thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

রাবিতে বেপরোয়া নিরাপত্তা বাহিনী!

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০৫ ০১:৩০:৪৮
রাবিতে বেপরোয়া নিরাপত্তা বাহিনী!

রাবি সংবাদদাতা : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা একের পর এক পুলিশের বেপরোয়া আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নায্য দাবিতে আন্দোলনে নামলেই তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ।

তবে ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যে অথবা শিবির-ছাত্রলীগের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এ বাহিনী।

প্রশাসন বলছে, ‘ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে দেওয়া হয়েছে। এতে তাদের কিছু করার নেই।’ বারবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি ও হামলার ঘটনার কোনো বিচার করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে ক্যাম্পাসে পুলিশ আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ধিত ফি প্রত্যাহার ও সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর রবিবার নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। রবিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে সমাবেশ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের সমাবেশ লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি চালায়। এ সময় পুলিশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি না ছুড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমাবেশ লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।

এর আগে ২৯ নভেম্বর অটোরিকশার ধাক্কায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী সাবরিনা জাহান নিহতের প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ ছয় শিক্ষার্থী আহত হন। পরে পুলিশের গুলির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

২২ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শিবির-ছাত্রলীগের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ক্যাম্পাস ত্যাগ করে শিবির। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ নিতান্ত সন্দেহের ভিত্তিতে কলাভবনের বিভিন্ন তলায় দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ২০-২২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও গুলি ছোড়ে। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ আরও কয়েক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ছাড়াও এর আগে বিভিন্ন সময় পুলিশি হামলা ও গুলির শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. তারিকুল হাসান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমি যতদূর জেনেছি, শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে গোলযোগ করেছিল। তখন পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। এ বিষয়ে এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।’

২৯ নভেম্বরের ঘটনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর ক্যাম্পাসের বাইরের রাস্তায় গুলি করেছিল। এ বিষয়টি আমাদের মধ্যে পড়ে না। হয়ত শিক্ষার্থীরা রাস্তায় যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা করেছিল তাই পুলিশ গুলি করেছে।’ এই বলে তিনি ফোন রেখে দেন।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুন নূর দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ক্যাম্পাসে মোতায়ন করে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কথামতো কাজ করি। রবিবারের ঘটনায় পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে গুলি চালিয়েছিল।’২৯ নভেম্বরের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তখন এ থানায় ছিলাম না।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএএ/এএস/এসবি/এএল/ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

শিক্ষা এর সর্বশেষ খবর

শিক্ষা - এর সব খবর