thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ১৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

দেবযানী ইস্যু ভারতের নৈতিক পরাজয়!

২০১৪ জানুয়ারি ১১ ০০:০০:৫৫

বিবিসি খবর দিয়েছে, ভিসা জালিয়াতির ঘটনার আসামি ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়ে অবশেষে ভারতের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার তাকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে দেবযানী ভারতের উদ্দেশ্যে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সায়েদ আকবারুদ্দিন জানান, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার সময় দেবযানী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে ফের নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

দেবযানী তার পাশে থাকার জন্য ভারত সরকার বিশেষ করে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভারতের জনগণ ও গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

দেবযানীর বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি অভিযোগ বহাল রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে পূর্ণ কূটনৈতিক নিরাপত্তায় দেশে ফিরছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র ফিরে গেলে ফের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে তাকে।

নিজ দেশীয় গৃহপরিচারিকা সঙ্গীতা রিচার্ডকে তার চুক্তি মোতাবেক বেতন-ভাতা না দেওয়া এবং ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে দেবযানীকে মার্কিন কর্তৃপক্ষ আটক করলে সে সময় ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সরকার এবং বিরোধী দল দেবযানীর ইস্যুতে জোরালো প্রতিবাদ করে। ভারত সরকার দেবযানীকে নির্দোষ দাবি করে তাকে অসম্মান করায় মার্কিন কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়। এতে মার্কিন-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দেয়। ক্ষমা না চাইলেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে ভারতের দাবি মোতাবেক দেবযানীকে মামলা থেকে রেহাই দিতে অস্বীকার করে। কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেও দেবযানীর মামলা প্রত্যাহারে ব্যর্থ হয় ভারত।

এদিকে আইনগত লড়াইয়েও দেবযানীর আইনজীবী কাঙ্ক্ষিত সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হন। এরপর দেবযানীর দেশে ফেরা তাই নানা প্রশ্ন জন্ম দেবে।

যতদূর জানা যায়, দোষ প্রমাণিত হলে দেবযানীকে মার্কিন আইনে ১৫ বছর সাজা পেতে হবে। যা একজন কূটনীতিক হিসেবে দেবযানীকে যতটা না বিপদে ফেলবে তার চেয়ে ভারতের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

যদি সে কারণে দেবযানীর দেশে ফেরা হয় তাহলে বলতে হয়, উপমহাদেশের রাজনীতিতে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার পক্ষে আনার জন্য দেবযানী ইস্যুকে ইজ্জতের প্রশ্ন হিসেবে দাঁড় করিয়েছিল। দেবযানীর দেশে ফেরা দেখে মনে হচ্ছে ভারত কূটনৈতিক লড়াইয়ে খানিকটা নেতিবাচক অবস্থায় পড়েছে।

তবে একজন দেশীয় পরিচারিকার শ্রমের পয়সা ফাঁকির অপরাধে যদি দেবযানীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয় তাহলে তার হারানো অবস্থান কিছুটা হলেও পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবে দেশটি। প্রশ্ন থেকে যায় দেবযানী ও সঙ্গীতা দুজনাই যেখানে ভারতীয় নাগরিক সেখানে অভিজাত দেবযানীর পক্ষ নিয়ে প্রকারান্তরে শ্রমিকের মর্যাদা ও মূল্য দেওয়ার বিষয়টিকে অস্বীকার করেছে ভারত। এ প্রশ্নে সাম্রাজ্যবাদী দেশ হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একজন ভারতীয় শ্রমিকের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার বিষয়টি মুখ্য হওয়ায় ইতিমধ্যে মার্কিনিদের কাছে নৈতিক পরাজয় ঘটেছে ভারতের।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert