thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১,  ১৯ জমাদিউস সানি 1446

নিকোলাস কোপার্নিকাস

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯ ০১:৩৭:৩২
নিকোলাস কোপার্নিকাস

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকোলাস কোপার্নিকাস ১৪৭৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনিই প্রথম আধুনিক সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের মতবাদ প্রদান করেন। তার নাম অনুসারে প্রবর্তিত ‘কোপার্নিকাস রেভ্যুলেশন’ খুবই বিখ্যাত একটি টার্ম। যা যুগান্তকারী কোনো আবিষ্কার বুঝাতে অন্যান্য শাস্ত্রেও ব্যবহৃত হয়।

ল্যাতিন উচ্চারণে তার নাম হয় নিকোলাউস কোপের্নিকুস। তিনি তৎকালীন পোলীয় রাজ্যের তরুণ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ‘কোপের্নিকুস’ তার নিজের দেওয়া লাতিন নাম। তার প্রকৃত পোলীয় নাম ছিল মিকলাই কপের্নিক। তার বাবা তামা ব্যবসায়ী ছিলেন বলে পরিবারের নাম ছিল কপের্নিক বা ‘তামাওয়ালা’।

চার ভাইবোনের মাঝে কোপার্নিকাস ছিলেন সবার ছোট। তিনি জ্যোতির্বিদ্যা, গণিতশাস্ত্র ও আইনশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেন। গ্রিক ভাষাও জানতেন। তাই গ্রিক ভাষায় লেখা ধ্রুপদী জ্যোতির্বিদ্যার বই মূল ভাষাতেই পড়ার সুযোগ পান। পড়াশোনা শেষে বাল্টিক সাগরের ধারে এক গীর্জায় যাজকের পদ লাভ করেন। গীর্জাটি ছিল একটি পাহাড়ের উপর। এর কাছাকাছি একটি গম্বুজ থেকে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করতেন। তিনি লক্ষ্য করেন সূর্যকে কেন্দ্রে রেখে গ্রহগুলোর গতিপথ সহজে ব্যাখ্যা করা যায়। পৃথিবীকে গায়ের জোরে কেন্দ্রে বসালেই অযথা জটিলতা তৈরি হয়।

তৎকালীন পাদ্রীরা মানতেন পৃথিবীই সব কিছুর কেন্দ্র। অর্থাৎ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তন করছে সূর্য ও অন্যান্য গ্রহগুলো। দীর্ঘদিনের এই বিশ্বাস ততদিনে গ্রহণযোগ্যতাও পেয়েছিল সাধারণ মানুষদের মাঝে। কোপার্নিকাস তার পর্যবেক্ষণ নিয়ে লিখলেন বিখ্যাত বই ‘ডে রেভ্যুলেশনিবাস অরবিয়ম কোলেসটিয়ম’ বা ‘অন দ্য রেভ্যুলেশনস অব দ্য হেভেনলি স্ফিয়ারস’ বা ‘নভোবস্তুসমূহের পরিভ্রমণ সম্পর্ক’। বইটি লেখা শেষ করেন ১৫৩০ সালে। কিন্তু প্রকাশিত হয় ১৫৪৩ সালে- সে বছর তিনি মারা যান। বইটি প্রকাশের সাহস করতে পারেননি প্রথমে। পরে প্রকাশের পরপরই পাদ্রীদের রোষানলে পড়ে বইটি নিষিদ্ধ হয়ে যায় ২০০ বছরের জন্য।

তবে তার ধারণা সম্পূর্ণ ঠিক ছিল না। গ্রহগুলোর গতিপথ নিয়ে তার চিন্তা ভুল ছিল। কিন্তু তিনিই প্রথম সৌরজগতের গঠন সম্পর্কে ঠিক ধারণার খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন। তার দেখানো পথ ধরে আসেন টাইকো ব্রাহে, জোহান কেপলার, গ্যালিলিও গ্যালিলি, জিওর্দানো ব্রুনোর মতো বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তারা কোপার্নিকাসের তত্ত্বের ত্রুটি শুধরে সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের ধারণাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।

পরে যাজকের কাজ ছেড়ে এক সময় তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন এবং তরুণ শহরের ম্যাজিস্ট্রেট হন।

১৫৪৩ সালের ২৪ মে ফ্রমবর্কে মৃত্যুবরণ করেন। বলা হয়ে থাকে, মৃত্যুর সময় তার হাতে ‘ডে রেভ্যুলেশনিবাস’ এর একটি কপি দেওয়া হয়েছিল। এরপর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেন। তার সমাধি অনেক দিন ধরে রহস্যাবৃত ছিল। ২০০৮ সালে তার কবর আবিষ্কৃত হয় ফ্রমবর্কের ক্যাথেড্রালে। ডিএনএ মিলিয়ে সনাক্ত করে দেহাবশেষ পোল্যান্ডের ওলস্টিন শহরের কাছে রাখা হয়। তারপর কফিনটি তার স্মৃতিবিজড়িত শহরগুলোতে ঘোরানো হয়। মৃত্যুর প্রায় ৫০০ বছর পর কোপার্নিকাসকে বীরের মর্যাদায় আবারও সমাধিস্থ করে পোলিশ ক্যাথলিক চার্চ।

(দ্য রিপোরট/ডব্লিউএস/এএল/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

এই দিনে এর সর্বশেষ খবর

এই দিনে - এর সব খবর