thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

দায়িত্ব নিতে হবে সিনিয়রদের : মুশফিক

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০৩ ১৮:৩৩:৫৩
দায়িত্ব নিতে হবে সিনিয়রদের : মুশফিক

রবিউল ইসলাম, চট্টগ্রাম থেকে : চট্টগ্রামের আকাশ পরিষ্কার; রৌদ্রউজ্জ্বল। ঢাকার মতো কুয়াশাচ্ছন্ন নয়। রোদমাখানো শীতের সকালে ৯টায়ই সাগরিকায় উপস্থিত শ্রীলঙ্কানরা। প্রায় সোয়া ৩ ঘণ্টার কঠিন-কঠোর অনুশীলন। তাদের আনুষ্ঠানিক পালা শেষ হতে না হতেই ক্রিকেটের কফিনসহ মাঠে প্রবেশ করেছেন শামসুর-মুশফিকরা। বেজায় মন দিয়েছেন অনুশীলনে। অতি সর্তক দৃষ্টি চট্টগ্রাম টেস্টের ওপর; পাছে কোনো ভুল যেনো না হয়। টোটাল অনুশীল বলতে যা বুঝায় তাই সেরে নিয়েছেন মুশফিকরা। তারপর যথারীতি আনুষ্ঠানিক কথা-বার্তা। বলেছেন, চট্টগ্রাম টেস্ট নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা। বলেছেন সিনিয়রদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা। দিয়েছেন নানা প্রশ্নের উত্তর। কি কি তারই চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

প্রশ্ন : চট্টগ্রাম টেস্ট জিততে হবে বাংলাদেশকে; এ সমীকরণ মাথায় রেখে কি পরিকল্পনা বাংলাদেশের?

মুশফিক : আমরা যেভাবে শেষ টেস্ট ম্যাচটি খেলেছি; তাতে অনেক বড় পার্থক্য ছিল। ছিল বড় ব্যবধানে হার। গত দেড় বছরে আমরা যেভাবে ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলছিলাম; তার সঙ্গে বেমানান। একটা ম্যাচে বাজে গেম হতেই পারে। কিন্তু বাজে ম্যাচের তো একটা সীমাবদ্ধতা থাকে, তাও ছাড়িয়ে গেছে ঢাকা টেস্টে। চট্টগ্রামে আল্লাহর রহমতে দলের রেকর্ড অনেক ভালো। সেদিক থেকে আমারা আত্মবিশ্বাসী আছি। প্রথম টেস্টে যেটা করতে পারিনি; সে কাজটা এখানে করার সুযোগ আছে। হার-জয় পরের ব্যাপার। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলা। সেশন বাই সেশন খেলতে চাই। যদি ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি; তবে রেজাল্ট আমাদের পক্ষেও আসা স্বাভাবিক।

প্রশ্ন : এমন হারের পর ড্রেসিং রুমের পরিবেশটা কতটা পরিবর্তন করতে পেরেছেন?

মুশফিক: এটা খুব সহজ নয়। ক্রিকেট খেলার মধ্যে টেস্ট খুব কঠিন। বছরের শুরুতে এমন একটা বাজে হার সবাইকে একটু হতাশ করেছে। ঢাকা টেস্টে যে ভুলগুলো হয়েছে; সেখান থেকে খুব বেশি পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। আমাদের মানসিকতা কিছু পরিবর্তন দরকার। সেই সঙ্গে কিছু পরিকল্পনা যা ওরা করবে। আমরা যেনো তাদের ফাঁদে পা না দিই। যেভাবে আমাদের ব্যাটসম্যানররা শেষ একবছর রান করছে। যদি তারা আরো একটু দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারে; তবে খুব ভালো একটি টেস্ট হবে। বিশেষ করে আমার মতো যারা সিনিয়র রয়েছে; তামিম-সাকিব; তাদের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে।

প্রশ্ন : চট্টগ্রামের উইকেটে ব্যাটসম্যানদের কি ধরনের গেম প্ল্যান থাকবে ?

মুশফিক : অবশ্যই, ঢাকার উইকেটে তারা ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বের যে কোনো উইকেটেই সবাই পরিকল্পনা করে বোলিং করে। ব্লাক অব ল্যান্ড মুভম্যান্টে সবাই পরিকল্পনা করবে তাই সাধারণ নিয়ম। সেদিক থেকে বলব খুব যে খারাপ করেছে আমাদের ব্যাটস্যামনারা তা নয়। কিছু সিলি মিসটেক ছিল তাদের। কিভাবে ওভারকাম করা যায়; তা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। চট্টগ্রামের উইকেটে ঢাকার মতো এতো বাউন্স হবে না। এখানে লো বাউন্স হয়। তবে এখানে ডাক করাটা একটু কঠিন হতে পারে। সবসময় বল যে লাইন থেকে ওঠার কথা; নাও উঠতে পারে। যারা পুলশর্ট খেলতে পারে তারা অবশ্যই খেলবে। যারা খেলতে পারে না; তারা নিজেদের কন্ট্রোল করবে। এতটুকু ম্যাসেজ সবার কাছে আমার দেওয়া আছে। আশা করি আমরা যদি এটা করতে পারি দলের জন্যই খুব ভাল।

প্রশ্ন : আপনি বলেছিলেন বোলারদের ক্ষমতা আছে ২০ উইকেট নেওয়ার। ওই ফলের পরও কি আপনি তা মনে করছেন?

মুশফিক : আমার এখনো মনে হয় ২০ উইকেট নেওয়ার মতো আমাদের ক্ষমতা আছে। সেক্ষেত্রে আমাদের যে সুযোগ গুলো আসবে তা কাজে লাগাতে হবে। টেস্ট শুরু হওয়ার আগে বলেছিলাম আমাদের ফিল্ডিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওদের কিছু ক্রিকেটার আছে; যারা গ্রেট, তারা সুযোগ দেয় না। যে কয়েকটা সুযোগ দেবে তা কাজে লাগাতে হবে। চট্টগ্রামের উইকেটে কিন্তু গাজী-সাকিবদের ভালো রেকর্ড আছে। উইকেট এখানে একটু স্পিন সহায়ক হবে। স্পিনার এখানে সাহায্য পাবে। রাজ্জাক-রিয়াদ আছে আমাদের স্কোয়াড়ে হয়তো পরিবর্তন হতে পারে। সেদিক থেকে বলব আমাদের ক্ষমতা যা ছিল তা ফিরে আসবে। তা বাস্তবায়ন করব স্পিন সহায়ক এ উইকেটে।

প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কান ২ ক্রিকেটার চলে যেতে পারে; তাদের চলে যাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য শুভকর কিনা?

মুশফিক: ওদের ২ জন হয়তো চলে যাবে। এটার সুযোগ এমন কিছু না। শ্রীলঙ্কার যে রিপ্লেসম্যান্ট আছে; তারাও অনেক ভাল। ভাল মানের বোলার। আমরা আমাদের নিয়েই চিন্তা করছি। চট্টগ্রামে আমাদের রেকর্ড ভাল। আশা করি আমরা তার ধারাবাহিকতা রাখতে পারবো।

প্রশ্ন : ওপেনিং জুটির কোনো পরিবর্তন চট্টগ্রাম টেস্টে দেখা যাবে কিনা?

মুশফিক : দলে খুব বেশি পরিবর্তন আসবে না। যদি কোনো পরিবর্তন আসেও তা দলের সেরা কম্বিনেশনের কথা চিন্তা করেই আসবে। আমি মনে করি; যদি কেউ বাদ পড়ে খারাপ খেলার কারণে বাদ পড়বেন না। ভাল কম্বিনেশনের কথা মাথায় রেখে আমরা একটা দল সেট করার চিন্তা ভাবনা করছি।

প্রশ্ন : আমরা সবাই বলি চট্টগ্রাম লাকি গ্রাউন্ড; আপনারা কতটা অনুপ্রাণিত?

মুশফিক : শুধু গ্রাউন্ড ভাল হলেই আপনি জিতে যাবেন; তা বলা যাবে না। এটা অবশ্যই কাজ করে ‘ব্যাক অব মাইন্ডে।’ আপনি যতই ভালো খেলুন না কেনো, মানসিকভাবে যদি আপনি পজেটিভ না থাকেন ফল আপনার পক্ষে আসবে না। গাজী হয়তো চিন্তা করছে গত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট পেয়েছে। তাতে সে অনুপ্রেরণা মেনে ভাল কিছু করার চেষ্টা করবে। এগুলো ছোট ছোট ব্যাপার; কিন্তু বড় কিছুতে সাহায্য করে। এখানে ডিফারেন্ট উইকেট। আমরাও সেদিক থেকে প্রস্তুত আছি। ব্যাটসম্যান যারা আছি আমরা পুরো টেস্ট টা কন্ট্রোল করতে চাই। আমাদের জন্য এটা লাকি গ্রাউন্ড। আমার জন্যও বেশ লাকি। এখানে আমার ৪৫ এভারেজ আছে। অবশ্যই চেষ্টা থাকবে যেনো ফারফর্ম করতে পারি। আমার পারফর্ম করাটা আরো জরুরি। আমাদের দলে যে কয়েকজন সিনিয়ার আছে; তার মধ্যে আমি একজন। সুযোগ যদি আসে সে সুযোগের সদ্বব্যবহার করব ইনশাল্লাহ।

প্রশ্ন : সোহাগ গাজী টেস্টে ধারাবাহিকতা দেখাতে ঠিক পারছেন না? বিষয়টি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

মুশফিক : সোহাগ গাজী এখনোও অনেক তরুণ। টেস্ট ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের সাফল্য পাওয়টা খুব কঠিন। এর মাঝেও সোহাগ অনেক অর্জন করেছে। ওর অভিজ্ঞতাও কম। সোহাগ যে মানের খেলোয়াড়; খুব তাড়াতাড়িই নিজেকে প্রমাণ করবে। আশা করছি চট্টগ্রাম টেস্টে তা প্রমাণ করবেও আবার। বাংলাদেশকে যেনো কিছু দিতে পারি সেই চেষ্টাই থাকবে গাজীর।

(দ্য রিপোর্ট/আরআই/এএস/সিজি/ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

খেলা এর সর্বশেষ খবর

খেলা - এর সব খবর