমি আর আপনার একটি দুর্ব্যবহারও সহ্য করতে পারব না। আমার ওপর যথেষ্ট হয়েছে। পুরুষের এ ধরনের দুর্ব্যবহার সহ্য করতে পারে পৃথিবীতে এমন কোন নারী নেই!
- এই যে... আত্মভোলা নারী! এ সব তুমি কী বলছ?
- আপনি কি অস্বীকার করতে পারবেন- আজ আমাকে কতটা কষ্ট দিয়েছেন?
- এ তো স্বাভাবিক অভিনয় মাত্র।
এটা আপনার খোঁড়া যুক্তি। অভিনয়ের আড়ালে আমার প্রতি আপনার অপছন্দের ভাবটাই গোপন করার চেষ্টা করছেন।
- সুব্হানাল্লাহ।
- প্রায়ই আপনি নিজেকে পারতপক্ষে দীর্ঘক্ষণ আমার চোখের সামনে থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছেন, আপনি কি এটা অস্বীকার করতে পারবেন? কাকডাকা ভোরে আমি ঘুমিয়ে থাকতেই আপনি সাত-সকালে বেরিয়ে পড়েন। লাঞ্চের আগে আর আপনার কোনো ছায়া পাওয়া যায় না। তড়িঘড়ি দুপুরের খাবারটুকু সেরে আবার বেরিয়ে পড়েন, রাত দশটা-এগারটা কিংবা রাত দুপুরের আগে আর আপনার কোনো পাত্তা থাকে না। এগুলো কি আমার চোখে পড়ে না? আজ আমি আপনাকে এবং আমার বিবেককে জিজ্ঞেস করতে চাই- আমার চেহারায় এমন কী দেখা দিল, যা আপনাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। আমার স্বভাব-চরিত্রেই বা এমন কী দোষ প্রকাশ পেল, যা আপনাকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে?
- এটা কি অজানা কিছু ?
- আপনি কি কসম করে বলতে পারবেন- আপনি আমাকে এড়িয়ে চলছেন না?
- হাঁ-হাঁ আমি হলফ করেই বলছি- কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে আমি এমনটি করছি না।
- আমাদের যখন প্রথম সাক্ষাৎ হয় তখন আপনি কত রসিক এবং মিশুক ছিলেন। আমার সাথে কী মজার ভালো ব্যবহার করতেন। কত মমতা দেখাতেন। সহানুভূতি প্রকাশ করতেন। কিন্তু এখন ...
- আমি যেমন ছিলাম তেমনই আছি। একটুও বদলাই নি।
- হাঁ তা ঠিক আছে। এ ঘরে যতক্ষণ শুধু আপনি আর আমি থাকি, ততক্ষণ তো আপনি ঠিকই আন্তরিকতাপূর্ণ মধুর ব্যবহার করেন। কিন্তু মানুষের সামনে...।
- কেন ? এটাই তো স্বাভাবিক। লোকজনের সামনে তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করাই দরকার। এটা তো আমাদের পরিকল্পনারই একটা অংশ।
- রাখেন আপনার প্লান-ফ্লান। কীসের পরিকল্পনা! আপনি কি জানেন আপনার এ পরিকল্পনা কত বড় ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে?!
- জানি... কিন্তু... এ ছাড়া আর উপায় কী বল!
- প্রথম প্রথম আপনার অভিনয় আমার কাছে ভালোই লাগত। কিন্তু এখন দেখছি আপনি বিষয়টিকে একেবারে সিরিয়াস হিসেবে নিয়েছেন। আচার-আচরণেও সেটাই প্রকাশ করছেন। মনে হচ্ছে সত্যিই আপনার-আমার মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই।
- হাঁ! ঠিকই তো। বেশী-বেশী অনুশীলন দক্ষতা বাড়ায়।
- এ ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন না করায় ভালো ছিল। তাহলে আর আমাকে সন্দেহের আগুনে জ্বলে-পুড়ে মরতে হতো না। আপনার প্রতিটি কথাই এখন আমার গায়ে কাঁটার মতো হানছে। অন্তরাত্মা পর্যন্ত ক্ষত-বিক্ষত করে দিচ্ছে। আর পারছি না। এখনি আপনার একটু সতর্ক হওয়া উচিত। আপনার চলাফেরা মোটেও আমার কাছে অভিনয় বলে মনে হচ্ছে না। প্রত্যেকটা কথার মধ্যেই আপনি সূক্ষ্ম কিছু রহস্য গোপন করার চেষ্টা করছেন। আমার মনকে দোলা দিতে পারে, এমন অভিনয় করে কি আপনার অভিজ্ঞতা বাড়ানো যেত না? আগে আমার মায়ের সামনে আদর করে কখনও সোনা, আবার কখনও লক্ষ্মী সোনা বলে কি না মজার সুরে ডাকতেন। কিন্তু... এখন, এখন তো আর সে ডাক আমি শুনতে পাই না। কি ঘটেছে? আজকাল কেন আমি আর আপনার মুখ থেকে সে মধুর ডাক শুনতে পাচ্ছি না? বলুন, আমার কথার জবাব দিন।
- আমাদের উদ্দেশ্য সফল করতেই তো পরিকল্পনায় এ পরিবর্তন। দেখছ না সময় একেবারেই ঘনিয়ে আসছে।
- সময় ঘনিয়ে আসছে মানে...?
- কি আশ্চর্য! তুমি জানো না নাকি?
- আমরা সপ্তম সপ্তাহের এক্কেবারে শেষ পর্যায়ে। আমাদের সামনে আর মাত্র ক’টা দিন বাকী। তারপরই আমাদের ছাড়াছাড়িটা চূড়ান্ত হবে।
- ও… তাড়াহুড়ো কি এ জন্যই? আপনি কি নিশ্চিত- আপনি কোনো ভুল করছেন না ?
- হাঁ! আমি এক্কেবারে নিশ্চিত। আমি হিসাবে কখনও ভুল করি না। একটা একটা করে দিন পার হচ্ছে। আর আমিও ওর প্রতিটা ক্ষণ গুনে গুনে হিসাব করে রাখছি।
- ও কাঁধ থেকে বোঝাটা নামানোর জন্যই তাহলে খুঁটে খুঁটে দিন গণনা করা হচ্ছে!
- কি আমি? আমি বোঝা নামানোর জন্য দিন গুনছি?
- আমাদের ছাড়াছাড়ি হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকী! বাহ! কী আনন্দ আপনার! আচ্ছা আমাকে বলুন তো, ছাড়াছাড়ির পর আপনার কী করার প্লান আছে? আর থাকবেনই বা কোথায়?
- এ সব আমি কিছুই জানি না। ভবিষ্যৎ জীবনের কার্যসূচী তৈরী করে আর কিছু খোয়াতে চাই না।
- আমার কত আশা, আপনার ভবিষ্যৎ জীবন সুখময় হোক। আপনার সাথে আমার যে ক’টা দিন কেটে গেল- তা কি ভালো গেল না মন্দ, বলতে পারেন?
- বেশ! ভালোই গেল তো...।
- আমার আচার-আচরণ আপনার চির বন্ধু হয়ে থাকবে তো !
- হাঁ! অবশ্যই-চিরদিন অম্লান থাকবে।
- যাক, আপনাকে ধন্যবাদ।
- নাও, এবার নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাও। তোমার ঘুমানোর অনেক দেরী হয়ে গেছে। বর পাতলা কাঁথা টেনে দেয় তার গায়ে। শরীরটাকে ভালো করে ঢেকে দেয়। ক্ষমা ও মার্জনার ভঙ্গিতে তার কোমল মসৃণ মুখে নিজের হাতের পরশ লাগায়। কোমল তুল তুলে গাল তার হাতের মাঝে মোলায়েম হয়ে আসে। মনে হয় সে যেন একটা পোষা বিড়াল। আর বিড়ালের মালিক উহার নরম গায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। বর তার কোমল মসৃণ গালে শিহরণী উষ্ণতা অনুভব করে। তাই আস্তে করে সে তার হাতটা সরিয়ে নেয়। চুপিচুপি নিভিয়ে দেয় ঘরের বাতি। তারপর নীরবে গিয়ে শুয়ে পড়ে নিজের বিছানায়। (চলবে)
পাঠকের মতামত:

- ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে দেশে ফিরেছেন ৫ বাংলাদেশি
- খিলগাঁওয়ে আগুনে পুড়েছে ২০ দোকান-২ করাতকল
- রমজান ও গ্রীষ্ম মৌসুমে লোডশেডিং হবে না : বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
- বগুড়ায় ট্রাকের ধাক্কায় অটোভ্যানের ৪ যাত্রী নিহত
- সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই: আমীর খসরু
- ঝিনাইদহে শীর্ষ চরমপন্থি নেতা হানিফসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যা
- সীমান্তে স্থাপনা-বেড়া নির্মাণে যৌথ পরিদর্শন-দলিলের সিদ্ধান্ত
- ভিসা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকায় ইতালি দূতা
- ১ মার্চ রোজা হলে ৩৩ বছর পর দেখা মিলবে ‘বিরল’ দিনের
- অবশেষে ভেঙেই গেল চাহাল-ধনশ্রীর সংসার
- শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শ্রদ্ধা
- সারাদেশে শহীদ মিনারে জনস্রোত
- ভাষা শহীদদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন
- ‘তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতা আগামীর বাংলাদেশ গড়বে’
- সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে মাছ-মুরগির দাম
- একুশের সঙ্গে আমার এক আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে: প্রধান বিচারপতি
- ফ্যাসিবাদের উত্থান হলে রুখবে একুশের চেতনা: রিজভী
- শিক্ষার্থীর রগ কাটতে শিবিরের চেষ্টার প্রতিবাদে ছাত্রদলের কর্মসূচি
- জামায়াত আমিরের হুঁশিয়ারি: আজহারকে মুক্তি না দিলে স্বেচ্ছা কারাবরণ
- মঈন-হাসিনাসহ পলাতকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টায় কমিশন
- শিক্ষার্থীর ওপর শিবিরের হামলায় বৈষম্যবিরোধীদের কর্মসূচি
- ’১৪ ও ’১৮ এর নির্বাচনের সময়ের ২২ ডিসি বাধ্যতামূলক অবসরে
- এমসি কলেজে রাতভর শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ শিবিরের বিরুদ্ধে
- দ্রুত নির্বাচন দিয়ে অস্থিরতা দূর করুন: মির্জা ফখরুল
- ইসরায়েলি ৪ জিম্মির মরদেহ ফেরত দিচ্ছে হামাস
- "একটি শক্তিশালী অর্থনীতির জন্য প্রয়োজন প্রাণবন্ত পুঁজিবাজার"
- ঢাকাসহ পাঁচ বিভাগে বৃষ্টির আভাস
- মোহাম্মদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে দুই জন নিহত
- দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি খুব ভালো: ডিএমপি কমিশনার
- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের আহ্বান জামায়াত আমিরের
- ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের’ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা ঠেকাতে তৎপর র্যাব
- সাবেক আইজিপি-এনটিএমসি মহাপরিচালকসহ ১০ জন ট্রাইব্যুনালে
- ২৭তম বিসিএসে বঞ্চিত ১১৩৭ জনের চাকরি ফেরত দিতে নির্দেশ
- একুশে পদক তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
- প্রকাশ্যে দম্পতিকে কোপানোর মামলায় আরো তিনজন রিমান্ডে
- শেয়ার কারসাজি: আমিনুল-হিরু চক্রকে ১০.১৩ কোটি অর্থদণ্ড
- সাকিবকে নিয়ে ‘বিরক্ত’ শান্ত এবার কী বললেন?
- ধারালো অস্ত্র হাতে অবস্থান, সেই যুবদল নেতা মাহবুবকে বহিষ্কার
- এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ২৬ জুন, রুটিন প্রকাশ
- গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনটা এখন জরুরি : শামসুজ্জামান দুদু
- কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত
- ছাত্রশিবিরের পরিচয় গোপন করে রাজনীতি নিয়ে যা বললেন মাহিন
- সরকার আদৌ নির্বাচন দিতে আন্তরিক কিনা, সন্দেহ ফখরুলের
- নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া
- বায়ুদূষণের শীর্ষে ঢাকা
- আইসিবির নতুন এমডি নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ
- যুদ্ধের মধ্যেও দৃঢ় অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদী তুরস্ক ও ইউক্রেন
- ‘গ্রুপপর্বের ম্যাচে পাকিস্তান হারিয়ে দেবে ভারতকে’
- আইএমএফের ঋণের কিস্তি ছাড় নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
- পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই মিলবে পাসপোর্ট, প্রজ্ঞাপন
- হাসিনা যেন ভারত থেকে উসকানিমূলক মন্তব্য না করেন, চায় ঢাকা
- উজ্জীবিত হয়ে ফিরছেন জেলা প্রশাসকরা, লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচন
- ছাত্রদলকে কড়া বার্তা শিবির সভাপতির
- "একটু ছাড় দিয়ে মিত্রতা বাড়ালে দেশের জনগণ উপকৃত হবে"
- ৩ দিনের সম্মেলনে যেসব দিকনির্দেশনা পেলেন ডিসিরা
- ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক ‘নির্দিষ্ট সরকারকেন্দ্রিক’ হওয়া উচিত নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- প্রতিভরি দেড় লাখ টাকা ছাড়িয়ে স্বর্ণের দামে রেকর্ড
- প্রকাশ্যে দম্পতিকে কোপানো কিশোর গ্যাংয়ের ২ সদস্যকে তোলা হবে আদালতে
- "নতুন বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে নেতৃত্ব দিতে হবে"
- পুলিশ ভেরিফিকেশন: প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য সারসংক্ষেপ তৈরি
- কানাডায় ৮০ আরোহী নিয়ে অবতরণের সময় উল্টে গেল বিমান
- স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ১২ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ট্রাইব্যুনালে
- প্রস্তুতি ম্যাচেও ব্যর্থ বাংলাদেশ, গুটিয়ে গেল ২০২ রানে
- যুক্তরাষ্ট্রে ভারী বর্ষণ-বন্যায় ৯ জনের প্রাণহানি, ভেসে গেল গাড়ি
- বিএসইসির নতুন মুখপাত্র আবুল কালাম
- ফেনীতে কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
- ওমান-কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তৌহিদ হোসেনের বৈঠক
- আ. লীগের রাজনীতির মৃত্যু হয়েছে, দাফন দিল্লিতে: সালাহ উদ্দিন
- ‘আইএমএফ ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি আসতে পারে জুনে’
- যদি বন্ধুত্ব করতে চান, আগে তিস্তার পানি দেন: ভারতকে মির্জা ফখরুল
- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে বের হয়ে নতুন সংগঠনের ঘোষণা
- সব জনতাই সমস্যা ক্রিয়েট করছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে দুনিয়া জয় করা যায়: পরীমণি
- পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ২১ হাজার ১০৪ কোটি টাকা
- এবার যুক্তরাষ্ট্রেও কপাল পুড়ল সাকিবের
- হাসিনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ, জানালেন প্রেস সচিব
- ক্ষমতাচ্যুত সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের সত্য গোপন করেছে: ওএইচসিএইচআর
- আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো জুলাই সনদ তৈরি করা : প্রধান উপদেষ্টা
- ব্যর্থ হলে জাতি ক্ষমা করবে না: আলী রীয়াজ
- দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা: ফখরুল
- শেষ ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ
- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে বের হয়ে নতুন সংগঠনের ঘোষণা
- রাজধানীতে চলছে সিএনজি ধর্মঘট, ভোগান্তিতে নগরবাসী
- প্রকাশ্যে দম্পতিকে কোপানো কিশোর গ্যাংয়ের ২ সদস্যকে তোলা হবে আদালতে
- ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে দুনিয়া জয় করা যায়: পরীমণি
- নারীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ, দক্ষিণ কোরিয়ান ফুটবলারের কারাদণ্ড
- এবার যুক্তরাষ্ট্রেও কপাল পুড়ল সাকিবের
- প্রতিভরি দেড় লাখ টাকা ছাড়িয়ে স্বর্ণের দামে রেকর্ড
- আ. লীগের রাজনীতির মৃত্যু হয়েছে, দাফন দিল্লিতে: সালাহ উদ্দিন
- স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ১২ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ট্রাইব্যুনালে
- ফেনীতে কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
- পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ২১ হাজার ১০৪ কোটি টাকা
- ৩ দিনের সম্মেলনে যেসব দিকনির্দেশনা পেলেন ডিসিরা
- ওমান-কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তৌহিদ হোসেনের বৈঠক
- ছাত্রদলকে কড়া বার্তা শিবির সভাপতির
- পুলিশ ভেরিফিকেশন: প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য সারসংক্ষেপ তৈরি
- ‘আইএমএফ ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি আসতে পারে জুনে’
- যদি বন্ধুত্ব করতে চান, আগে তিস্তার পানি দেন: ভারতকে মির্জা ফখরুল
- যুক্তরাষ্ট্রে ভারী বর্ষণ-বন্যায় ৯ জনের প্রাণহানি, ভেসে গেল গাড়ি
- ধারালো অস্ত্র হাতে অবস্থান, সেই যুবদল নেতা মাহবুবকে বহিষ্কার
সাহিত্য এর সর্বশেষ খবর
সাহিত্য - এর সব খবর
