thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউল আউয়াল 1446

সাক্ষাৎকারে ড. আবদুর রাজ্জাক

‘বাংলাদেশে কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না’

২০১৪ জানুয়ারি ৩০ ২১:০৯:১০
‘বাংলাদেশে কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না’

গত সরকারে যে কয়েকজন মন্ত্রী ইতিবাচক ভাবমূর্তি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক দ্য রিপোর্টের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন।

নির্বাচন হয়েছে, সরকার গঠিত হয়েছে, কিন্তু দেশে বিদেশি অনেক পক্ষ থেকে নতুন নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু সরকার তো কর্ণপাত করছে না। কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নির্বাচন হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ীই বর্তমান সরকার পরিচালিত হচ্ছে। ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরকার তার কাজ করে যাবে। এটাই তো নিয়ম। মানুষ তার ভোট দিয়েছে। প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে না।’

বিএনপির সহযোগিতার প্রত্যাশা করে ড. রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা মনে করি, সরকার পরিচালনা করতে গেলে বিএনপির সহযোগিতা দরকার। তাদের কাছ থেকে আমরা তা প্রত্যাশা করি।’

আপনার কী মনে হয়, এভাবে সরকার চলবে আর বিএনপি সহযোগিতা করবে? জবাবে সাবেক এই খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বা বিরোধী দলে থাকলেই শুধু দেশের জন্য কাজ করা যায় এমন ধারণা ঠিক না। এসবের বাইরে থেকে দেশের জন্য কাজ করা যায়। বিএনপি সে দিক থেকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে পারে।’

-আপনি গত মন্ত্রিসভায় ছিলেন, এবার নেই। অনুভূতি কেমন?

-বিষয়টা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের ব্যাপার উল্লেখ করে ড. রাজ্জাক বলেন, ‘তিনি ক্যাপ্টেন তার টিম গুছানোর ক্ষেত্রে তিনি যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই টিমে নেবেন। যোগ্য অনেকেই থাকেন। কিন্তু সবাইকে সব জায়গায় নেওয়া যায় না। অদল-বদল হয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ আমাদের সময়ের যে সব দুর্বলতা ছিল সেগুলো কাটিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ করবে।’

-১৫৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়াদের মধ্যে আপনিও একজন। ১৪৭ আসনে প্রশ্নবিদ্ধ ভোটার উপস্থিতি, এগুলোর মাধ্যমে কী একটি স্বাভাবিক সরকার রূপ পেতে পারে?

-দেখুন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই আমাদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। এই নির্বাচন করে আমরা খুবই তৃপ্ত বা গর্বিত নই। কিন্তু এর বাইরে আমাদের কিছু করার ছিল না।

ড. রাজ্জাক বলেন, ‘এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা তার বলিষ্ঠ পদক্ষেপের মাধ্যমে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন এর সুদূর প্রসারী ফল ভবিষ্যতে আপনারা দেখতে পাবেন। দেশ শাসনে যে প্রজ্ঞার দরকার তার জন্য শেখ হাসিনার কাছে অনেক কিছু শেখার আছে। প্রথম প্রথম হয়ত কিছুটা অন্যরকম লাগছে। সামনের দিনে এটা ঠিক হয়ে যাবে।’

-সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের জন্য ২৪ জানুয়ারির পর আরও তিন মাস সময়ের কথা বলছিলেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। আপনারা সেই চেষ্টা করলে আরও বেশি আন্তরিকতার প্রকাশ হত না?

-অনেক বেশি আন্তরিকতা দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করেছি আমরা। শুধু আমরা নই। জাতিসংঘ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ পর্দার অন্তরালে অনেক বেশি চেষ্টা চালানো হয়েছে। এমনকি নেত্রী নিজে ফোন দিয়ে ৩৯ মিনিট কথা বলেছেন। কিন্তু তাদের এক কথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে আসবে না। তাদের বোঝা উচিত বাংলাদেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না।

-যতটুকু শুনেছি আপনাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের দেশব্যাপী দল গোছানোর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

-দলের কাজই মূল কাজ। দলের ওপর ভর করেই সরকার হয়। দীর্ঘদিন দল ও সরকার উভয় জায়গায় কাজ করেছি। এখন বড় পরিসরে দলের কাজ করার সুযোগ এসেছে। কাজ করব। আবার যখন প্রধানমন্ত্রী তার টিমে নেওয়ার প্রয়োজন মনে করবেন যোগ দেব।’

জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা মাঝে মধ্যেই বলা হয়। আসলে কী নিষিদ্ধ করা হবে?-এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘নিষিদ্ধ করাই বড় কথা নয়। যারা সন্ত্রাস করে, যাদের মধ্যে ন্যূনতম মানবিক মূল্যবোধ নেই, তাদের বিষয়ে কোনো ছাড় নয়। এটা শুধু আমরা সরকারে আছি এ জন্যই নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক আর নাই থাকুক। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় আওয়ামী লীগ সমানভাবে তার দায়িত্ব পালন করে যাবে।’

(দ্য রিপোর্ট/বিকে/এইচএসএম/সা/জানুয়ারি ৩০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশেষ সংবাদ এর সর্বশেষ খবর

বিশেষ সংবাদ - এর সব খবর