thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউল আউয়াল 1446

বাংলাদেশে তাবলীগের প্রসার

২০১৪ জানুয়ারি ৩১ ০০:৩২:৫৭
বাংলাদেশে তাবলীগের প্রসার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী : আমি মানব ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছি আমার ইবাদতের উদ্দেশ্যে। আর এ ইবাদতের অর্থ হচ্ছে প্রাপ্ত বয়স্ক ও জ্ঞান হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সকল কাজ আল্লাহর হুকুম ও রাসূলের আদর্শানুযায়ী করা। তাবলীগ জামায়াত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন সমগ্র জীবনকে ইবাদতে রূপান্তরিত করার জন্য কোনো না কোনোভাবে এর সাথে সম্পৃক্ত থাকা প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব কর্তব্য।

আর এটা সব সময় সম্ভব না হলেও মুরব্বীগণ নিম্ন পদ্ধতি অনুসরণ করার উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। সাধারণত : আলেমদের ক্ষেত্রে জীবনে এক বছর সর্বজনসাধারণের জন্য চারমাস ( তিন চিল্লা) চল্লিশ দিন ( এক চিল্লা ) প্রতি মাসে তিন দিন থেকে দশ দিন। সপ্তাহে কম পক্ষে দুটি গাশত, দৈনিক দুটি তা‘লীম ও পরামর্শ এবং সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ( জুমআ রাত্র) অন্তত : এক রাত শবগুজারী করা।

বর্তমানে কওমী ছাত্ররা দাওরায়ে হাদীস শেষে এক বছর, জনসাধারণের অনেকেই বছরে তিন চিল্লা বা এক চিল্লা তাবলীগ জামাআতে সময় লাগান। আবার কেউ কেউ তাবলীগের মুরব্বীদের অনুমতি নিয়ে সমগ্র জীবন তাবলীগের কাজে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেন। এটাকে জীবন চিল্লা বলা হয়্ তবে এ সকল ব্যক্তির সময় কিভাবে ব্যয় করা হবে তা মুরব্বীদের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে। দেশের প্রধান মারকাযে এদের তালিকা সংরক্ষিত থাকে। মুরব্বীগণ যে কোন সময়ে এদেরকে যে কোন তাবলীগী কাজে নিয়োজিত করতে পারেন।এ ক্ষেত্রে সংসারের দায়িত্ব পালন বিষয়েও বিশেষ লক্ষ্য রাখা হয়। এ ছাড়া কোন ব্যক্তি ইচ্ছা করলে তাাঁর জীবনের চার ভাগের এক ভাগ, তিন ভাগের এক ভাগ বা দু ভাগের এক ভাগ ইত্যাদি নিয়মে তাবলীগেরকাজে সময় লাগাবার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কোন ব্যক্তি জীবনের অর্ধেক সময় তাবলীগের কাজ করার অর্থ হচ্ছে ছয় মাস তাবলীগের কাজ করা, বাকী ছয় মাস ব্যক্তিগত পারিবারিক কাজ করা। এটি একাধারে বা বিভিন্ন সময় পার্ট পার্ট হতে পারে।

তাবলীগের মুরব্বীগণ এ নীতির উপর জোর দিয়ে থাকেন যে, সময় যে ভাবেই বের করা হোক তা যেন আন্তরিকাত ও খুলুসিয়াতের সাথে সম্পন্ন হয়্ কোন ক্রমেই তা যেন দুনিয়ার স্বার্থে ব্যয় না হয়।

আল্লাহর রাস্তায় জামায়াতের প্রতিদিনের আমল সমূহ

আল্লাহর রাস্তায় জামায়াত হচ্ছে যারা তিন দিন, সাত দিন বা দশ দিন , চল্লিশ দিন এক চিল্লা, ধারাবাহিকভাবে তিন চিল্লা এবং এক বছর তাবলীগের কাজে জামায়াত বদ্ধভাবে বেরিয়ে পড়ে। আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার আগে সফরের প্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ শুরার সাথী অথবা অন্যকোন অভিজ্ঞ উলামায়ে কোরাম হেদায়েত পেশ করেন। অত:পর দুআর পর মোছাফা করে জীম্মাদারের নির্দেশ মোতাবেক জামায়াতের যে কোন একজন নিজেদের আগমনের উদ্যেশ্য বর্ণনা করে। অত:পর মছনুন দুআ পড়ে ও যিকিরের সাথে মসজিদে প্রবেশ করে। মসজিদে প্রথম কাজ মাশওয়ারা বা পরামর্শ করা। পরামর্শের ক্ষেত্রে এর ফজীলত , উদ্দেশ্য আদব, পদ্ধতি, বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হয়্ পরামর্শের ভিত্তিতে নিন্ম বর্ণিত কার্যক্রম ও সময় মোতাবেক আমল সমূহের দায়িত্ব বন্টন করা হয়:

১.খেদমত করা। জামায়াতের সকল সাথীর মধ্য থেকে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে রান্ন বান্নার দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই তিন জনও সাথী খেদমত করে থাকে। দুপুর থেকে সকাল পর্যন্ত সাথীদ্বয় খেদমত করে থাকে। খেদমতের সাথীদের নামও ডায়েরীতে লেখা হয়।
২. তা‘লীম দেয়া। সকাল নয় টা থেকে বার টা পর্যন্ত তা‘লীম ও তা‘লীমী গাস্ত এবং খুসুসী গাস্ত করে।
৩. বার টার পর থেকে যোহরের সালাতের প্রস্তুতি, যোহর নামাজ শেষে পাঁচ মিনিটের জন্য মুসল্লীদেরকে নিয়ে তা‘লীম করে । দ্বি-প্রহরের খাবার এবং বিশ্রাম তিন টা পর্যন্ত চলতে থাকে।
৪. সাড়ে তিনটা থেকে আরম্ভ হয় তা‘লীম আসর পর্যন্ত। ফাযায়েলে আমাল , ফাযায়েলে সাদাকাত থেকে তা‘লীম করে থাকে।
৫. আসরের নামাজের পর এলান, গাস্তের গুরুত্ব, ফজীলাত, আদব ও তারতীব বয়ান করা হয়্ অল্প সমযে গাস্তের বয়ানের পর উমুমী গাস্ত করে।
৬. মাগরিব সালাতের পর বয়ানের এলান বা ঘোষণা এবং ছয় উছুলের উপরে বয়ান করে। বয়ানের পর তাশকীল বা আল্লাহর রাস্তায় যাওয়ার জন্য সময় চাওয়া হয়। সময় দানে সম্মতিদের নাম ঠিকানাসহ তালিকা প্রস্তুত করা হয়।
৭. এশার সালাতের পর হেকায়েতে সাহাবা এবং হায়াতুস সাহাবা পাঠ করে। কিছু সময়ের জন্য নিম্নের যে কোন একটি বিষয় সম্পর্কে পরস্পরের মধ্যে আলোচনা করে । থাকে। যেমন : মসজিদের আদব, তাহারাত, পানাহার, নিদ্রা, তা‘লীম, ব্যক্তিগত আমল, গাস্ত এর পদ্ধতি খেদমত দাওয়াত ও তাবলীগ করে থাকে।
৮. রাত্রের খাবারের পর ব্যক্তিগত মামুলাত সম্পন্ন করে প্রত্যেক সাথী নিজের ব্যাপারে মুহাসাবা বা আমলের হিসাব নিকাস করে।
৯. অত:পর তাহাজ্জুদ পড়ার নিয়্যতে রাত্রের কিছু অংশ বিশ্রাম নিয়ে থাকে।
১০. ফজর নামাজ সমান্তে একজন পুরাতন বা নতুন সাথী ছয় উসুলের উপর কথা বলে বয়ানের পর জামায়াতের ও এলাকার সাথী মিলে কিছু সময় মহল্লার মধ্যে গাশ্‌ত করে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএম/জানুয়ারি ৩১,১৪)


পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

ধর্ম এর সর্বশেষ খবর

ধর্ম - এর সব খবর