thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

বিডিআর বিদ্রোহের ৫ বছর

অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ২৪ ১৮:৫৭:১০
অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বহুল আলোচিত ও বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ‘বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের’ ঘটনার পঞ্চম বর্ষ মঙ্গলবার। ঘটনার পর বিচার প্রক্রিয়া চলার সময় পেরিয়ে যায় চার বছর। বিচার কার্যক্রম সম্পন্নের পর আবার এলো ২৫ ফেব্রুয়ারি।

অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িতের বিচার হলেও বিডিআর বিদ্রোহ এবং বিদ্রোহের সময় হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পনাকারী ও উস্কানিদাতারা কারা তা চিহ্নিত হয়নি। শুধু দাবি-দাওয়ার কারণে সাধারণ সৈনিকরা এমন নির্মম ঘটনা ঘটাতে পারে তা বেশির ভাগ মানুষই এখনও বিশ্বাস করে না। যদিও রায়ের কারণে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্বজনদের মনে খানিক স্বস্তি এসেছে।

ওই বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িত সদস্যদের বিচার করা হয়েছিল দুই পর্বে। প্রথম পর্বে সেই সময়ে বিদ্যমান বিডিআর আইনে বিদ্রোহের জন্য বিচার করা হয়। কিন্তু বিডিআর আইনে অপ্রতুল শাস্তির বিধানের কারণে যে সব সদস্য হত্যা, লুণ্ঠন এবং অগ্নিসংযোগে জড়িত ছিলেন তাদের বিচার বেসামরিক আদালতে করা হয়।

এ বিদ্রোহের পরপরই কারণ চিহ্নিত করে প্রকৃত ঘটনার প্রেক্ষাপট উদঘাটনের জন্য একটি বেসামরিক ও সামরিক তদন্ত করা হলেও ওই দুই তদন্তের বিবরণ বিভিন্ন কারণে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। যার কারণে বহু প্রশ্নের উত্তর অজানাই রয়ে গেছে।

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর বিদ্রোহের রায় ঘোষণা করা হয় গত বছরের ৫ নভেম্বর। বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার ঘটনায় আদালত ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একই মামলায় আরও ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পুরোনো ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ সংলগ্ন এক স্কুল ভবনের বিশাল একটি কক্ষে স্থাপিত বিশেষ আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। কোনো মামলার রায়ে একসঙ্গে এত মানুষের সাজা হওয়ার বিষয়টি পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বিচারের সমাপ্তি হবে উচ্চতর আদালতে আপিল নিষ্পত্তির মাধ্যমে। সে ক্ষেত্রে এ রায় কার্যকর করতে আরও অনেক সময় লাগতে পারে বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা।

রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণে এ ঘটনার জন্য বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে বহু সময় ধরে চলা অপারেশন ‘ডাল-ভাত’ কর্মসূচি। এ ছাড়া জাতিসংঘ মিশনে আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য পাঠানো। এখানেও কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা ছিল বলে প্রতীয়মান।

আদালতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হলো গোয়েন্দা ব্যর্থতা। আদালতের ভাষায় বিডিআরের এ ধরনের বিদ্রোহ সংঘটন ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতার এক বিশেষ নজির’।

আদালতের পর্যবেক্ষণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পৃক্ততার কথা। রায়ের আগে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এবং সামরিক বাহিনীতে যোগদান নিরুৎসাহিত করতে এমনটি করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। কিন্তু এর পেছনে কারা রয়েছে তা জানা যায়নি। এ ছাড়া এ বিদ্রোহের মূল হোতাদের মধ্যে আরও ২০ জন সদস্য এখনও পলাতক, যাদের হদিস আজও পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) সদর দফতরের ভেতরে দরবার হলে বিডিআরের বার্ষিক দরবার শুরু হয়। সেখানেই শুরু হয় বিদ্রোহ। ওই বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ অন্তত ৭৪ জন নিহত হন। নিহত হন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদও। গত মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার মাত্র দেড় মাসের মাথায় এ বিদ্রোহের ঘটনা সরকারকে এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল। এ বিদ্রোহের পর বিডিআর ভেঙ্গে দিয়ে এ বাহিনী পুনর্গঠন করা হয়। বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নতুন নাম রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এনডিএস/আরকে/ফেব্রুয়ারি ২৪,২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর