thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১,  ১৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

হাসান আজিজুল হক

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০২ ০০:০২:৩৫
হাসান আজিজুল হক

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : প্রখ্যাত ছোট গল্পকার এবং কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সাহিত্যে তার অগ্রগণ্য ভূমিকা রয়েছে।

মোহাম্মদ দোয়া বখশ ও জোহরা খাতুন দম্পতির ছেলে হাসান আজিজুল হক ১৯৫৪ সালে যবগ্রাম মহারাণী কাশীশ্বরী উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫৬ সালে খুলনা দৌলতপুরের ব্রজলাল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হন। ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে দর্শনশাস্ত্রে‌‌ সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯৬০ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে পিএইচডি অধ্যয়নের জন্য অস্ট্রেলিয়া যান। কিন্তু বিদেশের পরিবেশ ভালো না লাগায় তিনি অধ্যয়ন শেষ না করেই দেশে ফিরে আসেন।

১৯৬০ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত তিনি রাজশাহী সিটি কলেজ, সিরাজগঞ্জ কলেজ, খুলনা গার্লস কলেজ এবং দৌলতপুর ব্রজলাল কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন তিনি। ২০০৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদের জন্য মনোনীত হন।

রাজশাহী কলেজে পড়ার সময় কলেজের উদ্যমী তরুণ মিসবাহুল আজীমের সম্পাদনায় প্রকাশিত ভাঁজপত্র 'চারপাতা'য় তার প্রথম লেখা ছাপা হয়, লেখাটির বিষয় ছিল রাজশাহীর আমের মাহাত্ম্য। খুলনায় এসে যুক্ত হন প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন 'সন্দীপন' এর সঙ্গে।

প্রথম গল্পগ্রন্থ 'সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য' প্রকাশিত হয় ১৯৬৪ সালে। ১৯৬০ সালে 'বৃত্তায়ন' নামের একটি উপন্যাস লিখলেও তিনি নিজেই এটির বড় সমালোচক। এ রচনা তিনি নিজেই উপন্যাস হিসেবে অস্বীকার করে থাকেন। তবে 'আগুনপাখি' নামে একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে।

প্রথম যৌবনেই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। রাজনীতি করার কারণেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিত হন।

হাসান আজিজুল হকের উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে- সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য (১৯৬৪), আত্মজা ও একটি করবী গাছ (১৯৬৭), জীবন ঘষে আগুন (১৯৭৩), নামহীন গোত্রহীন (১৯৭৫), পাতালে হাসপাতালে (১৯৮১), আমরা অপেক্ষা করছি (১৯৮৮), রোদে যাবো (১৯৯৫), মা মেয়ের সংসার (১৯৯৭), বিধবাদের কথা ও অন্যান্য গল্প (২০০৭), রাঢ়বঙ্গের গল্প (১৯৯১), নির্বাচিত গল্প (১৯৮৭) ও হাসান আজিজুল হকের শ্রেষ্ঠগল্প (১৯৯৫)।

উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- বৃত্তায়ন (১৯৯১), আগুনপাখি ও শিউলি (২০০৬)। নাটকের মধ্যে রয়েছে- চন্দর কোথায় (জর্জ শেহাদের নাটকের ভাষান্তর)। প্রবন্ধের মধ্যে রয়েছে- চালচিত্রের খুঁটিনাটি, একাত্তর : করতলে ছিন্নমাথা, অতলের আধি, সক্রেটিস ও বাচনিক আত্মজৈবনিক। আত্মজীবনীর মধ্যে রয়েছে- ফিরে যায় ফিরে আসি।

তিনি অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৭), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭০), একুশে পদক (১৯৯৯), বাংলাদেশ লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১) ও আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৩)।

১৯৫৮ সালে শামসুন্নাহারের সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির তিন মেয়ে ও এক ছেলে।

(দ্য রিপোর্ট/ডব্লিউএস/এমএআর/এএল/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

এই দিনে এর সর্বশেষ খবর

এই দিনে - এর সব খবর