তাওফীক আল্-হাকীমের উপন্যাস
লায়লাতুয্ যিফাফ্

তরজমা : ড. এম. এ মোত্তালিব (পূর্ব প্রকাশের পর)
(দুই)
দিনের পর দিন অতিবাহিত হতে থাকে। বর সুদক্ষ নায়কের ন্যায় তার প্রতিশ্রুত অভিনয়কর্ম যথাযথভাবে চালিয়ে যায়। দুর্ব্যবহারের মাধ্যমে শাশুড়িকেও সূক্ষ্মভাবে বুঝাতে চেষ্টা করে- এ যাবত তার একমাত্র ললনা-দুলালীর জন্যে যেমন স্বামী কামনা করতেন- এ সে ধরনের নয়। কিন্তু সমস্যা একটাই। ঐ সমস্যাটাই তার কাছে প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা হল- একই ঘরে ভাগাভাগি করে অবস্থান করার প্রশ্ন। এ রকম অকল্পনীয় ও অবিশ্বাস্যভাবে নকল স্বামী-স্ত্রীর অভিনয় করে আর কয় দিন টিকা যায়। একটা ভরা যৌবনা নারীর সাথে একই ঘরে রাত কাটানো তার পক্ষে আর সম্ভব হয়ে ওঠছে না। এক ঘরে অবস্থান করেও তারা উভয়ে যেন একেবারেই অচেনা। ভরা যৌবনের উম্মাদনা সদ্য বিবাহিত নব দম্পতিকে সারাক্ষণ নাড়া দিতে থাকে। প্রতি মুহূর্তে জৈবিক বাসনা পূরণে উচ্ছ্বসিত কামনা তাড়িত করে। বর অনুভব করে আলাদা বিছানায় থাকা সত্ত্বেও কনের শ্বাস-প্রশ্বাসের গরম বাতাস যেন তার মুখমণ্ডলকে ঝলসে দিচ্ছে। টগবগে যৌবনে ভরা এ রমণীর প্রতিটি নড়াচড়া যেন বরের চোখের সামান্যতম তন্দ্রাকেও কেড়ে নিতে থাকে।
কনে যখন কাশি দেয়, বর তখন নড়েচড়ে পাতলা কম্বলের নীচে মাথা গুঁজে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে। জানালা দিয়ে পূর্ণিমা চাঁদের মিষ্টিআলো কনের মুখে পড়ে। আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে বর ভাবতে থাকে চাঁদের আলোয় কনের চেহারার প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ অপরূপ শোভায় কি-না চমৎকার লাগছে! চাঁদের আলোও যাতে কনের ঘুমে কোনো ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে সে জন্য জানালায় ঝুলিয়ে দেয় একটা পর্দা। কালেমা পড়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েও অপরিচিতা নারীটি যখন এপাশ থেকে ওপাশ হয় বরও তার পাশ বদলিয়ে অন্য কাত হয়। গভীর রাতে কনে যখন প্রয়োজন সারতে জেগে ওঠে বর তখন গভীর ঘুমের ভান করে। অস্থিরতার ভারী শ্বাস-প্রশ্বাসকে কঠিনভাবে চেপে রাখে। কনে বুঝতেই পারে না- সে জেগে আছে। খাটের ওপর এ যেন এক শান্ত-ঘুমন্ত অবিচ্ছেদ্য আপদ। ওদিকে কনেও পুরোপুরিই জাগ্রত। তার চোখেও বিন্দু মাত্র ঘুম নেই। কনের তন্দ্রাহীন চোখের চাহনি বরের বিছানার সবকিছুকে যেন জড়োসড়ো করে ফেলে। শিথিল হয়ে আসে তার সকল শিরা-উপশিরা। চুর্ণ-বিচুর্ণ হতে থাকে তার সকল আশা-আকাঙ্ক্ষা। বিছানায় সে অস্থির হয়ে কাতরাতে থাকে। নিজেকে মনে হয় একেবারে তুচ্ছ কোনো খড়-কুটো।
সম্পূর্ণ ভিন্ন বিছানায় থাকা সত্ত্বেও নাকে ভেসে আসতে থাকে কনের শরীরের মেয়েলী ঘ্রাণ। অনুভব করে ঘুমের মাঝে কনের ছন্দ মিলানো শ্বাস-প্রশ্বাসের কোমল পরশ। মৃদু-অস্পষ্ট ও থেমে থেমে আসা কনের নাকের ডাক বরের কাছে বাদ্যযন্ত্রের নীরবচ্ছিন্ন ঝংকার বলে মনে হয়। তার ঘুমোনোর বিশেষ ভঙ্গি বরকে আরও বেশী আকৃষ্ট করে। মুখের ওপর ভর দিয়ে উপুর হয়ে শোয়া। কাজল-কালো কেশগুলো এলোমেলো। বুকের উপরিভাগ উন্মুক্ত। আর যে বালিশের উপর ঠেস দিয়ে শুয়ে আছে সেটিকে এক অকল্পনীয় ভঙ্গিতে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরেছে। রাতের এ দৃশ্য সত্যিই অসহ্য। রক্তে-মাংসে গড়া কোনো মানুষের পক্ষে এ আযাব সহ্য করা সম্ভব নয়। হৃদয়কে পাষাণ করে সহ্য করে চলে একরাত, দুইরাত- তিনরাত- চাররাত। এভাবে প্রায় সপ্তাহ গড়িয়ে যায়। কিন্তু ঐভাবে রাত কাটানো তার ধৈর্য ও সহ্যের বাইরে চলে যেতে থাকে। ভাবতে থাকে- কীভাবে কী করা যায় ?
আর বাড়িটা এমন যেখানে পাঠকক্ষ, ডাইনিং স্পেস কিংবা তাদের বাসর ঘরের বেলকনি ছাড়া অন্য কোনো বেডরুম নেই। অন্য যে কক্ষটি শোবার মতো আছে সেখানে তার শাশুড়ি গভীর ঘুমে অচেতন। বর ভাবতে থাকে তবে কি সে ডাইনিং স্পেসে গিয়ে রাতগুলো কাটিয়ে দিবে? সদ্য বিবাহিত বরের এ আচরণে বাড়ির কাজের লোক কিংবা শাশুড়িই বা কী ভাববে? আর শাশুড়ি তো নতুন মেয়ে-জামাইয়ের এমন আলাদা থাকাকে কখনই বরদাস্ত করবেন না। উপরন্তু কলিজার টুকরা এ মেয়েটিই তাঁর একমাত্র ভরসা। বর ভেবে দেখে এক্ষেত্রে কঠিন ধৈর্যধারণ ছাড়া আর কোনো পথ নেই। অতিসত্ত্বর বিষয়টির একটা চূড়ান্ত সমাধান হওয়া উচিত।
দিনের পর দিন তাই সে তার দুর্ব্যবহারের মাত্রা বাড়াতে থাকে। কিন্তু শাশুড়ি তাঁর মেয়ের মধুর দাম্পত্য সম্পর্কের আশায় বিষয়টিকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে। তার মেয়েও বরের শিখানো অভিনয়ে তেমন পারদর্শী নয়। তাই বরও অনেক সময় তার কাল্পনিক স্ত্রীর উপর রাগ-ধমক ও ক্রদ্ধ প্রকাশ করতে থাকে। তবে কনে ভালো করেই জানে- রাতে বর যখন তার সাথে নির্জন কক্ষে মিলিত হবে তখন সারা দিনের দুর্ব্যবহারের কারণ সে এমনভাবে পেশ করবে- তার অন্তরাত্মা পর্যন্ত হিম হয়ে যাবে। রকমারি অভিনয়ের কারিশমায় কষ্টদায়ক বিষয়কেও আনন্দময় করে তুলবে। কনেকে তখন একটা কচি খুকীর ন্যায় মনে হবে। সে রাগের পরিবর্তে হাঁসতে শুরু করবে। বর তাকে চোখের ঈশারায় মনের ভাষা বুঝাবে। কনেকেও তার অব্যক্ত কথা ইশারায় প্রকাশ করতে উৎসাহিত করবে।
কিন্তু তবুও অনেক সময় তার ভুল হয়ে যায়। সে তার মায়ের সামনেই বরের অভিনয়মূলক আচরণের প্রতিবাদ করে বসে। কিংবা উপস্থিত দর্শকদের সামনে কোনো সমালোচনা করলে তাও প্রতিহত করে। কিন্তু রাতে কৃত অভিনয়ের অঙ্গীকারের কথা স্মরণ হওয়া মাত্র থুক্কু কেটে তার দু'ঠোটের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসে- ‘হায় আল্লাহ এ কোন জ্বালা’!
সময় তার আপন গতিতে গড়িয়ে চলে। একদিন অভিনয়ের পরিকল্পনাকারী স্বামীর মাথায় একটা নতুন প্লান আসে। অসহ্য মনোকষ্ট নিয়ে রাত্রিযাপন থেকে মুক্তির একটা পথ সে পেয়ে যায়। প্লান করে- প্রতিদিন সে তার পূর্ব পরিচিত এক ব্যাচেলর বন্ধুর বাড়ি গিয়ে সময় কাটাবে। তার সাথেই চুটিয়ে আড্ডা দিবে। এমনকি আসরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানেই ঘুমিয়ে কাটাবে। ওদিকে স্ত্রী ও শাশুড়িকে খবর দিবে নানা কাজের ব্যস্ততাই তার এ অনুপস্থিতির কারণ। রাত দশটার আগে ফেরা হবে কি না বলতে পারছে না। কোনো কোনো দিন মাঝ রাতও হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া তার কোনো উপায় নেই। অভিনয় তালিকার সাথে দুর্বিষহ ও অপছন্দনীয় এ অধ্যায়টি এভাবেই সংযোজন করা সম্ভব হতে পারে।
দ্বিতীয় আর এক রাতে বর একেবারে ভোর রাতে বাড়ি ফিরে। বন্ধুর জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে দাওয়াত ছিল। আনন্দমূখর সে রাতটিতে গান-বাজনা, হাসি-তামাসা, আনন্দ-ফূর্তি আরও কত কি। ফিরে এসে দেখেই তো চোখ চরক গাছ! এ কি। স্ত্রী সারা রাত জেগে খাটের ওপর বসে আছে। তার আগমনে ভ্রূকুঞ্চিত করে ক্রুদ্ধের দৃষ্টিতে তাকায়। না! এ চাহনি তো অভিনয়ের নয় । বরং সত্যি সত্যিই সে রাগে চোখ-মুখ কালো করে বসে আছে। বর তার বিলম্বের জন্য অজুহাত পেশ করে। ব্যাখ্যা করতে থাকে বিলম্বের প্রকৃত কারণ। কনে খুশী কিংবা রাগ কিছুই প্রকাশ না করে চুপ-চাপ বসে থাকে।
এভাবে কয়েক সপ্তাহ পার হয়ে যায়। কনে একদিন স্বামীর কাছে বায়না ধরে, তাকে নিয়ে সিনেমায় যেতে হবে। শাশুড়িও তার এ আবদারে সমর্থন দিয়ে বলে :
- হাঁ ! জামাই বাবাজী যাও না। সব স্বামী-স্ত্রী যেভাবে বাইরে বেরোয়, সেভাবে তুমিও স্ত্রীকে নিয়ে একটু ঘুরে-ফিরে এসো না বাবা। বর ভাবে শাশুড়ির আদেশের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন একান্ত প্রয়োজন, নইলে আদবের বরখেলাপ হয় সে বলে :
- আমার যেতে কোনো আপত্তি নেই তবে অসুবিধা তো একটাই : আমি আপনার মেয়েকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাব ?!
- কেন বাবা, বাধা কীসে ? সে চালাক-চতুর কিংবা রূপে-গুণে কম নাকি? সে তোমার মতো স্বামীর সাথে বেশ মানিয়ে চলতে পারবে।
- এটা তো আপনার একার নিজস্ব মত।
- জামাই বেটা! দোষের কিছু।
- যখন-তখন আপনার মেয়েকে নিয়ে ফূর্তি করার সময় আমার নেই।
পাশেই রাগে স্ত্রীর চেহারা লাল হয়ে যায়। সে বলে :
হাঁ! গভীর রাত পর্যন্ত ঘুরে-ফিরে মাঝ রাতে যখন বাড়ি ফিরেন তখন আপনার সময় হয়। তখন আর সময় নষ্ট হয় না?! তাই না।
- দেখ সোনিয়া সেটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
- আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি না গেলেন। আমি আর জীবনে কখনও কোনো দিনও আপনার সাথে বাইরে বের হব না।
এই বলে সে ক্রদ্ধভরে দ্রুত তার শোবার ঘরে চলে যায়। মনক্ষুণ্ন ও মনকষ্ট নিয়ে শাশুড়িও নির্বাক-নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে। বরও প্রতিদিনের ন্যায় তার কর্মের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। বাড়িতে যা কিছু ঘটলো তার কিছুই সে মনের সাথে জড়ায় না। নাট্যাভিনেতা যেমন ভয়ংকর ও দুর্দান্ত পাঠ শেষে একেবারেই স্বাভাবিক থাকে। সব দোষ সে তার স্ত্রীর ওপরই চাপায়। তাকেই দোষারোপ করে এবং কথায় কথায় আহত করে ছাড়ে। সন্ধ্যায় ফিরে দেখে স্ত্রী খাটের ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। মাথা গুজিয়ে রেখেছে বালিশের মাঝে। বালিশ তার চোখের পানিতে ভিজে একেবারে স্যাঁতসেঁতে। বর ঘরে প্রবেশ করলেও বিন্দুমাত্র নড়াচড়া তার মাঝে দেখা গেল না। চাপা কান্নার ফোঁপানী এবং নিঃশব্দ গুনগুনানী যদি না শোনা যেত তবে বর মনে করত সে গভীর ঘুমে অচেতন। ধীর পদক্ষেপে বর কাছে গিয়ে বলে :
- সোনিয়া! তোমার কী হয়েছে? তোমার কি কিছু হয়েছে?
কনে বালিশ থেকে মাথা তুলে। বরের দিকে এক পলক তাকায় কিন্তু কোনো উত্তর করে না। তখনও তার মসৃণ গালে অশ্রুর রেখা স্পষ্ট হয়ে আছে। সহানুভূতির সূরে বর বলে :
- আমি তো অনেক দিন যাবত তোমাকে এভাবে কাঁদতে দেখি না। তাঁর কি কিছু হয়েছে?
- কার কথা বলছেন?
- সামরিক অফিসার।
- কোথাকার কোন সামরিক অফিসার? অ্যা-
তার কথার প্রতিটি শব্দ প্রতিবাদী কণ্ঠেই উচ্চারিত হয়। তারপর সে মৃদু-ভর্ৎসনার সূরে চিৎকার দিয়ে ওঠে। দ্রুততার সাথে বলে :
- না, আর না। আপনি আর আপনার দুর্ব্যবহারের অপরাধকে এড়িয়ে যেতে পারবেন না। বরং বারবার আপনার দুর্ব্যবহারের মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এ যাবত অনেক সহ্য করেছি। আর নয়। আমি আর আপনার একটি দুর্ব্যবহারও সহ্য করতে পারব না। আমার ওপর যথেষ্ট হয়েছে। পুরুষের এ ধরনের দুর্ব্যবহার সহ্য করতে পারে পৃথিবীতে এমন কোন নারী নেই!
- এই যে... আত্মভোলা নারী! এ সব তুমি কী বলছ?
- আপনি কি অস্বীকার করতে পারবেন- আজ আমাকে কতটা কষ্ট দিয়েছেন?
- এ তো স্বাভাবিক অভিনয় মাত্র।
এটা আপনার খোঁড়া যুক্তি। অভিনয়ের আড়ালে আমার প্রতি আপনার অপছন্দের ভাবটাই গোপন করার চেষ্টা করছেন।
- সুব্হানাল্লাহ।
- প্রায়ই আপনি নিজেকে পারতপক্ষে দীর্ঘক্ষণ আমার চোখের সামনে থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছেন, আপনি কি এটা অস্বীকার করতে পারবেন? কাকডাকা ভোরে আমি ঘুমিয়ে থাকতেই আপনি সাত-সকালে বেরিয়ে পড়েন। লাঞ্চের আগে আর আপনার কোনো ছায়া পাওয়া যায় না। তড়িঘড়ি দুপুরের খাবারটুকু সেরে আবার বেরিয়ে পড়েন, রাত দশটা-এগারটা কিংবা রাত দুপুরের আগে আর আপনার কোনো পাত্তা থাকে না। এগুলো কি আমার চোখে পড়ে না? আজ আমি আপনাকে এবং আমার বিবেককে জিজ্ঞেস করতে চাই- আমার চেহারায় এমন কী দেখা দিল, যা আপনাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। আমার স্বভাব-চরিত্রেই বা এমন কী দোষ প্রকাশ পেল, যা আপনাকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে?
- এটা কি অজানা কিছু ?
- আপনি কি কসম করে বলতে পারবেন- আপনি আমাকে এড়িয়ে চলছেন না?
- হাঁ-হাঁ আমি হলফ করেই বলছি- কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে আমি এমনটি করছি না।
- আমাদের যখন প্রথম সাক্ষাৎ হয় তখন আপনি কত রসিক এবং মিশুক ছিলেন। আমার সাথে কী মজার ভালো ব্যবহার করতেন। কত মমতা দেখাতেন। সহানুভূতি প্রকাশ করতেন। কিন্তু এখন ...
- আমি যেমন ছিলাম তেমনই আছি। একটুও বদলাই নি।
- হাঁ তা ঠিক আছে। এ ঘরে যতক্ষণ শুধু আপনি আর আমি থাকি, ততক্ষণ তো আপনি ঠিকই আন্তরিকতাপূর্ণ মধুর ব্যবহার করেন। কিন্তু মানুষের সামনে...।
- কেন ? এটাই তো স্বাভাবিক। লোকজনের সামনে তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করাই দরকার। এটা তো আমাদের পরিকল্পনারই একটা অংশ।
- রাখেন আপনার প্লান-ফ্লান। কীসের পরিকল্পনা! আপনি কি জানেন আপনার এ পরিকল্পনা কত বড় ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে?!
- জানি... কিন্তু... এ ছাড়া আর উপায় কী বল!
- প্রথম প্রথম আপনার অভিনয় আমার কাছে ভালোই লাগত। কিন্তু এখন দেখছি আপনি বিষয়টিকে একেবারে সিরিয়াস হিসেবে নিয়েছেন। আচার-আচরণেও সেটাই প্রকাশ করছেন। মনে হচ্ছে সত্যিই আপনার-আমার মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই।
- হাঁ! ঠিকই তো। বেশী-বেশী অনুশীলন দক্ষতা বাড়ায়।
- এ ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন না করায় ভালো ছিল। তাহলে আর আমাকে সন্দেহের আগুনে জ্বলে-পুড়ে মরতে হতো না। আপনার প্রতিটি কথাই এখন আমার গায়ে কাঁটার মতো হানছে। অন্তরাত্মা পর্যন্ত ক্ষত-বিক্ষত করে দিচ্ছে। আর পারছি না। এখনি আপনার একটু সতর্ক হওয়া উচিত। আপনার চলাফেরা মোটেও আমার কাছে অভিনয় বলে মনে হচ্ছে না। প্রত্যেকটা কথার মধ্যেই আপনি সূক্ষ্ম কিছু রহস্য গোপন করার চেষ্টা করছেন। আমার মনকে দোলা দিতে পারে, এমন অভিনয় করে কি আপনার অভিজ্ঞতা বাড়ানো যেত না? আগে আমার মায়ের সামনে আদর করে কখনও সোনা, আবার কখনও লক্ষ্মী সোনা বলে কি না মজার সুরে ডাকতেন। কিন্তু... এখন, এখন তো আর সে ডাক আমি শুনতে পাই না। কি ঘটেছে? আজকাল কেন আমি আর আপনার মুখ থেকে সে মধুর ডাক শুনতে পাচ্ছি না? বলুন, আমার কথার জবাব দিন।
- আমাদের উদ্দেশ্য সফল করতেই তো পরিকল্পনায় এ পরিবর্তন। দেখছ না সময় একেবারেই ঘনিয়ে আসছে।
- সময় ঘনিয়ে আসছে মানে...?
- কি আশ্চর্য! তুমি জানো না নাকি?
- আমরা সপ্তম সপ্তাহের এক্কেবারে শেষ পর্যায়ে। আমাদের সামনে আর মাত্র ক’টা দিন বাকী। তারপরই আমাদের ছাড়াছাড়িটা চূড়ান্ত হবে।
- ও… তাড়াহুড়ো কি এ জন্যই? আপনি কি নিশ্চিত- আপনি কোনো ভুল করছেন না ?
- হাঁ! আমি এক্কেবারে নিশ্চিত। আমি হিসাবে কখনও ভুল করি না। একটা একটা করে দিন পার হচ্ছে। আর আমিও ওর প্রতিটা ক্ষণ গুনে গুনে হিসাব করে রাখছি।
- ও কাঁধ থেকে বোঝাটা নামানোর জন্যই তাহলে খুঁটে খুঁটে দিন গণনা করা হচ্ছে!
- কি আমি? আমি বোঝা নামানোর জন্য দিন গুনছি?
- আমাদের ছাড়াছাড়ি হতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকী! বাহ! কী আনন্দ আপনার! আচ্ছা আমাকে বলুন তো, ছাড়াছাড়ির পর আপনার কী করার প্লান আছে? আর থাকবেনই বা কোথায়?
- এ সব আমি কিছুই জানি না। ভবিষ্যৎ জীবনের কার্যসূচী তৈরী করে আর কিছু খোয়াতে চাই না।
- আমার কত আশা, আপনার ভবিষ্যৎ জীবন সুখময় হোক। আপনার সাথে আমার যে ক’টা দিন কেটে গেল- তা কি ভালো গেল না মন্দ, বলতে পারেন?
- বেশ! ভালোই গেল তো...।
- আমার আচার-আচরণ আপনার চির বন্ধু হয়ে থাকবে তো !
- হাঁ! অবশ্যই-চিরদিন অম্লান থাকবে।
- যাক, আপনাকে ধন্যবাদ।
- নাও, এবার নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাও। তোমার ঘুমানোর অনেক দেরী হয়ে গেছে। বর পাতলা কাঁথা টেনে দেয় তার গায়ে। শরীরটাকে ভালো করে ঢেকে দেয়। ক্ষমা ও মার্জনার ভঙ্গিতে তার কোমল মসৃণ মুখে নিজের হাতের পরশ লাগায়। কোমল তুল তুলে গাল তার হাতের মাঝে মোলায়েম হয়ে আসে। মনে হয় সে যেন একটা পোষা বিড়াল। আর বিড়ালের মালিক উহার নরম গায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। বর তার কোমল মসৃণ গালে শিহরণী উষ্ণতা অনুভব করে। তাই আস্তে করে সে তার হাতটা সরিয়ে নেয়। চুপিচুপি নিভিয়ে দেয় ঘরের বাতি। তারপর নীরবে গিয়ে শুয়ে পড়ে নিজের বিছানায়। (চলবে)
পাঠকের মতামত:

- গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত ১৮
- চার অঞ্চলে তাপপ্রবাহ, পঞ্চগড়ে এখনও শীতের কুয়াশা
- প্রকাশ্যে বিএনপি নেতাকে কোপালেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা
- অর্ধেক সময় পেরোলেও নিবন্ধন পেতে সাড়া নেই দলগুলোর
- কেউ ঢাকায় ফিরছেন আবার কেউ ছাড়ছেন
- লন্ডনে মাকে নিয়ে পার্কে ঘুরলেন তারেক রহমান
- লোহাগাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১০
- মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহত ২ হাজার ছাড়াল
- ঈদেও ছুটি নেই, যা বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক
- ঈদের দিতীয় দিনেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৩৪ ফিলিস্তিনি
- ঈদের দ্বিতীয় দিনেও ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’
- মঙ্গলবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টা গ্যাসের চাপ কম থাকবে বিভিন্ন এলাকায়
- সবাই মিলে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে: খালেদা জিয়া
- ঈদের ছুটিতে জনশূন্য ঢাকার রাজপথ
- প্রধান উপদেষ্টাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদির চিঠি
- মেট্রোরেল-আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু
- ঈদের পরদিনও ঢাকা ছাড়ছেন অনেকে
- সারা দেশে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর
- বায়তুল মোকাররমে ঈদের পাঁচ জামাত অনুষ্ঠিত
- "ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে"
- বায়তুল মোকাররমে দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় দোয়া
- সুলতানি-মুঘল আমলের ঐতিহ্যে ঢাকায় ঈদের আনন্দ মিছিল
- জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত
- যত বাধাই আসুক, নতুন বাংলাদেশ গড়বই: প্রধান উপদেষ্টা
- দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান
- ঢাকার ঈদের জামাতের নিরাপত্তায় থাকবে ১৫ হাজার পুলিশ
- ঢাকায় কখন কোথায় ঈদের জামাত
- গত দুই দিনে ঢাকা ছেড়েছেন ৪১ লাখ মানুষ
- ভালো আছেন খালেদা জিয়া, লন্ডনে পরিবারের সাথে ঈদ করছেন
- জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার ঈদ শুভেচ্ছা বার্তা
- শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেছে, সোমবার ঈদ
- চীনা ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের আহ্বান
- ভিড় থাকলেও নেই ভোগান্তি, ট্রেন ছাড়ছে সময় মতো
- বেইজিং থেকে ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
- ড. ইউনূসকে ৫ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী চাই : সারজিস
- জনগণ এবার স্বস্তিতে-নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা করতে পারছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- লন্ডনে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া
- বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে: প্রধান উপদেষ্টা
- শিক্ষকদের বেতন দিতে আজও খোলা রাষ্ট্রায়ত্ত ৪ ব্যাংক
- সিদ্ধান্ত বদলে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা জনপ্রতি ১২ ডলারে রইল
- ঢাকাকে গুরুত্ব দিয়ে ঈদ-নিরাপত্তায় বিশেষ তৎপরতা
- ঈদে ফিরতি যাত্রার ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু
- আজ জুমাতুল বিদা
- স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ, নেই যানজট
- বেইজিংয়ে শি জিনপিং ও ড. ইউনূসের বৈঠক
- বিশ্বের শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি এখন আমার দখলে: আসিফ
- বাংলাদেশ ছাড়ার আগে হামজা: ইনশা আল্লাহ, আবারও আসব
- হাসপাতাল থেকে দুদিন পর বাসায় যেতে পারবেন তামিম
- নিরাপত্তা নিশ্চয়তা না পেয়েও ‘হতাশ’ নন জেলেনস্কি
- পুঁজিবাজার সংস্কারে টাস্ক ফোর্সের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
- শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা
- ৬৬৮১ রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ
- ৬৬৮১ রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ
- প্রধান উপদেষ্টাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তারেক রহমান
- দলমত নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন: ফখরুল
- "প্রথম বা দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়, তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ লুটপাটের স্বাধীনতা"
- গ্যাসপ্রমকে বাংলাদেশে আরো অনুসন্ধান চালানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
- রেমিট্যান্সে নতুন রেকর্ড, ২৬ দিনে এলো ২৯৪ কোটি ডলার
- রেমিট্যান্সে নয়া রেকর্ড, ২৪ দিনে এলো ২৭৫ কোটি ডলার
- ইউক্রেনে পাকিস্তানের অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান রুশ রাষ্ট্রদূতের
- হামজার অভিষেক ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ড্র
- মেসিকে ছাড়াই ব্রাজিলের জালে এক হালি গোল দিল আর্জেন্টিনা
- "জনগণের আস্থা আনতে ঐকমত্যে না পৌঁছানোর উপায় নেই"
- ‘৭১ ও ২৪ এর উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষের জীবিকা সুষ্ঠু করা’
- রেলওয়ের লোকসানের বড় কারণ দুর্নীতি ও অপচয় : রেলপথ উপদেষ্টা
- "স্বাধীন ভূখণ্ডে এ দেশের মানুষ আর পরাধীন বোধ করবে না"
- একাত্তর আর চব্বিশ আলাদা কিছু নয়: নাহিদ ইসলাম
- "বৃহত্তর ঐক্যের প্রয়োজন হলে সবাই আবার এক হয়ে যাবে"
- ‘জনগণের ভোটাধিকার আদায়ে নির্বাচনের কথা বলে বিএনপি’
- স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
- আইপিওর খসড়া সুপারিশ জমা দিয়েছে পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের
- রিং পরানোর পর তামিমের অবস্থা অনুকূলে
- উত্তাল তুরস্কে পাঁচ দিনে ১১৩৩ মানুষ আটক
- ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ২৭ জুন
- ব্যান্ডপার্টিসহ শতাধিক গাড়িবহর নিয়ে নিজ জেলায় সারজিস
- স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ, নেই যানজট
- প্রধান উপদেষ্টাকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তারেক রহমান
- ঢাকাকে গুরুত্ব দিয়ে ঈদ-নিরাপত্তায় বিশেষ তৎপরতা
- বেইজিংয়ে শি জিনপিং ও ড. ইউনূসের বৈঠক
- দলমত নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন: ফখরুল
- নিরাপত্তা নিশ্চয়তা না পেয়েও ‘হতাশ’ নন জেলেনস্কি
- শিক্ষকদের বেতন দিতে আজও খোলা রাষ্ট্রায়ত্ত ৪ ব্যাংক
- সিদ্ধান্ত বদলে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা জনপ্রতি ১২ ডলারে রইল
- হাসপাতাল থেকে দুদিন পর বাসায় যেতে পারবেন তামিম
- বিশ্বের শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি এখন আমার দখলে: আসিফ
- গ্যাসপ্রমকে বাংলাদেশে আরো অনুসন্ধান চালানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
- পুঁজিবাজার সংস্কারে টাস্ক ফোর্সের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
- শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা
- বাংলাদেশ ছাড়ার আগে হামজা: ইনশা আল্লাহ, আবারও আসব
- লন্ডনে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া
- ঈদে ফিরতি যাত্রার ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু
- আজ জুমাতুল বিদা
- ড. ইউনূসকে ৫ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী চাই : সারজিস
- চীনা ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের আহ্বান
- ঈদের ছুটিতে জনশূন্য ঢাকার রাজপথ
- ভিড় থাকলেও নেই ভোগান্তি, ট্রেন ছাড়ছে সময় মতো
- "প্রথম বা দ্বিতীয় স্বাধীনতা নয়, তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ লুটপাটের স্বাধীনতা"
- বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে: প্রধান উপদেষ্টা
- বেইজিং থেকে ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
- জনগণ এবার স্বস্তিতে-নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা করতে পারছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাহিত্য এর সর্বশেষ খবর
সাহিত্য - এর সব খবর
