thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৫ জমাদিউল আউয়াল 1446

হাব’র হজ প্যাকেজ ঘোষণা ১৬ মার্চ

ন্যূনতম ৫০ জনের কোটা রেখে হজ চুক্তির আহ্বান

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ১৩ ২০:৫৫:২৪
ন্যূনতম ৫০ জনের কোটা রেখে হজ চুক্তির আহ্বান

কাওসার আজম, দ্য রিপোর্ট : হজ এজেন্সিগুলোর ন্যূনতম ৫০ জন হজযাত্রী পাঠানোর কোটা রেখে এ বছরের হজ চুক্তি করতে সৌদি সরকার ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।

এর অতিরিক্ত কোটা চাপিয়ে দিলে এ খাতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার। আগামী ১৬ মার্চ হাব’র পক্ষ থেকে বেসরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে বলেও দ্য রিপোর্টকে নিশ্চিত করেন তিনি।

ইব্রাহিম বাহার বলেন, ‘ন্যূনতম ৫০ জন এবং সর্বোচ্চ ৪০০ জন হাজিকে হজে পাঠানোর বিধান রেখে হজ এজেন্সিগুলোকে লাইসেন্স দিয়েছে সরকার। বর্তমানে হাবের সদস্যভুক্ত প্রায় ১৩ শ’ এজেন্সি রয়েছে। কিন্তু গত বছর সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে হঠাৎ করেই একটি এজেন্সিকে ন্যূনতম ১৫০ জন হাজিকে হজে পাঠাতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। এতে সমস্যায় পড়তে হয় সরকার ও এজেন্সিগুলোকে। কারণ এ শর্তপূরণ অধিকাংশ এজেন্সির পক্ষেই সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর সৌদি সরকার ন্যূনতম ১৫০ জনের যে শর্ত জুড়ে দিয়েছিল পরে আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে তা প্রত্যাহার করে নেয়। এবারও যেন ন্যূনতম ৫০ জন হাজিকে একটি এজেন্সি হজে পাঠাতে পারে সে জন্য হাব’র পক্ষ থেকে সরাসরি সৌদির ধর্ম মন্ত্রণালয় উজরাতুল হজকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, আমাদের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও সৌদি সরকারকে এ ব্যাপারে অনুরোধ করা হবে।’

হাব সভাপতি বলেন, ‘যদি ১৫০ জন হাজী পাঠানোর শর্ত দেওয়া হয় তাহলে নতুন এজেন্সিগুলোর পক্ষে এ শর্ত পূরণ করা সম্ভব হবে না। এতে এ সেক্টরে বিশঙ্খলা দেখা দিতে পারে। ১৬ ফেব্রুয়ারি নতুন হজ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। আশা করছি, চুক্তিতে আমাদের দাবি প্রতিফলিত হবে।’

এ ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (হজ) মো. জাহাঙ্গীর আলম দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘মাননীয় ধর্মমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল কাল (শুক্রবার) সৌদি আরবে যাচ্ছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি সৌদির ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।’

চুক্তিতে এজেন্সিগুলোকে ন্যূনতম ১৫০ জন হাজী হজে পাঠানোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সৌদি সরকার এ শর্ত গত বছরই (২০১৩) দিয়েছিল। পরে আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। আলোচনার ভিত্তিতে হজ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। তবে এজেন্সিগুলোকে যাতে ন্যূনতম ১৫০ জন হাজী পাঠানোর শর্ত জুড়ে দেওয়া না হয় এ জন্য আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা থাকবে।’

হাব সভাপতি ইব্রাহিম বাহার বলেন, ‘ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের নেতৃত্বে ৫ সদেস্যর প্রতিনিধি দল ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি সৌদি আরবে যাচ্ছেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি সৌদি সরকারের সঙ্গে হজ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। সৌদি আরবে হাজিদের পরিবহন খরচ, থাকা, খাওয়া ও কোরবানির ব্যয় নির্ধারণ করা হবে। ২০ ফেব্রুয়ারির পর মন্ত্রী দেশে ফিরবেন। আগামী ২৩-২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সিভিল এভিয়েশন বা বেসরকারি বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়কে হজ যাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করতে অনুরোধ জানানো হবে। এরপর আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে। এটি করতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ চলে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর হাব’র পক্ষ থেকে আগামী ১৬ মার্চ বেসরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। ওই দিন বিকেল ৪টায় রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।’

বেসরকারি হজ প্যাকেজ কী ধরনের হবে জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, ‘এটি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। তবে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে হাবের প্যাকেজ মূল্য সমান বা অধিক হবে।’

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের হজযাত্রীর টার্গেট নির্ধারণ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন কর্মকর্তারা। গত বছর (২০১৩) টার্গেটের চেয়ে আশঙ্কাজনক হারে হাজী সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবার টার্গেট নির্ধারণ করতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন তারা। গত বছর এক লাখ ২৮ হাজার হজযাত্রী পাঠানোর টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সর্বশেষ হাজী হয়েছে ৮৭ হাজারের কিছু বেশি। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার হজ করতে না পারার শর্তসহ নানা কারণে হজযাত্রী কমে যায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান এখনও না হওয়ায় এবং হজের সময় দেশে কোন ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করে তা পরিষ্কার না থাকায় কর্মকর্তারা টার্গেট নির্ধারণ করা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন।’

তবে মসজিদুল হারামের সম্প্রসারণ কাজের কারণে ২০ ভাগ হজযাত্রী কমানোর সিদ্ধান্ত এ বছরও বহাল থাকায় এমনিতেই প্রাপ্য কোটার চেয়ে কিছুটা কম টার্গেট নির্ধারণ হবে। বাংলাদেশের প্রাপ্ত কোটা এক লাখ ৩০ হাজার বলে জানা গেছে। সে হিসাবে এ বছরের টার্গেট শেষ পর্যন্ত এক লাখ থেকে এক লাখ ১০ হাজার হতে পারে।

এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনায় রেখেই টার্গেট নির্ধারণ করা হবে।’

(দ্য রিপোর্ট/কেএ/জেএম/সা/ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর