thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি 25, ১৮ মাঘ ১৪৩১,  ২ শাবান 1446

অনিশ্চিত ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যাহ উৎসব!

২০১৪ জানুয়ারি ২০ ২২:৪৬:২১
অনিশ্চিত ঐতিহ্যবাহী রাজপুণ্যাহ উৎসব!

বান্দরবান সংবাদদাতা : এবার বান্দরবানের ঐতিহ্যবাহী বোমাং রাজপূন্যাহ উৎসব হচ্ছে না! চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় নাশকতার আশঙ্কায় জানুয়ারি মাসে বোমাং সার্কেলের প্রজাদের কাছ থেকে জুমের বাৎসরিক খাজনা আদায়ের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাজপূণ্যাহ (পইংজ্রা) উৎসব আয়োজন করা যাচ্ছে না বলে দাবি রাজ পরিবারের।

তবে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কেটে গেলে চলতি বছরের শেষের দিকে অর্থাৎ ডিসেম্বরে এই উৎসব আয়োজনের ইচ্ছা রাজ পরিবারের। জেলার বোমাং সার্কেল চিফ ও ১৭তম রাজা ইঞ্জিনিয়ার উচ প্রু মারমা একান্ত স্বাক্ষাতকারে দ্য রিপোর্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাজপরিবার সূত্র জানায়, রাজপূণ্যাহ উৎসবের উদ্ধোধনী দিনে বান্দরবান বোমাং সার্কেল চিফ রাজা ঐতিহ্যবাহী রাজকীয় পোশাক পরিধান করে রাজবাড়ী থেকে রাজকীয় বাঁশির সুরে অনুষ্ঠানস্থলে নেমে আসেন। এ সময় তার সৈন্য-সামন্ত, উজির-নাজির, সিপাহী-শালাররা রাজাকে গার্ড দিয়ে মঞ্চস্থলে নিয়ে যান। বোমাং রাজা সিংহাসনে উপবিষ্ট হলে সারিবদ্ধভাবে বান্দরবান জেলার সাতটি উপজেলার ৯৫টি মৌজা এবং রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই ও রাজস্থলী দুটি উপজেলার ১৪টি মৌজাসহ মোট ১০৯টি মৌজার হেডম্যান, আট শতাধিকেরও বেশি কারবারী, রোয়াজারা রাজাকে কুর্নিশ করে জুমের বাৎসরিক খাজনা ও উপঢৌকন তুলে দেন। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভিন্ন পেক্ষাপটের কারণে জুমের বাৎসরিক খাজনা আদায় অনুষ্ঠান রাজপূণ্যাহ উৎসব এবার জানুয়ারি মাসে আয়োজন করা হচ্ছে না। এটি বোমাং সার্কেলের চিফ উচ প্রু মারমার প্রথম এবং বংশ পরাম্পরায় ১৩৮তম রাজপূণ্যাহ উৎসব ছিল।

২০১৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বোমাং সার্কেলের ১৬তম রাজা কেএসপ্রু বার্ধক্যজনিত রোগে ৮১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণের পর গত বছরের ২৪ এপ্রিল বর্তমান রাজা দায়িত্ব নেন।

বোমাং রাজা ইঞ্জিনিয়ার উচ প্রু মারমা বলেন, বংশ পরাম্পরায় বোমাং রাজপ্রথা অনুযায়ী রাজ পরিবারের সবচেয়ে বয়জ্যেষ্ঠ পুরুষ রাজা নির্বাচিত হন। ১৮৭৫ সালে ৫মতম বোমাং রাজা সাক হ্ন ঞোর আমল থেকে বংশ পরাম্পরায় ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছরই শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পইংজ্রা (রাজপূণ্যাহ) উৎসব হয়ে আসছে। এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যর একটি অংশ এবং ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পার্বত্যাঞ্চলের পাহাড়ী-বাঙ্গালী সকলে এই উৎসবে অংশ নেন।

বোমাং রাজা আরও বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছে বোমাং সার্কেল এবং আগামীতেও রাখবে।

রাজপূণ্যাহ উৎসব ঘিরে বান্দরবানে সপ্তাহব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় নাগর দোলা, ভেরাইটিসু, পপসংগীত, পুতুল নাচ, মৃত্যুকূপসহ ব্যতিক্রমী নানা আয়োজন থাকে। এ ছাড়াও হরেক রকম জিনিসপত্রের দোকান এবং সারারাতব্যাপী চলে যাত্রা অনুষ্ঠান। উৎসবটি পরিণত হয়েছে পাহাড়ী-বাঙ্গালীর মিলন মেলায়। শুধুমাত্র বান্দরবান, রাঙামাটি নয় রাজপূণ্যাহ মেলা দেখতে ভিড় জমায় দেশী-বিদেশী হাজারও পর্যটকও।

(দ্য রিপোর্ট/এএস/এমএআর/জানুয়ারি ২০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর