thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মে 24, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ১৩ জিলকদ  1445

‘আগরতলা মামলা ষড়যন্ত্র বা মিথ্যা নয়, সত্য মামলা’

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ২২ ২০:৫০:৫৫
‘আগরতলা মামলা ষড়যন্ত্র বা মিথ্যা নয়, সত্য মামলা’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ‘ঐতিহাসিক আগরতলা মামলাটি ষড়যন্ত্রমূলক বা মিথ্যা মামলা নয়, এটি একটি সত্য মামলা। কিন্তু স্বাধীনতার ৩০ বছর পরেও এই মামলার সত্য বিষয়টি তুলে ধরা হয়নি। ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে এই মামলাকে ষড়যন্ত্রমূলক এবং মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।’- এমনটাই দাবি করেছেন জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ কর্নেল (অব.) শওকত আলী।

শুধু শওকত আলীই নয় এমন দাবি ঐতিহাসিক আগরতলা মামলার জীবিত সব আসামির। শনিবার বিকেলে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ঐতিহাসিক এ মামলার ৪৫তম মুক্তিদিবসের আলোচনায় তারা এ দাবি করেন।

শওকত আলী বলেন, আমি অনেক চেষ্টা করেছি এই মামলার সত্য বিষয়টি তুলে ধরার। কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি। আগরতলা মামলাটি নিয়ে ক্রমাগত মিথ্যাচার করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যা করেছি তার জন্য আজও গর্ববোধ করি। কিন্তু রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে সমস্যা কোথায় আমি জানি না।

তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সশস্ত্র পরিকল্পনা নিয়েছিলাম সামরিক বাহিনীতে বিদ্রোহ করে দেশ স্বাধীন করার। এটা সত্য বিষয়। কিন্তু বলা হচ্ছে এটি ষড়যন্ত্রমূলক এবং মিথ্যা। আমরা সামরিক বাহিনীতে বিদ্রোহ করার পরিকল্পনাই নিয়েছিলাম। এটা মিথ্যা হয় কি করে। আর এখন আমরা জানি ৬৬ সালে ছয় দফার কারণেই আগরতলা মামলাটি করা হয়েছে। ইতিহাস নিয়ে এত বড় মিথ্যাচার কিভাবে সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, আমি গর্বিত যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। ইতিহাসকে আজ যদি সঠিকভাবে তুলে ধরা হতো তবে এই মামলার মাহাত্ম্য আরও বাড়ত।

মামলার আসামি নূর মোহাম্মদ বলেন, এই মামলাটি মিথ্যা নয়। বরং এই সত্য গোপন করে ইতিহাসকে অবমাননা করছে, মুক্তিযুদ্ধকেও অবমাননা করছে। মুক্তিযুদ্ধের আগে এমন একটি সশস্ত্র পরিকল্পনা নেওয়ার কারণেই আমরা ৩৫ জন গ্রেফতার হই এবং আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ করা হয়। এরপর গণআন্দোলনের মুখে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আমাদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এটি স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্ব প্রস্তুতিকালে প্রথম পদক্ষেপ।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, অথচ এই মামলাটিকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এমনকি আসামীদেরও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

মামলার অপর আসামী কমান্ডার আবদুর রউফ বলেন, এই মামলা নিয়ে পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব আলোচনার জন্য উথাপন করার কথা ছিল। কিন্তু আজও এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

আলোচনা সভায় সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, আগরতলা স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম পদক্ষেপ হলেও আজও এই মামলার আসামিদের কোনো স্বাধীনতা পুরস্কারতো দূরের কথা, স্বীকৃতিটাই রাষ্ট্র দিতে পারেনি। এমনকি এই মামলার বিষয়ে পাঠ্যপুস্তকে মিথ্যাচার করা হয়েছে। তাই আমি আজ দাবি করছি তাদের যেন সঠিক মূল্যায়ন করা হয়, সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরা হয়।

উল্লেখ্য, গণআন্দোলনের মুখে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা মামলার আসামিদের তৎকালীন পাকিস্তান সরকার মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

আগরতলা মামলায় অভিযুক্ত ৪৮ আসামির মধ্যে ৩৫ জন তখন কারাগারে ছিল। বর্তমানে এই মামলার ৮ জন আসামি বেঁচে আছে। যারা বেছে আছেন তারা হলেন, কর্নেল (অব.) শওকত আলী, কর্নেল (অব.) শামসুল আলম, নূর মোহাম্মদ, আবদুল জলিল, কমান্ডার আব্দুর রউফ, এবি খোরশেদ, আবদুস সামাদ এবং মাহফুজুল বারী।

আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার আমিরুল হক এবং আগরতলা মামলার রিপোর্টার (পাকিস্তান অবজারভার) আব্দুর রহিম শেখ।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচএ/জেএম/এনআই/ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর