thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ১ মে 24, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১,  ২২ শাওয়াল 1445

অবিশ্বাসের দোলাচলে এরশাদ, চলবে শুদ্ধি অভিযান!

২০১৪ জানুয়ারি ১৩ ২১:২৬:৫৫
অবিশ্বাসের দোলাচলে এরশাদ, চলবে শুদ্ধি অভিযান!

দলীয় কিছু নেতার প্রতি অবিশ্বাস আর আস্থাহীনতায় ভুগছেন জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে চলা এ সব নেতাদের প্রতি ক্ষোভ আর অভিমান থেকে শিগগিরই পার্টিতে শুরু করবেন শুদ্ধি অভিযান।

জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতাসহ একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এ খবর জানা গেছে।

জাপার ওই শীর্ষ নেতা সোমবার দুপুরে নিজ দপ্তরে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপচারিতায় দাবি করেন, ‘স্যার (এরশাদ) অনেক সহ্য করেছেন। লজ্জা অপমান আর অভিমানে তিনি এখন শোকাতুর। এ জন্য দায়ী কারা? আমরা। আমাদের বেঈমানির কারণে আজ জাতীয় পার্টিতে কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। একেকজন একেক কথা বলছেন।’

তিনি বলেন, ‘এ অবস্থা থাকবে না। ১০-১২ দিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে। বেঈমানির খেসারত ওরা পাবেই। আপনারা সব বুঝতে পারবেন। ’

আলাপচারিতা শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে এরশাদের সঙ্গে বারিধারার বাসভবনে দেখা করেন এই নেতা।

এ ছাড়া সোমবার দুপুরে এরশাদের সঙ্গে তার বারিধারার বাসভবনে প্রায় ১ ঘণ্টা বৈঠক করেন এরশাদের ছোটভাই প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের এবং মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার।

জাপা সূত্রের দাবি, আস্থাহীনতা আর অবিশ্বাস থেকেই প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজকে বাদ দিয়ে এরশাদ তার দলীয় মুখপাত্র হিসেবে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের ও মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে দায়িত্ব প্রদান করেছেন।

সোমবার বিকেলে এরশাদের প্রেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভরায় স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত দু’জনকে দলের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার খবর জানানো হয়। এর আগে এ পদে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এখন থেকে পার্টির চেয়ারম্যানের সকল নির্দেশনা এবং দলীয় সিদ্ধান্তের কথা তার পক্ষে উল্লিখিত দুই নেতার মাধ্যমে প্রচার বা প্রকাশিত হবে। অন্য কেউ পার্টির চেয়ারম্যান বা দলীয় মুখপাত্র হিসেবে পরিচয় দিয়ে পার্টির পক্ষে নীতি নির্ধারণী বিবৃতি বা বক্তব্য প্রদান করতে পারবেন না।

সূত্র মতে, খুব শিগগিরই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি পদ থেকে কাজী ফিরোজ রশিদকে অপসারণ করা হবে। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিনাপ্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকেও স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করবেন এরশাদ। অনুগত বেশ কয়েকজনকে নিয়োগ দেবেন প্রেসিডিয়াম সদস্য পদেও। কমিটিতে এরশাদের অনুগতদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি কাজী ফিরোজ রশিদ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমাকে মুখপাত্র থেকে বাদ দেওয়ায় খুব ভালো হয়েছে। এখন তো জাপা বিরোধী দল। অনেকজন এমপি। একেকজন একেক কথা বললে তো সমস্যা। এ জন্য হয়ত স্যার নির্ধারণ করে দিয়েছেন কারা কথা বলবেন।’

জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রুবেল দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আজ আমি স্যারের ( এরশাদ) সঙ্গে দেখা করেছি। স্যার জানিয়েছেন, তিনি সুস্থ। তিনি সিএমএইচেও সুস্থই ছিলেন। তা হলে কী ঘটেছিল সেখানে? জাতি তা জানতে চায়। আপনারা সবই জানেন, বুঝেন। স্যার মানসিকভাবে খুবই চাপে আছেন। একটু বিশ্রাম নিয়েই আপনাদের সব পরিষ্কার করবেন।’

জাপার এই নেতার দাবি, ‘আমরা যারা স্যারের সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি আমরা তো আর নির্বাচন করতে পারিনি, কিন্তু যারা নির্বাচন করে এমপি হলেন তারাও দাবি করছেন, স্যারের মত নিয়েই নির্বাচনে গেছেন। তাই আমরা প্রকৃত সত্য ও যারা স্যারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অতি শিগগিরই অনুরোধ জানাব।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘স্যার তো দলের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া বেঈমান নেতাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই অ্যাকশন নেবেন। আজও স্যারের সঙ্গে দুই ঘণ্টা কথা হয়েছে। একটু অপেক্ষা করেন। সব দেখতে পাবেন।’

(দ্য রিপোর্ট/সাআ/এইচএসএম/সা/জানুয়ারি ১৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর