thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউল আউয়াল 1446

আশরাফুজ্জামান-মুঈনুদ্দীনের ফাঁসির আদেশ

২০১৩ নভেম্বর ০৩ ১১:০৬:০৯
আশরাফুজ্জামান-মুঈনুদ্দীনের ফাঁসির আদেশ

দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : একাত্তরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার নীলনকশা বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেয়া দুই বদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ রায় ঘোষণা করেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক, ছয় জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যা করেন। পলাতক আশরাফুজ্জামান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে।

তাদের বিরুদ্ধে আনীত ১১টি অভিযোগের সবকটিই প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন।

রবিবার সকাল ১১টার দিকে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ তাদের বিচারের রায় পড়া শুরু হয়।

সংক্ষিপ্ত রায় ১৫৪ পৃষ্ঠার। এর সারাংশ ৪১ পৃষ্ঠা। এর মধ্যে প্রথম ১৫ পৃষ্ঠা পড়েন বিচারপতি মো. শাহহীনুর ইসলাম। এরপর ১৫ পৃষ্ঠা পড়েন বিচাপতি মজিদুর রহমান। মূল রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে গত ২৪ জুন ১১টি অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।

আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিরুদ্ধে প্রথম থেকে পঞ্চম অভিযোগে রয়েছে, তাদের নির্দেশে ও অংশগ্রহণে আলবদর সদস্যরা একাত্তরের ১০ ডিসেম্বর রাতে দৈনিক ইত্তেফাকের কার্যনির্বাহী সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে, ১১ ডিসেম্বর ভোরে পাকিস্তান প্রেস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান প্রতিবেদক সৈয়দ নাজমুল হককে ও দৈনিক পূর্ব দেশের প্রধান প্রতিবেদক এএনএম গোলাম মোস্তফাকে, ১২ ডিসেম্বর দুপুরে বিবিসির সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদকে এবং ১৩ ডিসেম্বর শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভীনকে অপহরণের পর হত্যা করে। তাদের মধ্যে কেবল সেলিনা পারভীনের লাশ পাওয়া যায়।

ষষ্ঠ অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে পৌনে ১০টার মধ্যে আশরাফ ও মুঈনের নেতৃত্বে আলবদর সদস্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক সিরাজুল হক খান, আবুল খায়ের, ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য ও চিকিৎসক মো. মর্তুজাকে অপহরণ করে। ১৬ ডিসেম্বরের পর মিরপুরের বধ্যভূমিতে সিরাজুল হক খান ও ফয়জুল মহিউদ্দিনের ছাড়া বাকি ছয়জনের লাশ পাওয়া যায়।

সপ্তম থেকে একাদশ অভিযোগে রয়েছে, একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী ও দৈনিক সংবাদের যুগ্ম-সম্পাদক শহীদুল্লা কায়সারকে অপহরণ করা হয়। তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। ১৫ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল মেডিসিন ও কার্ডিওলজির অধ্যাপক মো. ফজলে রাব্বী এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. আলীম চৌধুরীকে অপহরণ করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে তাদের লাশ পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, ট্রাইব্যুনাল-২ মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন, আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আবদুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন। আপিলের রায়ে কাদের মোল্লাকে আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। ট্রাইব্যুনাল-১ পৃথক তিনটি মামলার রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ, সাবেক আমির গোলাম আযমকে বয়স বিবেচনায় ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

(দিরিপোর্ট২৪/ওএস/জেএম/নভেম্বর ০৩, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর