thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মে 24, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ২ জিলকদ  1445

নির্বাচন ঠেকাতে শেষ চেষ্টা থাই বিক্ষোভকারীদের

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০১ ১৮:৫০:৫৬
নির্বাচন ঠেকাতে শেষ চেষ্টা থাই বিক্ষোভকারীদের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : থাইল্যান্ডের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা রবিবার অনুষ্ঠিতব্য দেশটির সাধারণ নির্বাচন প্রতিরোধের শেষ চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিক্ষোভকারীরা নির্বাচন বাতিলের দাবি নিয়ে তৃতীয় এবং শেষদিনের মতো দেশটির রাজধানী ব্যাংককের চায়না টাউনে জড়ো হয়েছেন।

এতে রবিবারের সাধারণ নির্বাচনকালে দেশটিতে ক্ষমতাসীন সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের আশংকা করা হচ্ছে।

শনিবার কয়েক হাজার লোক নির্বাচন অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসীন সরকার ও ইংলাক সিনাওয়াত্রার অনড় অবস্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসে। নির্বাচন স্থগিত করতে দেশটির উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পরামর্শ সত্ত্বেও ইংলাক নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অনড় রয়েছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে ইংলাকের পুয়ে থাই পার্টির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের নেতৃত্বদানকারী সাবেক এমপি ও মন্ত্রী সুথেপ থগসুবান রবিবারের নির্বাচন প্রতিরোধে রাস্তায় শান্তিপূর্ণ অবরোধ আরোপ করার ঘোষণা দেন। তবে ভোটদানে ভোটারদের সরাসরি কোনো বাধা দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

এদিকে সুথেপের অনুসারিরা ব্যালট পেপার সরবরাহ প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের পোস্ট অফিসগুলো অবরোধ করে রেখেছে। সুথেপ তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বর থেকে চলমান রাজনৈতিক সংকটের সময় সংঘটিত সহিংসতায় দেশটিতে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন নিহত এবং ৫৭৭ জন আহত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ থাইল্যান্ড সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছে।

গত প্রায় এক দশক ধরে থাইল্যান্ডের সিনাওয়াত্রা পরিবারের সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে আন্দোলন চলে আসছিল। ২০০৬ সালে এক সরকারবিরোধী বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ইংলাকের ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এরপর থেকে দেশটির রাজনীতিতে বিভাজন আরো বেড়ে যায়।

২০০৮ সালে থাকসিনের বিরোধীরা ব্যাংকক বিমানবন্দরে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। অন্যদিকে, ২০১০ সালে তার সমর্থকরা দুই মাসব্যাপী বিক্ষোভ করে পুরো ব্যাংকক শহর অচল করে দেয়। সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ওই বিক্ষোভ শেষ হয়। দুই মাসের ওই অবস্থান বিক্ষোভে ৯০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।

থাকসিনের বোন ইংলাক ২০১১ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসার পর দেশটির রাজনীতিতে স্থিরতা ফিরে আসে। তবে ইংলাকের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া ইংলাকের বিরুদ্ধে ভাই থাকসিনের পুতুল হয়ে দেশ চালানোর অভিযোগও আনা হয়।
এরপর গত বছর একটি বিতর্কিত অ্যামনেস্টি বিল নিয়ে থাইল্যান্ডের এই চলমান বিক্ষোভের শুরু হয়। ওই অ্যামনেস্টি বিল অনুয়ায়ী দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে দেশে ফিরে দুর্নীতির মামলায় সাজা ভোগ করতে হবে না।

ওই বিলটি থাই সিনেটে পাস না হলেও প্রস্তাবিত বিলটি নিয়ে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা ইংলাকের পদত্যাগের দাবি জানান। চাপের মুখে ইংলাক সংসদ ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন। নির্বাচনের তারিখ ধার্য করা হয় ২ ফেব্রুয়ারি।

তারপরও বিক্ষোভকারীরা ইংলাকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। বিরোধীদের দাবি, ইংলাকের সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে রাষ্ট্রের দায়িত্ব একটি ’গণপরিষদের’ হাতে তুলে দিতে হবে। ওই পরিষদ নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে দুর্নীতিবিরোধী সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।

সিনাওয়াত্রা পরিবারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে দেশটির রাজধানী ব্যাংককের অভিজাত শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণী, দক্ষিণাঞ্চলীয় জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ এবং থাই রাজপরিবার।

অন্যদিকে সিনাওয়াত্রা পরিবারের থাকসিন ও ইংলাকের সমর্থকরা মূলত গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও দেশটির উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা। এ কারণে এ আন্দোলনকে শহুরে অভিজাত ও দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর লড়াই হিসেবেও ব্যাখ্যা করে থাকেন অনেক বিশ্লেষক। সূত্র : আলজাজিরা।

(দ্য রিপোর্ট/এমএটি/জেএম/এনআই/ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর