সৈয়দ মুজতবা আলীর গদ্যে রম্যরস ও ভাবের সঞ্চার

মিরাজ মোহাইমেন
‘বই কিনে কেউ কখনও দেউলিয়া হয় না’
‘আমার চাকরের নাম কাট্টু, কেননা সে পকেট কাটে, মাছের মাথা কাটে, আর প্রয়োজন হলে মনিবের মাথা কাটে’
‘যে ডাক্তার যত বড় তার হাতের লেখা তত খারাপ’
-এই কথাগুলোর মালিক আর কেউ নন, তিনি আমাদের রম্যসাহিত্যের দিকপাল সৈয়দ মুজতবা আলী। তার লেখার বাচনিক তৎপরতা পাঠককে এক আলাদাভাবের জগতে নিয়ে যায়। তিনি তার লেখায় শুধু হাসান না, মানুষকে ভাবান। গদ্যের সত্যিই তিনি এক দারুণ ওঝা। কীভাবে খেলতে হয় গদ্য নিয়ে, তা তিনি দেখিয়েছেন তুমুল মুন্সিয়ানায়। এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে বিপুল জ্ঞানরাশির কারণে।
তিনি তার গদ্যে যে রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন তা অনায়াসে সাধ্য নয়। শিল্প বা সাহিত্যের ইতিহাস মূলত তার আঙ্গিকগত নিরীক্ষারই ইতিহাস। এ সত্য কথা যথার্থ আলাদাভাবে প্রতিপন্ন করেছেন সৈয়দ মুজতবা আলী। এ কারণে সমালোচকরা বলতে বাধ্য হয়েছেন, বাংলা গদ্যের প্যাটার্ন তছনছ করে দিয়েছেন তিনি। সত্যি বলতে কি বাংলা ভাষার সব প্রচলিত বাক্য বিন্যাসকে তছনছ করে, যে অনবদ্য সাহিত্য সম্ভার সৃষ্টি করেছেন মুজতবা আলী, তার তুলনা আজও অমিল! আরবি, ফারসি, সংস্কৃতির ফোড়ন দেওয়া এমন উমদা বাংলা আর কেউ লিখেছেন বলে আমাদের জানা নেই। তাঁর ভাষা সাহিত্য নিয়ে যে গভীর আলোচনা প্রয়োজন ছিল, সেটা হয়নি।
তাঁর গল্পের পাঠক সমঝে নেবেন, বিশেষত 'রসগোল্লা' পড়ার তৌফিকওয়ালারা, অন্য যাঁদের রম্য লেখার কথা মনে হয়, শুরুতেই তাঁদের মনে পড়বে সৈয়দ মুজতবা আলীর কথা। বিশেষ করে এই বাংলায়। যদিও বঙ্কিমচন্দ্র বা প্রমথ চৌধুরী তত দিনে বাংলা সাহিত্যে রম্য রচনাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু ‘রম্য সাহিত্য’ নতুন বৈশিষ্ট্য পেয়েছে মুজতবা আলীর হাতে। রম্য লেখক হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত সৈয়দ মুজতবা আলী। যদিও সাহিত্যের অন্যান্য শাখায়ও তাঁর প্রভাব বেশ বলিষ্ঠ। তিনি একাধারে একজন লেখক, শিক্ষক, ভাষাবিদ, সংগঠক- সর্বোপরি একজন সফল মানুষ।
যারা রম্যরচনা লেখেন, তাঁদের একটা গুণ থাকা দরকার। নিজেকে নিয়ে ঠাট্টা করার ক্ষমতা! যেটি অনেকেরই থাকে না। মুজতবা আলীর সেই গুণটি ছিল। কেননা ৭টা ভাষা ছেঁচে নানা তাকলীফের বিনিময়ে তিনি যে জ্ঞান আহরণ করেছিলেন, তা হাসিচ্ছলে পাঠকদের অনায়াসে উপহার দিয়ে বহুত ফায়দা হাসিল করিয়েছেন। তাঁকে একবার এক জার্মান পণ্ডিত জিজ্ঞেস করেছিলেন, শেক্সপীয়রের কোন লেখাটা আপনার ভালো লাগে? ঝটিকা উত্তর দিয়েছিলেন, হ্যামলেট!তারপর একটু চুপ করে থেকে বলেছিলেন, ঐ একটা বই-ই পড়েছি কিনা!
ঢাকার কুট্টি সমাজকে সাহিত্যে এনেছিলেন- আমাদের এই আলীই। কুট্টিদের রসিকতা প্রায় কিংবদন্তিতুল্য। আর সেটা মুজতবা আলী এমন উচ্চাঙ্গে নিয়ে গেছেন যে, কহতব্য নয়! হাজির জবাব বা Repartee এদের সহজাত ক্ষমতার মধ্যেই পড়ত। ‘ঘোড়ায় হাসব’, ‘আহা পড়সেন দেহি, ব্যথাও পাইসেন, কিন্তু লামসেন খুব তাড়াতাড়ী’, ‘ছাত দিয়া পানি পড়ব নাকি শরবত পড়ব?’
এই জাতীয় হাজির জবাব, মুজতবা সাহেব না থাকলে জানারই জো ছিল না, কি অফুরন্ত রসিকতা বুদবুদিয়ে উঠিয়ে দেয় মনের মন্দিরে। প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সৈয়দ মুজতবা আলীর রচনাবলীর (৩য় খণ্ড) ভূমিকাতে লিখেছেন— “আমাদের ছেলেবেলা থেকেই এ রকম ধারণা ছিল যে, গুরু-চণ্ডালী মেশামেশি হলে সেটা একটা খুব দোষের ব্যাপার। ভাষাকে শুদ্ধ রাখার জন্য বঙ্কিমের আমল থেকেই এ রকম একটা শমন জারি হয়েছিল। আসলে কোনটা যে গুরু ভাষা আর কোনটা যে চণ্ডালী ভাষা সে সম্পর্কে স্পষ্ট আলাদা কোনো সীমারেখা কেউ টানতে পারেনি এ পর্যন্ত।
এককালে সাধু ক্রিয়াপদ এবং চলতি ক্রিয়াপদের একটা ব্যবধান ছিল। এখন সাধু ক্রিয়াপদ প্রায় লুপ্তই বলা যায়- অন্তত সাহিত্যে। আবার রবীন্দ্রনাথ যখন তাঁর অত্যন্ত পরিশীলিত নায়ক নায়িকার মুখে- করিনে, পারিনে, যাইনে, কিংবা বললেম, করলেম, গেলেম... এই রকম ক্রিয়াপদ ব্যবহার করেছেন, তখন আমরা খেয়াল করিনি, ওগুলো আসলে বীরভূমের গ্রাম্যভাষা থেকে নেওয়া। এখন আমরা জেনেছি, ভাষা বহতা নদীর মতো। যদি তার স্বাস্থ্য ভালো থাকে, তা হলে যেখান থেকে যাই-ই সংগ্রহ করুক, কিছুতেই তার অঙ্গে মলিনতার স্পর্শ লাগে না।
এই ব্যাপারটি আমাদের সবচেয়ে স্পষ্ট করে বুঝিয়েছেন সৈয়দ মুজতবা আলী। এই দিক থেকে তিনি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, রবীন্দ্রনাথ ও প্রমথ চৌধুরীর সার্থক উত্তরাধিকারী। সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাষাশিল্প সম্পর্কে গভীর আলোচনা হওয়া উচিত। আমার চেয়ে যোগ্যতর ব্যক্তিদের ওপর সে ভার রইল।
এক সময় ঠাট্টা করে বলা হতো, যে লেখা পড়লে কিছুই মানে বোঝা যায় না, তারই নাম আধুনিক কবিতা। সেই রকমই এক সময় এমনই অবস্থা দাঁড়িয়েছিল, যখন, যে লেখা পড়তেই ইচ্ছে করে না, তারই নাম ছিল প্রবন্ধ। সৈয়দ মুজতবা আলীই প্রবন্ধকে সেই অকাল মৃত্যুদশা থেকে বাঁচিয়েছেন। তিনি অন্তত একশোটি বিষয়বস্তু সম্পর্কে, অন্তত সাতটি ভাষা সেঁচে যে জ্ঞান আহরণ করেছিলেন, তা-ই বিতরণ করেছেন তাঁর রচনায়। এগুলো প্রবন্ধ ছাড়া আর কি? তাঁর অনেক বক্তব্য সম্পর্কে মতান্তর আছে, তাতে কি আসে যায়? কোন প্রাবন্ধিক অমোঘ বাক্য উচ্চারণ করতে পারেন? তাঁর রচনার পর থেকেই তথাকথিত প্রাবন্ধিকদের দুর্বোধ্য, কষ্টকল্পিত বাক্যের রচনা পাঠকরা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। যথার্থ পণ্ডিতেরাও এখন আস্তে আস্তে বুঝতে পারছেন, শুধু নিজের বিষয়ের ওপর দখল থাকাই বড় কথা নয়, সাবলীল ভাষায় তা প্রকাশ করতে না জানলে লেখক হওয়া যায় না।
বিচারপতির মতন একটা উঁচু জায়গায় বসে থাকবেন লেখক, আর সেখান থেকে পাঠকদের উদ্দেশে জ্ঞান বা উপদেশ দান করবেন, সাহিত্যের এই ভূমিকা আর নেই। সারা পৃথিবীতেই পাঠকরা আর সাহিত্যিককে গুরু হিসেবে দেখতে চায় না, বন্ধু হিসেবে চায়। …”
লেখার সময় আমরা ভুলে যাই, আমরা যা জানি, তা প্রতিদিনের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। আর সেই সত্যটাকে মানতে পারি না বলে, অনর্থক একটা ঝগড়া তৈরি হয় নিজের মধ্যে।
সৈয়দ মুজতবা আলী এক জায়গায় লিখেছিলেন- তিনি চাকরি পেলে লেখেন না! চাকরি না থাকলে লেখেন। এই চাকরি তিনি বারবার কেন খুইয়েছেন, এই নিয়ে একটা গল্পের কথা স্মরণ করা যেতে পারে। দরখাস্ত নামে একটা রচনায় তিনি লিখছেন, একবার ফ্রান্সে ঢোকবার ফর্মে লেখা ছিল- তোমার জীবিকা নির্বাহের উপায় কী?
উত্তরে লিখেছিলুম- কিছুদিন অন্তর অন্তর চাকরি রিজাইন দেওয়া!
তা হলে চলে কী করে?
তুমি রেজিগনেশনগুলো দেখছ সাহেব, আমি চাকরিগুলো দেখছি!
এটা তিনি লিখেছিলেন! আর এটা সত্যি ঘটনা!
একবার আলী, লিখলেন, “পেটের দায়ে লিখছি মশাই, পেটের দায়ে! ... খ্যাতিতে আমার লোভ নেই। যেটুকু হয়েছে, সেইটেই প্রাণ অতিষ্ঠ করে তুলেছে। নাহক্ লোকে চিঠি লিখে জানতে চায়, আমি বিয়ে করেছি কিনা, করে থাকলে সেটা প্রেমে পড়ে না কোল্ড ব্লাডেড, যে রকম কোল্ড ব্লাডেড খুন হয়- অর্থাৎ আত্মীয়- স্বজন ঠিক করে দিয়েছিলেন কিনা? -শবনমের সঙ্গে আবার দেখা হলো কিনা, “চাচা”টি কে, আমি আমার বৌকে ডরাই কিনা- ইত্যাদি ইত্যাদি। এবং কেউ কেউ আসেন আমাকে দেখতে। এখানকার বাঘ সিঙ্গি নন্দলাল, সুধীরঞ্জনকে দেখার পর আমার মতো খাটাশটাকেও এক নজর দেখে নিতে চান! কারণ কোলকাতার ফেরার ট্রেন সেই বিকেল পাঁচটায়; ইতোমধ্যে আর কি করা যায় এবং এসে রীতিমত হতাশ হন...!”
এই মনীষী ১৯০৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তখনকার সিলেট জেলার অন্তর্গত (বর্তমানে ভারতের আসামে) করীমগঞ্জ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৯ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেট সফরে এলে সৈয়দ মুজতবা আলী কবির বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করেন এবং তার ভক্ত হয়ে যান। সৈয়দ মুজতবা আলী শান্তিনিকেতনে পড়ালেখায় আগ্রহী ছিলেন এবং এ জন্য তিনি ১৯২১ সালে বিশ্বভারতীতে ভর্তি হন। শান্তিনিকেতনে পাঁচ বছর অধ্যয়নের পর ১৯২৬ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ওই বছরই তিনি বাংলায় লেটারসহ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। আলীগড়ে আইএ অধ্যয়নকালে তিনি আফগানিস্তানের শিক্ষা বিভাগে চাকরি নিয়ে কাবুল গমন করেন।
অতঃপর ১৯২৯ সালে তিনি উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য জার্মানীতে গমন করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের প্রিন্সিপাল হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪৪-৪৫ সালে সৈয়দ মুজতবা আলী আনন্দবাজার পত্রিকায় কিছু দিন সাংবাদিকতা করেন এবং দেশ পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখতেন। ১৯৪৮ সালে সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের আলোচনা সভায় পূর্ববঙ্গের রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি উর্দু ভাষার পক্ষের শক্তির হাতে নাজেহাল হয়েছিলেন। সৈয়দ মুজতবা আলী বগুড়া আজিজুল হক কলেজের প্রিন্সিপালের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে ভারতে চলে যান এবং কিছু দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।
এরপরে উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মালানা আবুল কালাম আজাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইন্ডিয়ান ‘কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স’-এর সচিব পদে নিযুক্ত হন। অতঃপর তিনি ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’-এর স্টেশন ডাইরেক্টর পদে কিছু দিন চাকরী করেন এবং সেই চাকরীতেও ইস্তফা দেন ১৯৫৬ সালে। এরপর তিনি বিশ্বভারতীতে কয়েক বছর অধ্যাপনা করেন। ১৯৭৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারিতে তিনি ঢাকার পিজি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।
সৈয়দ মুজতবা আলী পরিণত বয়সে সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই বাগদেবীর বরমাল্য জয় করে নেন অর্থাৎ 'দেশে বিদেশে' প্রকাশনার মধ্য দিয়েই তিনি বাংলা সাহিত্যাঙ্গণে তাঁর অক্ষ প্রতিষ্ঠা। মুজতবা আলীর মধ্যে রবীন্দ্রনাথ বিপুল সম্ভাবনার ইঙ্গিত পেয়েছিলেন এবং সম্ভবত তাঁর একাধিক অপ্রকাশিত কিংবা হস্তলিখিত পত্রিকায় প্রকাশিত রচনার প্রতি তার দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ মুজতবাকে সাহিত্য ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত দেখতে চেয়েছিলেন। শান্তিনিকেতনে পড়ার সময় সেখানের বিশ্বভারতী নামের হস্তলিখিত ম্যাগাজিনে মুজতবা আলী লিখতেন।
পরবর্তীকালে তিনি ‘সত্যপীর’, ‘ওমর খৈয়াম’, ‘টেকচাঁদ’, ‘প্রিয়দর্শী’ প্রভৃতি ছদ্মনামে বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখতেন। যেমন : দেশ, আনন্দবাজার, বসুমতী, সত্যযুগ, মোহাম্মদী প্রভৃতিতে। তাঁর বহু দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন ভ্রমণকাহিনী। এ ছাড়াও লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা। বিবিধ ভাষা থেকে শ্লোক ও রূপকের যথার্থ ব্যবহার, হাস্যরস সৃষ্টিতে পারদর্শিতা এবং এর মধ্য দিয়ে গভীর জীবনবোধ ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাঁকে বাংলা সাহিত্যে এক বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে।
তিনি বাঙ্গালী পাঠকের অবিশ্বাস্য ভালোবাসা পেয়েছিলেন। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের পরে তৎকালীন সময়ে তিনি সর্বাপেক্ষা উদ্বৃত লেখক(Most quoted) ।
এ কথা আমরা আগেই উদ্ধৃত করেছি, সৈয়দ মুজতবা আলী বুদ্ধিদীপ্ত হাস্যরসিক লেখক। তাঁর নিজের সম্পর্কে বলেছেন বড় লেখকরা ইনস্পায়ারড হয়ে লেখেন; অথচ তিনি লেখেন পেটের ধান্দায়। জীবনাভিজ্ঞ এ সচেতন লেখকের হাস্যরসিকতা ছলেও এ ধরনের ভাষ্য নিজের সম্পর্কে স্পষ্টতাই অভিব্যক্ত করে। স্বার্থের বশে বা শত্রুর ভয়ে কাপুরুষের মতো নিজের মতামত বদলানোর ‘ইনকনসিস্টেনসি’কে তিনি ‘পাপ’ এবং লোকলজ্জাকে ড্যাম-কেয়ার করে, প্রয়োজন হলে স্বার্থ ত্যাগ করে পূর্বপ্রদত্ত মতের ভুল স্বীকার করা ‘ইনকনসিস্টেনসি’কে তিনি ‘পুণ্য’ বলে অভিহিত করায় তার লেখকসত্তার অন্তর্দৃষ্টির প্রগাঢ় সততাই অভিব্যক্ত হয়েছে।
‘নেভা’র রাধা’ নামক গাল্পিক এ লেখাটির মধ্যে রুশ কবি তুর্গেনিভের ব্যক্তিজীবনের একটি সত্যনিষ্ঠ প্রেমের ঘটনা ছোটগল্পের সাবলীল ভঙ্গির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তুর্গেনিভ তার কৈশোরে এক মারাত্মক অসুখ থেকে সেরে ওঠার পর নেভা নদীর তীরে ডাক্তারের নির্দেশে অবকাশযাপনের জন্য গিয়েছিলেন। একটি সুবোধ-সুন্দরী জেলে মেয়েকে তাঁর ভালো লাগে; মেয়েটিও তুর্গেনিভকে প্রচণ্ডভাবে ভালোবেসেছিল। অনেকেই ইভানের কাছে অনেক কিছু চেয়েছে। কিন্তু সে মেয়েটি তার কাছে কিছু চায়নি; শুধু প্যারিস থেকে তুর্গেনিভ তার কাছে ফিরে আসুক— সেটিই চেয়েছে। অনেক পীড়াপীড়ির পর সে একটি সুগন্ধি সাবান তাকে আনতে বলেছে। কেন সে একটি সাধারণ সাবান তাঁকে আনতে বলল, তা জিজ্ঞেস করাতে মেয়েটি বলেছিল, তুর্গেনিভ যেহেতু মেয়েটির হাতে চুম্বন করে এবং জেলেকন্যা সে মেয়েটির হাতে মাছের আঁশটে গন্ধ থাকে, সে গন্ধ বিদূরণের জন্য সে তাকে সুগন্ধি সাবান আনতে বলেছে। অদৃষ্টের ফেরে তুর্গেনিভের আর নেভার তীরে মেয়েটির কাছে ফিরে আসা সম্ভব হয়নি বলে সারাজীবন তুর্গেনিভ সে কষ্ট ভুলতে পারেননি। প্রিয় পুরুষটি হস্তচুম্বন করে যাতে হাতে মাৎস্যগন্ধ না পেয়ে সুগন্ধি সাবানের গন্ধ পায়— মেয়েটির এ রূপ প্রেমসুরভিত অনুভূতি মুজতবার প্রচণ্ড ভালো লাগায় তাঁর প্রেমদৃষ্টির কোমল-মাধুর্যই আমরা প্রত্যক্ষ করি।
‘কই সে?’ মূলত জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনেকে নিয়ে রচিত একটি সাহিত্য সমালোচনামূলক প্রবন্ধ। ইহুদী বংশোদ্ভূত এ কবি সরল ও স্পষ্ট ভাষায় মানুষের হৃদয়বেদনার কথা এবং সাধারণ প্রাকৃত মানুষের হৃদয়ার্তির কথা প্রকাশ করেছেন। জার্মান ভাষা ও সাহিত্যের অর্ধস্ফুট অর্ধসফল ও অর্ধনৈরাশ্যপূর্ণ অস্পষ্টতা আচ্ছাদিত সাহিত্যভাবনাকে হাইনে বিদূরিত করে একটি স্বচ্ছ অথচ গভীর করুণ জীবনবোধ আমদানী করেছেন তাঁর কবিতায়।
অবশ অথর্ব শয্যাশায়ী অবস্থায় প্যারিসে অসহ্য যন্ত্রণাকাতর জীবনযাপন করা অবস্থায় হাইনে তাঁর মাকে জার্মানীতে জানাতে বলেছিলেন যে, প্যারিসে সে সুখেই আছে, প্যারিসের লোকেরা তাঁকে কোলে করে ঘুরে বেড়াত। অথচ হাইনে অসুস্থতার কারণে নিজে নড়াচড়া করতে না পারার কারণে তাঁর ঘরে যখন আগুন লেগেছিল, তখন তার দারোয়ান তাঁকে বাঁচানোর জন্যে কোলে করে অন্য জায়গায় দ্রুত সরিয়ে নিয়েছিল। অথচ হাইনে তাঁর মাকে শোনাতে চেয়েছেন প্যারিসে তিনি সকলের ক্রোড়ে আনন্দে আছে— তাঁর মা যাতে তাঁর শারীরিক মারাত্মক অথর্বতার কথা জেনে কষ্ট না পান— সে জন্যই হাইনে তাঁর মাকে চিঠি লিখে এ কথা জানাতে বলেছেন। পাশ্চাত্য সাহিত্যে মায়ের প্রতি এমন করুণ-গভীর ভালোবাসা খুবই বিরলদৃষ্ট।
মুজতবা বলেছেন, হাইনের হাসি-কান্নায় মেলানো লেখাগুলো তাঁর ভালো লাগে। আসলে জীবনের সংবেদনশীল করুণ-বেদনাময় ঘটনাপ্রবাহ মানবমনকে এক ধরনের আচ্ছন্নতায় আবৃত করে বলেই লেখকের কাছে এ বেদনাকরুণ অনুভূতি ভালো লাগে। এতে মুজতবার জীবনবোধের গভীরতারই প্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করি।
সুখ তো একটি আপেক্ষিক বিষয়। ‘সুখী হবার পন্থা’ রম্যপ্রবন্ধে মুজতবা ওমর খৈয়াম, চার্বাক, রবীন্দ্রনাথ, কালিদাস, হাইনে, চণ্ডীদাস, লালন, গ্যাটে প্রমুখ মনীষীর সুখ সম্পর্কিত আনন্দজনক অভিব্যক্তির কথা ক্ষণভাষণে তুলে এনেছেন। ঘাড়ের মধ্যে বোঝা থাকলে, তা সরে গেলে যেমন সুখ লাগে; শীতের রাতের কাঁথা ও লেপ হঠাৎ করে সরে যাওয়ার পর আবার টেনে শরীরে দিলে এক ধরনের সুখ লাগে— এ প্রসঙ্গগুলো লেখক উল্লেখ করেছেন। খৈয়ামের পাশে বসে সঙ্গীত পরিবেশন করলে সেই বিজনপ্রান্তরে তিনি স্বর্গসুখ লাভ করেন। হাতের কাছে সুখ রেখে লালন আবার তা খুঁজে বেরিয়েছেন দিল্লী শহরে।
চার্বাক তো বলেছেন, ঋণ করে হলেও ঘি খাও; কারণ দেহ তো ভস্মীভূত হবে। মহাকবি গ্যাটে বলেছেন, সুখ হাতের কাছেই থাকে; তবে তাকে ধরার কৌশলটি শিখে নেওয়ার কথা তিনি বলেছেন। সুখের জন্য যে ঘর বাঁধা হল; চণ্ডীদাসের সে ঘর অনলে দগ্ধ হয়ে যায়। আসলে সুখ ও দুঃখ কিন্তু পরস্পর জড়াজড়ি করে থাকে। জীবনে দুঃখ এলেও সাহস ও প্রজ্ঞা দিয়ে সে দুঃখকে জয় করে মানসিক তৃপ্তির সুখ সন্ধান মানুষের জন্য আবশ্যিক।
সৈয়দ মুজতবা আলী বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ হাস্যরস নির্মাতা ও হাস্যরসের গল্পকার। গল্প বলার পরিবেশের ওপর নির্ভর করে চমৎকার মনোযোগী ও পরিণামমুখী কাহিনীর অনর্গলতা ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে গল্প বলার জন্য গল্পের আর্টকে অর্জন করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। গল্প বলার অনিবার্য কৌশল মুজতবা আয়ত্ত করেছেন বলেই তিনি এমন সুরসিক রম্যকার। শৈল্পিক সুষমায় শিল্পমণ্ডিত করে নান্দনিক নির্মাণ করা কঠিনতর কর্ম। ‘নিরলঙ্কার’ শীর্ষক তথ্যসমৃদ্ধ রম্য প্রবন্ধটির মধ্যে লেখক দেখিয়েছেন, কল্পনা-প্রবণতা নান্দনিক ঐশ্বর্য এবং প্রকাশ-শৈল্পীর শৈল্পিক নিপুণতা যিনি অর্জন করতে পারেন— তিনিই কবি-শিল্পী। মধুময়কে আরও মধুরতর, মধুরতম করে তোলাই শিল্পীর কাজ বলে মন্তব্য করায় মুজতবার শিল্পরসবোধ এখানে উচ্চকিত হয়েছে। একজন গদ্যলেখকের বলা এবং কবির প্রকাশভঙ্গির শিল্প-নৈপুণ্যের পার্থক্যকে লেখকের নিম্নোক্ত ভাষ্যে আমরা পাই।
‘আমি বললুম : শুক্লপক্ষের পঞ্চদশী রাত্রে পথ দিয়া যাইবার সময় যখন চন্দ্রোদয় হইয়াছে, তখন তোমার সঙ্গে সাক্ষাৎ হইয়াছিল; তাহাকে কি শুভলগ্ন বলিব, জানি না।’ লেখক অতঃপর কবির-ভাষ্য উল্লেখ করেন: ‘যেতে যেতে পথে পূর্ণিমা রাতে চাঁদ উঠেছিল গগনে। দেখা হয়েছিল তোমাতে আমাতে কী জানি কী মহা লগনে।’ কবি-শিল্পীর মধুময় নান্দনিকবোধের প্রকাশ-শৈল্পীর অনিবার্য সুন্দরতার কথাই লেখকের উপর্যুক্ত প্রবন্ধ-রসভাষ্যে অভিব্যক্ত হয়েছে।
জীবনমৃত্যুর গভীরতর রহস্য এবং জীবনের প্রচণ্ড শোকাবহতার ঝঞ্ঝায় জীবন যখন তছনছ হয়ে যায়; তখন ধর্ম, স্রষ্টা ও বিজ্ঞানের প্রতি বিশ্বাসী মানুষের যে নির্ভরশীলতা কাজ করে; সে বিষয়টি ‘ঢেউ ওঠে পড়ে কাঁদার সম্মুখে ঘন আঁধার’ শীর্ষক প্রবন্ধ ও গল্পমিশ্রিত রসরচনায় লেখক স্পষ্ট করে তুলেছেন। উচ্চাকাঙ্ক্ষী এক ভালো ছাত্র ইনস্পেক্টরের প্রশ্নের জবাব জেনেও তোতলামীর কারণে উত্তর দিতে পারেনি। সেই অপমানে একমাত্র বিধবা মায়ের কষ্টের কথা না ভেবে আত্মহত্যা করার ঘটনা এ রচনায় ব্যক্ত হয়েছে।
আরেক মধ্যবিত্ত নববিবাহিত হিন্দু সন্তান পার্টনারশিপে প্রেস দিয়ে উন্নতির সোপানে আরোহণ পর্বে পার্টনারের বিশ্বাসঘাতকতায় ব্যবসায় ফেল করে। এতে সে মারাত্মক মানসিক আহত হয়ে পাগল হয়ে যায়। গ্রাম থেকে তার বৃদ্ধা মাকে তার বাসায় এনে রাখার তার প্রচণ্ড ইচ্ছা ছিল। পাগল হয়ে যাওয়ার পর তার সবার সঙ্গে একমাত্র সংলাপ ছিল, ‘মাকে নিয়ে আসছি।’ এই করুণতম কাহিনীটি এ রচনায় স্থান দিয়ে লেখক মানুষের দুঃখ ও যন্ত্রণাবোধের অনিঃশেষ অনন্ততাকে মানবিক সংবেদনশীলতার সংহতিতে তার হৃদয়ানুভূতিতে ধারণ করেছেন।
সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘বই কেনা’ প্রবন্ধে বই পড়ার ও কেনার জন্য আনাতোল ফ্রাঁস, বারট্রান্ড রাসেল, ওমর খৈয়াম, মার্ক টোয়েন, আঁদ্রে জিদ প্রমুখ মনীষীর উদ্দীপনাকে বিবৃত করেছেন। অনেক গ্রন্থ পাঠ করলে মনের জগতে বিশাল জ্ঞানভুবন সৃষ্টি করা যায়। বাঙালীর প্রচুর জ্ঞানতৃষ্ণা থাকলেও সে বই কেনে না বলে লেখক আরব্য উপন্যাসের একটি গল্প বলেছেন তার এ প্রবন্ধে।
রাজা ও হেকিম দুজনেই প্রচুর বই পড়তেন, কিন্তু বই হস্তচ্যুত করতে চাইতেন না। রাজা হেকিমের বইটি বাগাতে না পেরে তাকে খুন করেন। হেকিমও মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন বলেই বইয়ের পাতায় পাতায় বিষ মাখিয়ে দিয়েছিলেন। রাজা বই পড়ার সময় আঙুল দিয়ে পাতা উল্টাতে উলটাতে সেই বিষ মুখে প্রবেশ করে রাজারও মৃত্যু ঘটায়। বইয়ের পৃষ্ঠার মধ্যে বিষমাখানো থাকার ঘটনা বাঙালী জানে বলে তারা বই কিনতে চায় না। এ হাস্যরসাত্মক গল্পের মাধ্যমে মুজতবা বাঙালীকে গ্রন্থোৎসাহী জাতি হিসেবেই দেখতে চেয়েছেন।
‘রসগোল্লা’ শীর্ষক রসগল্পে ইতালির এক কাস্টমস অফিসার বাঙালী ব্রাহ্মণ সন্তান ঝাণ্ডুদার মিষ্টান্নের প্যাকেট খুলতে বলায় এবং ঝাণ্ডুদা তার বন্ধুর মেয়ের জন্য তা লন্ডনে নিয়ে যাচ্ছে বলে খুলতে রাজী না হওয়ায় চুঙ্গিওয়ালা কোনো যুক্তি না মেনে তা খোলাতে বাধ্য করল। ঝাণ্ডুদা তাতে ক্ষেপে গিয়ে একটি রসগোল্লা চুঙ্গিওয়ালার নাকে-মুখে প্রবিষ্ট করিয়ে দিয়েছিল। ফরাসী উকীলের বড় কর্তা ভারতীয় রসগোল্লা খেয়ে তো আড়াই মিনিট চোখ বন্ধ করে রাখলেন সুস্বাদের বিহ্বলতায়। সে অফিসার চোখ বন্ধ অবস্থাতেই আরও রসগোল্লা চাচ্ছিল। কিন্তু রসগোল্লা এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে রসিকতা করে ইতালী কবি ফিলিকাজার একটি কবিতা পঙিক্তর প্যারোডির মাধ্যমে মুজতবা লিখেছেন— ‘রসের গোলক এত রস তুমি কেন ধরেছিলে হায়! ইতালীর দেশ ধর্ম ভুলিয়া লুটাইল তব পায়।’
মুজতবার উপর্যুক্ত প্যারোডি-ভাষ্যে তার রসিকতার উত্তুঙ্গতাই প্রকাশিত হয়েছে। সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর পাঠকদের হাসাতে ভালোবাসলেও তার অন্তর ছিল প্রচণ্ড সংবেদনশীল। জীবনের দুঃখ-যন্ত্রণা— সেটি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের হোক বা অন্যের জীবনের— তা তাঁকে প্রচণ্ডভাবে বিমর্ষ করত। মানব-মানবীর জন্য হৃদয়ের এ অন্তর্গত বেদনাবোধের সংহতি তাঁকে উন্নত ও মানবিক জীবনবোধে উন্নীত করেছে।
মুজতবা এভাবে তাঁর রস-রচনার মাধ্যমে তার পাঠককুলকে অপরাজেয় জীবনময়তার আশাবাণী শোনান। এ কথা আমরা খুব উচ্চকণ্ঠে বলতে পারি, সৈয়দ মুজতবা আলী কখনও গল্পে, কখনও প্রবন্ধে, কখনও কবিতায় বা সম্পাদককে লেখা চিঠিতে, অথবা কখনও গল্প-প্রবন্ধের মিশ্রিত আঙ্গিকে ও স্মৃতিচারণের প্রকৌশলে চমৎকার শৈল্পিক ও বুদ্ধিদীপ্ত হাস্যরস পরিবেশ করেছেন।
জীবনের গভীরতর ভেতর থেকে জীবনকে পর্যবেক্ষণের অন্তর্দৃষ্টি মুজতবার ছিল বলেই তাঁর পরিবেশিত হাস্যরসের মধ্যে পরিমিত জীবনময়তা ছিল। জীবনের বেদনাক্লিষ্ট এবং করুণতম অভিজ্ঞতাকে মুজতবা সংবেদনশীলতার প্রাজ্ঞতা ও দূরদর্শিতা দিয়ে দেখতে পেরেছেন বলেই বাংলা হাস্যরস সাহিত্যে তাঁর অবস্থান শাশ্বত।
লেখক : প্রাবন্ধিক ও আলোচক
তথ্য সূত্র :
১। নূরুর রহমান খান, সৈয়দ মুজতবা আলীর জীবন কথা
২। উইকিপিডিয়া
৩। ড. র হ মান হাবিব, সৈয়দ মুজতবা আলী : বুদ্ধিদীপ্ত জীবনরসিক
৪। ড. মাহফুজুর রহমান, নানা প্রসঙ্গ নানা ভাবনা।
পাঠকের মতামত:

- নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ৭ শতাধিক মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা
- ব্রিফকেসবিহীন বাজেট যেসব কারণে ব্যতিক্রম
- ধ্বংসপ্রাপ্ত পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে কার্যক্রম চলমান: অর্থ উপদেষ্টা
- জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার ও ডিসেম্বর-এপ্রিলে নির্বাচন চায় জামায়াত
- ঐকমত্যের মাধ্যমে জুলাই সনদ ঘোষণার অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার
- সারা দেশে ২৫২ বিচারককে একযোগে বদলি
- কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: টিআইবি
- বাজেটের টাকা আসবে কোথা থেকে, যাবে কোথায়
- একনজরে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট
- নির্বাচন ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার একটিও কারণ নেই: সালাহউদ্দিন আহমেদ
- বৃষ্টির পরেও ঢাকার বাতাস সংবেদনশীলদের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’
- ট্রেনে ফিরতি যাত্রা : আজ বিক্রি হবে ১২ জুনের টিকিট
- গাজায় হত্যাযজ্ঞ চলছেই, নিহত ছাড়িয়ে গেল ৫৪ হাজার ৪০০
- প্রস্তুত হাট, আসছে গরু-অপেক্ষা ক্রেতার
- ডিএসসিসি বোর্ডের মেয়াদ শেষ, ইশরাকের শপথে অনিশ্চয়তা
- ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ আজ
- মেজর সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল
- নতুন ৩ ডিপোজিট প্রডাক্ট এনেছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের এজিএম ১৪ আগস্ট
- সমন্বয় বাড়িয়ে আর্থিক বিবরণীর মানোন্নয়নে ৩ সংস্থাকে দিকনির্দেশনা
- গাজায় ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি, নিহত ৩১
- বাংলাদেশ দলকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বন্ধুত্বের বার্তা দিলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট
- ভূমিধসের শঙ্কা, লামায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ ঘোষণা
- উপদেষ্টা পরিষদ ছাত্রদের ভুল পথে পরিচালিত করছে : হাফিজ
- নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হলো : জামায়াত আমির
- হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলে যা বলল প্রসিকিউশন
- অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
- নির্বাচন আগেও হতে পারে, ৩০ জুনের পরে যাবে না: প্রেস সচিব
- দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বাধিক রেমিট্যান্স এলো মে মাসে
- যে শর্তে মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মতি দিল হামাস
- ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ৩.৭১ শতাংশ
- সিঙ্গাপুর ম্যাচ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ, বলছেন রহমত মিয়া
- শেখ হাসিনার বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে: প্রসিকিউটর
- জামায়াতকে নয়, ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে চাই: শফিকুর রহমান
- দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
- করিডোর ইস্যুতে সরকারের অবস্থান জানতে চাইল বিএনপি
- নির্বাচন নিয়ে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করা যাবে না: মির্জা আব্বাস
- বিএনপিকে যমুনায় ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
- এবারের বাজেটে নতুন কোনো চমক থাকছে না: দেবপ্রিয়
- আইসিসির হস্তক্ষেপের আশায় আছেন ফারুক
- নতুন কাউন্সিলর বুলবুল, অনুমোদন দিল বিসিবি
- ইসরাইলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে গাজায় যাচ্ছেন গ্রেটা থুনবার্গ
- ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশ
- জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ৬ সমঝোতা স্মারক সই
- দুর্বল হয়েছে গভীর নিম্নচাপ
- জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ফুলেল শ্রদ্ধা
- জিয়াউর রহমানের আজ ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী
- নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে: মির্জা আব্বাস
- দাম বেড়েছে সবজির, মুরগিতে স্বস্তি
- বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে: ড. আনিসুজ্জামান
- সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
- সিনহা হত্যা: হাইকোর্টের রায় ২ জুন
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা ও তেল আমদানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ
- উপকূলীয় ১৬ জেলায় ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
- ইশরাকের বিষয়ে আদালতের রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি
- ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব : তারেক রহমান
- "খুব শিগগিরই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত দেখতে পাব, এই হোক অঙ্গীকার"
- বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ড. আনিসুজ্জামানের বৈঠক আজ
- সচিবালয়ে সপ্তাহে দুই দিন দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
- ঢাকাসহ ৯ অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
- এই সরকার স্টারলিংক এনেছেন আরাকান আর্মির জন্য: মির্জা আব্বাস
- চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র
- আবারো বিসিবি সভাপতি বদলের জোর গুঞ্জন
- অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এশিয়ার দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান
- বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
- সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত
- ঢাকায় ঝুম বৃষ্টি, চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শঙ্কা
- দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করার আগে নিয়ন্ত্রণে নেবে সরকার: গভর্নর
- এবার ঢাবিতে মশাল মিছিলে উত্তেজনা, শিক্ষার্থীদের ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি
- গভীর রাতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঢাকা
- শিবির ছাত্ররাজনীতির পরিবেশকে ‘বিষাক্ত’ করে তুলেছে: উমামা ফাতেমা
- জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- নির্বাচনের রোডম্যাপ না পেয়ে ‘হতাশ’ বিএনপি
- পুতিন ‘আগুন’ নিয়ে খেলছেন: ট্রাম্প
- সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার, বিজিবি মোতায়েন
- গভীর রাতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঢাকা
- ঢাকায় ঝুম বৃষ্টি, চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শঙ্কা
- জিয়াউর রহমানের আজ ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী
- আপিল মঞ্জুর, জামায়াত নেতা আজহার খালাস
- সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার, বিজিবি মোতায়েন
- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা, বিকেলে সংবাদ সম্মেলন
- শিবির ছাত্ররাজনীতির পরিবেশকে ‘বিষাক্ত’ করে তুলেছে: উমামা ফাতেমা
- নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে: মির্জা আব্বাস
- জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
- এবার ঢাবিতে মশাল মিছিলে উত্তেজনা, শিক্ষার্থীদের ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি
- ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব : তারেক রহমান
- দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করার আগে নিয়ন্ত্রণে নেবে সরকার: গভর্নর
- রাতে জাপান যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
- এই সরকার স্টারলিংক এনেছেন আরাকান আর্মির জন্য: মির্জা আব্বাস
- ঈদযাত্রার শেষ দিনের টিকিট বিক্রি আজ
- ইসরাইলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে গাজায় যাচ্ছেন গ্রেটা থুনবার্গ
- সচিবালয়ে সপ্তাহে দুই দিন দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
- ঢাকাসহ ৯ অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
- সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত
- দুর্বল হয়েছে গভীর নিম্নচাপ
- চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র
- পুতিন ‘আগুন’ নিয়ে খেলছেন: ট্রাম্প
- ইশরাকের বিষয়ে আদালতের রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি
- ইশরাকের শপথ: সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় স্থানীয় সরকার বিভাগ
সাহিত্য এর সর্বশেষ খবর
সাহিত্য - এর সব খবর
