thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

অসুস্থ রাজনীতির থাবায় স্বপ্নের মৃত্যু

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০৬ ০৩:৪৬:৪৬
অসুস্থ রাজনীতির থাবায় স্বপ্নের মৃত্যু

জাহিদ হাসান, দ্য রিপোর্ট : গ্রাম থেকে আসা ছাত্ররা হাজারও স্বপ্ন নিয়ে পা রাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায়। ভর্তির সুযোগ পেয়ে হলে উঠে অনেকে। স্বপ্ন দেখে, পড়াশোনা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। কিন্তু এখানে এসে অনেকটা বাধ্য হয়ে রাজনীতির ছত্রছায়ায় নেতাদের প্রটোকল হিসেবে ব্যবহৃত হতে হবে- তা জানা ছিল না তাদের। আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করতে হবে এমনটাও ভাবেনি কেউ। এমন অসুস্থ রাজনীতির শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে দিন কাটাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, ২৯ জানুয়ারি দিবাগত রাতে শাহবাগের পিকক বারে ছাত্রলীগ বারকর্মীদের সংঘর্ষে ছাত্রলীগের প্রটোকল দিতে গিয়ে আহত হয় প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র রবিউল হাসান সরকার মোনেম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাসিরুদ্দীন হুমায়ূন, আরবি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহজাহান সুলতান, সঙ্গীত বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী তাহসান আহমেদ রাসেল, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী কাওসার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাবির মেডিকেল সেন্টারের বেডে শুয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন আহত শিক্ষার্থীরা। চারজনের মাথায় ব্যান্ডেজ, একজনের পায়ে প্লাস্টার। এমন অবস্থা হওয়া সত্ত্বেও তারা যাদের ছত্রছায়ায় রাজনীতি করছেন সেই ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ দেখতে বা কোনো প্রকার সাহায্য করতে আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন তারা। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও তাদের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মাথায় ও পায়ে গুরুতর আঘাত পাওয়া রবিউল হাসান সরকার মোনেম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় আমি মৃত্যুর কাছকাছি চলে গিয়েছিলাম। এখানে খুবই কষ্টে আছি। যাদের জন্য এত কষ্ট করলাম, নিজের পা ভেঙ্গে ফেললাম, আজ তাদের কাছ থেকে কোনো সহানুভূতি পাচ্ছি না।’

নাসিরুদ্দীন হুমায়ূন বলেন, ‘শাহবাগ পিকক বারের কর্মচারীরা সুপরিকল্পিতভাবে অতর্কিত হামলা করেছিল। সেখানে আমরা নিরস্ত্র অবস্থায় গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের স্ট্যাম্প, হকিস্টিক, কাঁচের বোতল, বেসবলের ব্যাট দিয়ে আঘাত করেছে।’

শাহজাহান সুলতান বলেন, ‘আমরা ছাত্রলীগের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক আসবেন। কিন্তু তারা দেখতে আসেননি। আমরা তো বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ ছাত্র, তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।’

এদিকে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাদের কোনো সহযোগিতা করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান মোল্লা। তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আসলে ওরা ছাত্রলীগের কর্মী নয়। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের কোনো প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা করা হবে না।’

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ জানান, তারা ছাত্রলীগের কর্মী নন। তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রলীগ থেকে তাদের কোনো প্রকার সাহায্য করা হবে না।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ আলী জানান, ঘটনাটি বিব্রতকর স্থানে ঘটেছে। তারপরও তারা আমাদের ছাত্র। আমরা শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/এনডিএস/এসকে/এএল/ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

শিক্ষা এর সর্বশেষ খবর

শিক্ষা - এর সব খবর