thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২০ জানুয়ারি 25, ৬ মাঘ ১৪৩১,  ২০ রজব 1446

ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কারো চাকরি কেড়ে নেবেনা : খালেদা

২০১৭ নভেম্বর ১২ ১৭:৩৬:৫০
ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কারো চাকরি কেড়ে নেবেনা : খালেদা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা যাতে আসতে না পারে সে জন্য সরকার বাধা দিয়েছে। বিএনপির সমাবেশে লোক আসতে বাধা দিয়ে সরকার ছোট মনের পরিচয় দিয়েছে।তিনি বাধা দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানান।

রবিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, এরা (সরকার) যে এত ছোট মনের আজকে তারা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রমাণ করে দিয়েছে। এত ছোট মন নিয়ে রাজনীতি করা যায় না। এরা মানুষকে ভয় পায় । এজন্য ৭ নভেম্বর আমাদের জনসভা করতে দেয়নি । আজকে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু জনগণ যেন আসতে না পারে সেই ব্যবস্থা করেছে। গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। বাইরের জেলার মানুষ যেন না আসতে পারে। রাজধানীর হোটেলগুলোতে অভিযান চালিয়েছে। অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।

তিনি বলেন, এমনকি আমিও যেন সমাবেশে আসতে না পারি সেই ব্যবস্থাও করেছে। আমি বাসা থেকে বের হয়ে দেখি রাস্তায় খালি বাস রেখে দিয়েছে।

বিএনপি নেত্রী বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছি, আসুন। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বহু মত ও পথের পার্থক্য থাকবে, কিন্তু দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে এক হতে হবে। এই কাজ করলেই জনগণের কল্যাণ, দেশের উন্নতি করা সম্ভব।

খালেদা জিয়া বলেন, আজকে ঘরে ঘরে মানুষের কান্না আর আহাজারি। মানুষ আজকে অত্যাচারিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত। তাই এদের হাত থেকে মানুষ মুক্তি চায়। মানুষ পরিবর্তন চায়। মানুষ পরিবর্তন চায়। এই পরিবর্তন আমরা বলি আসতে হবে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে, ভোটের মধ্য দিয়ে আসতে হবে। এই জন্য মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। হাসিনার অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। সামান্য স্থানীয় নির্বাচন যারা চুরি করে জিততে চায়, তাদের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। তারা মানুষকে ভয় পায়।

ইভিএম দিয়ে নির্বাচন হবে না। নির্বাচনে সেনাবাহিনী নামাতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বিএনপি নেত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারি চাকরিজীবীদের ভয় দেখাচ্ছে। তারা বলছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি চলে যাবে। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কারো চাকরি কেড়ে নেবে না। এবিষয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।

সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এসব (চাকরিচ্যুত করা) কাজ বিএনপির নয়। সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতা দেখা হবে। কারো চাকরি খাওয়া হবে না।

আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আওয়ামী লীগ বলছে- বিএনপি ক্ষমতায় আসলে মানুষ হত্যা করবে। আমরা মানুষ হত্যা করি না, মানুষ হত্যা করে আওয়ামী লীগ। এটা আওয়ামী লীগের কাজ, বিএনপির নয়।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রবিবার দুপুর ২টায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে জনসভা শুরু হয়। দুপুর সোয়া ২টার দিকে খালেদা জিয়া গুলশানের ‘ফিরোজা’ বাসা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে রওনা দেন। পরে বিকেল ৩টার দিকে তিনি গাড়িবহর নিয়ে সমাবেশস্থলে পৌঁছান। খালেদা জিয়া সমাবেশস্থলে পৌঁছলে চার দিক থেকে তার নামে স্লোগান ওঠে। তিনি হাত উঁচিয়ে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন।

গত দেড় বছরের মধ্যে ঢাকায় খালেদা জিয়ার এটাই প্রথম জনসভা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সর্বশেষ গত বছরের ১ মে শ্রমিক সমাবেশে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তিনি।

সেটা ছিল শ্রমিক দলের কর্মসূচি। ঢাকায় বিএনপির প্রকাশ্য কর্মসূচিতে তার সর্বশেষ অংশগ্রহণ গত বছরের ৫ জানুয়ারি নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায়।

রোববারের সমাবেশ করতে ঢাকামহানগরপুলিশ২৩শর্ত দিয়েছে বিএনপিকে।

এতে বলা হয়েছে, সমাবেশের কারণে সড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না, কর্মসূচি শেষ করতে হবে বিকাল ৫টার মধ্যে।

জনসভার জন্য উদ্যানে ৬০ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট প্রশস্ত মঞ্চ নির্মাণ করে বিএনপি। মঞ্চের চারপাশে বসানো হয়ে সিসি টিভি ক্যামেরা। মঞ্চের সামনে ৩০ ফুট জায়গায় বেষ্টনি দেওয়া হয়েছে।

পুরো জনসভা সুশৃঙ্খল রাখতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হয়েছে।

মহাসচিব মির্জা ফখরুল এই জনসভার পুরো কার্যক্রম সমন্বয় করেন। তাকে সহযোগিতা করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।

জনসভা ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশ-পাশের এলাকা সাজানো নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুনে। এসব ডিজিটাল ব্যানারে ছিল জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ১২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর