thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউস সানি 1446

সাক্ষাৎকারে ফারুক চৌধুরী

‘সরকারের কাজ নিরাপত্তা দেওয়া, কূটনীতিকরা বাড়াবাড়ি করছেন’

২০১৪ জানুয়ারি ১৯ ২১:১৩:১১
‘সরকারের কাজ নিরাপত্তা দেওয়া, কূটনীতিকরা বাড়াবাড়ি করছেন’

ফারুক চৌধুরী; সাবেক পররাষ্ট্র সচিব। একাধিক দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা থাকা এই কূটনীতিকের মুখোমুখি হয় দ্য রিপোর্ট। সমসাময়িক বিষয়াবলী নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাহরাম খান

নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে অনেক আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?

ফারুক চৌধুরী : সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন কিছুটা অসাধারণ নির্বাচন হয়েছে। কেন এমনটা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। কারণ প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। তারা বলেছে, শেখ হাসিনা সরকার প্রধান থাকলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। শেখ হাসিনা সরকার প্রধান থাকবেন না তো কে থাকবেন? এই দেশে একটা সংবিধান আছে।

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। নির্বাচনে জিতে আপনি সংবিধান বদলান, তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু বর্তমানে যে সংবিধান আছে সেটা তো মানতে হবে।

নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত কূটনীতিকদের আচরণকে কীভাবে দেখছেন?

ফারুক চৌধুরী : বাংলাদেশে নিযুক্ত কূটনীতিকরা বাড়াবাড়ি করছেন। আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলি না, সমস্যা সমাধানে আগ্রহী হই না। বিদেশি কূটনীতিকদের ধরনা দেই। এমনটা হওয়া উচিত না। ভারতেও তো নির্বাচন হচ্ছে। সেখানে কূটনীতিকদের কোনো তৎপরতার বিষয় লক্ষ্য করা যায় না।

আমি নিজেও ৩৫ বছর বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছি। কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কখনও কোনো হস্তক্ষেপ দূরের কথা, প্রকাশ্যে কথা পর্যন্ত বলিনি।

এটা কি দেশের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে না? বাংলাদেশের কূনীতিক হিসেবে সেই সুযোগ কি থাকে? একই কারণে তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা বেশি...

ফারুক চৌধুরী : দেখুন বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের দেশ; কিন্তু ছোট দেশ নয়। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে পৃথিবীর অনেক দেশের অর্থ-বাণিজ্যের সম্পর্ক স্থাপন হয়েছে। তাদের স্বার্থেই তারা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা কামনা করে। সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়। খাদ্যে আমাদের প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা চলে এসেছে। মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) অর্জনে অন্য অনেক দেশকে আমরা পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছি।

ধারাবাহিক এ সব উন্নয়নের সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন হচ্ছে না কেন?

ফারুক চৌধুরী : গত কয়েক দিনে যে রাজনৈতিক সহিংসতা আমরা দেখেছি, তা মূলত বিরোধী দলগুলোর ভ্রান্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণ।

এক্ষেত্রে সরকারের কোনো দায়িত্বশীলতা থাকে কিনা?

ফারুক চৌধুরী : অবশ্যই। সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া। সরকার তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বার্ন ইউনিটে পোড়া মানুষের আহাজারি। মারা যাচ্ছে অনেকে। এগুলো মেনে নেওয়া যায় না।

এমন একটি পরিস্থিতি উদ্ভবের দায়-দায়িত্ব কার বেশি বলে মনে হয় আপনার কাছে...

ফারুক চৌধুরী : ভাংচুর করা, আগুন জ্বালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি এগুলো সব বিএনপির কাজ বলে আমি মনে করি না। এ সবের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিই আলোচিত বেশি। কারণ এদের মধ্যে শিক্ষার আলো কম। না হয় মানুষের বিরুদ্ধে মানুষ এভাবে হিংস্র হতে পারে না।

তবে গত পাঁচ বছরে শেখ হাসিনার সরকারের বেশ কিছু অর্জনের সঙ্গে অনেক বদনামের ভাগিদার হয়েছে বলে মনে করি; যেমন- পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি, ব্যাংক, শেয়ারবাজার, আর্থিক খাতের দুর্নীতিসহ বেশ কিছু বিষয়ে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

আমি মনে করি, গত পাঁচ বছর যেভাবে সরকার পরিচালনা করার দরকার ছিল সেভাবে সরকার পরিচালনা করতে শেখ হাসিনা অনেকাংশে ব্যর্থ হয়েছেন। গত আমলের কেবিনেট থেকে এবার যে কেবিনেট গঠন হয়েছে, সেখান থেকেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়। গতবারের বেশির ভাগ সদস্যকে তিনি বাদ দিয়েছেন। নিশ্চয়ই এদের ক্ষেত্রে অযোগ্যতা, অসততা ও অদক্ষতার অভিযোগ ছিল। এ জন্যই বিগত সরকার এত বদনাম কুড়িয়েছিল।

আমার মনে হয়, শেখ হাসিনার বিগত সরকার আরও ভালো দক্ষতার পরিচয় দিতে পারত যদি তার মন্ত্রিসভায় আরও দক্ষ ও সৎ কিছু সদস্য থাকতেন।

এবারের মন্ত্রিসভা দেখে কী মনে হচ্ছে?

ফারুক চৌধুরী : আমি খুবই আশাবাদী। এই মন্ত্রিসভা ভালো কাজ করবে বলে মনে হয়। নতুন-পুরনো মিলিয়ে অভিজ্ঞ একটি মন্ত্রিসভা হয়েছে। বিশেষ করে তোফায়েল আহমেদ ও আমির হোসেন আমু আছেন। তারা সততা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন। তবে সবাইকে যে আমার-আপনার পছন্দ হবে বিষয়টা সে রকম নয়। দুই-একজন এদিক- সেদিক থাকবেই।

এটা মনে রাখবেন যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা রাজনৈতিক সমস্যা। বর্তমানে সবচেয়ে বড় যে বিরোধী দল তারা কিন্তু সংসদের বাইরে। এটা তাদের নিজেদের ভুল। সরকারকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে তারা যেন মূল ধারায় ফিরে আসে। উভয়ে মিলে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে যেতে পারে।

যে রাজনৈতিক ডামাডোল গেল তাতে কারা লাভবান হলো বলে মনে করেন?

ফারুক চৌধুরী : আমি মনে করি আওয়ামী লীগ নিজেকে প্রমাণ করার আরেকটি সুযোগ পেল।

যেমন?

ফারুক চৌধুরী : মনে করুন, আগের সরকারে যেসব ভুল-ভ্রান্তি আছে সেগুলো শুধরে আরও ভালোভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে তারা। একই সঙ্গে এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে একটি দায়িত্বশীল দল হিসেবে। কারণ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্বদানকারী দল। তাদের ঐতিহাসিক কিছু দায়িত্ব রয়েছে। দেশের গণতন্ত্রায়নে তারা অন্যান্য বড় দলগুলোর সমন্বয়ে দায়িত্ব পালন করবে আমি সেই প্রত্যাশা করি।

১৯৮৮ ও ১৯৯৬ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও বিএনপি নিজেদের ললাটে কলঙ্ক এঁকেছিল। এবার কি আওয়ামী লীগ সেই পথের পথিক হলো?

ফারুক চৌধুরী : এর বাইরে কোনো উপায় ছিল না সরকারের। কেউ যদি নির্বাচনে না আসেন, কি চায় তা না বলেন, তাহলে কীভাবে হবে? আমি আশা করি বস্তুনিষ্ঠ পদক্ষেপ নিয়ে শেখ হাসিনা রাজনীতিতে সুস্থতা ফিরিয়ে আনবেন। দল হিসেবে এটা আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক দায়িত্ব।

দেশের জন্মলগ্ন থেকে রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থাকলেও খুব কাছে থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিকে প্রত্যক্ষ করেছেন । আগামী দিনের রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে বলে মনে করেন...

ফারুক চৌধুরী : গত চার দশকের অর্ধেকের বেশি সময় আমরা স্বৈরশাসন অথবা একদলীয় শাসনের অধীনে কাটিয়েছি। সংসদীয় রাজনীতিতে পথচলা শুরু করার পর একটি দল জেতে, আরেকটি হারে। এভাবে অদল-বদল হতে হতে একটা একগুয়েমি চলে এসেছে। আমাদের যদি তিন থেকে চারটি বড় দল থাকত তাহলে একটি ভারসাম্য থাকত। যেমন ভারত এখন কোয়ালিশন যুগে প্রবেশ করেছে। আমি বলছি না যে কোয়ালিশন থাকা মানেই ভালো, কিন্তু ব্যালেন্স তো থাকতে হবে।

জাতীয় পার্টি মোটামুটি একটি অবস্থান ধরে আছে তো...

ফারুক চৌধুরী : জাতীয় পার্টিকে আমি কোনো মূল ধারার রাজনৈতিক দল বা গুরুত্বপূর্ণ শক্তি বলতে রাজি নই। আমরা যে রাজনৈতিক সমস্যায় আছি এটা হয়ত আমাদের ভাগ্য। বলতে পারেন রাজনৈতিক ভাগ্য।

অনেকেই বলেন বাঙালি স্ব-শাসিত জাতি নয়। তাই এ সব সমস্যা...

ফারুক চৌধুরী : বঙ্গবন্ধুর একটা কথা মনে পড়ে গেল। ১৯৭২ সালের কথা। আমাকে লন্ডনে বলেছিলেন, যদি শক্তিশালী একটা বিরোধী দল থাকত তাহলে আজকে আমার এই দূরবস্থা হতো না। আমার দলের লোকেরা যেভাবে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে সেভাবে সব কিছু করতে পারত না। ভালো বিরোধী দল না পাওয়া আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয়।

তার মানে কি আমরা ভালো সরকারি দল পেয়েছি?

ফারুক চৌধুরী : তাও পাইনি। কারণ শক্তিশালী বিরোধী দল ছাড়া শক্তিশালী সরকার হয় না। গণতন্ত্রে সরকার এবং বিরোধী দলে শক্ত অবস্থান দরকার। দুই দলকেই চাঙ্গা থাকতে হয়। বিরোধী দলকে জাগ্রত থাকতে হয়।

সরকার ও বিরোধী দলের কার্যক্রম হওয়া দরকার সংসদভিত্তিক। অথচ আমাদের এত সুন্দর বিল্ডিংটা (সংসদ ভবন) নাক ডেকে ঘুমায়।

পররাষ্ট্রনীতির কথাই বলি। পররাষ্ট্রনীতি হবে সংসদে। সংসদে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দেশীয় অবস্থান অনুযায়ী পররাষ্ট্রনীতি ঠিক হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মস্তিষ্ক প্রসূত পররাষ্ট্রনীতি প্রত্যাশিত নয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ সব দেশেই সংসদে পররাষ্ট্রনীতি ঠিক হয়।

আমাদের দেশের পররাষ্ট্রনীতি ওয়ান ম্যান শো। আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে যা করলাম, তাই দেশের নীতি হয়ে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে যে প্রত্যাশার কথা বললেন এমন সংস্কৃতি কি বাংলাদেশ কখনও চর্চা করেছে?

ফারুক চৌধুরী : না, আমরা এমন সংস্কৃতি চালু করতে পারিনি। তবে বঙ্গবন্ধুর সময়ে তিনি একটি দার্শনিক ভিত্তি দিয়ে গিয়েছিলেন। তার বিশেষ একটি গুণ ছিল। কোনো বিষয়ে তিনি যখন বুঝতেন যে পরামর্শ করা দরকার, তখন তিনি আমাদের ডাকতেন, কথা বলতেন।

আপনি যখন পেশাদার কূটনীতিক ছিলেন তখন এ বিষয়গুলোতে কোনো উদ্যোগ ছিল?

ফারুক চৌধুরী : ঐ যে বললাম বঙ্গবন্ধু নিজে থেকে আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন। যা করতে হবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতেন। তিনি বুঝতে পারতেন কোন বিষয়টা জানতে তার গ্যাপ আছে। এ উপলব্ধিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু আমাদের পররাষ্ট্রনীতির নির্মাতা। তিনি যে দিকনির্দেশনা দিয়ে গিয়েছিলেন সেই অনুযায়ী কাজ করতে পারলে কোনো সমস্যা থাকত বলে মনে হয় না।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন নিয়ে যে পরামর্শ দেখা যাচ্ছে তাতে সরকারের কী করা উচিত বলে মনে করেন আপনি?

ফারুক চৌধুরী : নির্বাচন একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। পৃথিবীর কোনো দেশে নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের এমন প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হলে হয়ত আরও অনেক দেশের অভিনন্দন পেত সরকার। তার মানে এই নয় যে, সরকারের সঙ্গে বিদেশিরা কাজ করা বন্ধ করে দেবে।

বাংলাদেশ অনেক দেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা উৎপাদন ক্ষমতায় অসাধারণ সক্ষমতা দেখিয়েছি। সারাবিশ্ব বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের অগ্রগতি দেখেছে। অনেক খাতে আমাদের সক্ষমতা দেখানোর সুযোগ আছে। তাই বাংলাদেশকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।

অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ অগ্রগতি করছে, কিন্তু রাজনীতি...

ফারুক চৌধুরী : রাজনীতিতে অনেক ঘাটতি আছে। রাজনীতির এ সমস্যা অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলতে পারে না।

একটা কথা আছে, যে এলাকার মানুষ যেমন, সেখানকার শাসকও তেমন। দেখুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি এক দিনে তৈরি হয় না। সাধারণ মানুষই রাজনীতির মূলধারা।

তার মানে কি রবীন্দ্রনাথের সেই কবিতার মতো করে এ সময়ে বলা যায়, ‘ষোলো কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি?’

ফারুক চৌধুরী : আশা করি আমরা খুব শীঘ্রই বলতে পারব ‘ষোলো কোটি বাঙালিকে মানুষ করেছ, বাঙালি করে রাখনি।’ আমাদের মৌলিক শক্তি একতা। সারাদেশের প্রকৃতি, মানুষ, ভাষা সবই প্রায় এক। এই শক্তি আমাদের অনেক দূর এগিয়ে দেবে।

প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন দেখছেন...

ফারুক চৌধুরী : আমার মনে হয় ভালোই যাচ্ছে। কিছু সমস্যা থাকলেও সেগুলোর সমাধান হচ্ছে। যেমন- মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তি। ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার সমস্যা নিষ্পত্তি হওয়ার পথে। নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিভিন্নভাবে কাজ হচ্ছে।

ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনার সরকার যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে ভারত কি সেই প্রতিদান দিয়েছে?

ফারুক চৌধুরী : দেয়নি, তবে এ জন্য আবার ভারত সরকারের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বলা যাবে না। কারণ তাদের সরকার ও শাসন পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইচ্ছে করলেই সরকার একা সব সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

অনেকেই সমালোচনা করছেন ভারত-আমেরিকা তাদের স্বার্থ অনুযায়ী অবস্থানে থেকে কাজ করছে। বাংলাদেশ সেটা পারছে না...

ফারুক চৌধুরী : আমি সেটা মনে করি না। কারণ প্রধানমন্ত্রী প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই সে বিষয়টা পরিষ্কার করেছেন। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা কারও চাপের কাছে মাথানত করেন না। এই কথার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।

আপনি যদি লক্ষ্য করে থাকেন নির্বাচনের আগে সুজাতা সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মিডিয়াতে তাকে উদ্ধৃত করে যেসব কথা বলেছেন- তাতে কী সেই...

ফারুক চৌধুরী : এটা আমাদের দুর্বলতা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কলহের সুযোগ নিয়ে অনেকে নানান কথা বলেন। আমেরিকার রাষ্ট্রদূত কতটুকু কী বুঝেন জানি না। প্রায় প্রতিদিনই তার মন্তব্য থাকে। কূটনীতিকদের এভাবে কথা বলা উচিত বলে মনে করি না।

আপনাকে দ্য রিপোর্টের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

ফারুক চৌধুরী : আপনাকেও ধন্যবাদ।

(দ্য রিপোর্ট/বিকে/এইচএসএম/শাহ/জানুয়ারি ১৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশেষ সংবাদ এর সর্বশেষ খবর

বিশেষ সংবাদ - এর সব খবর