thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১,  ২০ জমাদিউস সানি 1446

এডমন্ড হ্যালি

২০১৩ নভেম্বর ০৮ ১২:৫৮:৪০
এডমন্ড হ্যালি

দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : ইংরেজ জ্যোতির্বিজ্ঞানী, ভূতাত্ত্বিক, গণিতবিদ, আবহাওয়াবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী এডমন্ড হ্যালি ১৬৫৬ সালের ৮ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হ্যালির ধুমকেতুর কক্ষপথ আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। তিনি ছিলেন ব্রিটেনের দ্বিতীয় রাজকীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

এডমন্ড হ্যালি ইংল্যান্ডের হ্যাগারস্টোনের সোরডিচে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এডমন্ড হ্যালি সিনিয়র অবস্থাপন্ন সাবান প্রস্তুতকারী ছিলেন। বালক বয়সে তিনি গণিতে আগ্রহী হন। সেইন্ট পল’স স্কুলে তার পড়াশোনার শুরু। ১৬৭৩ সালে তিনি অক্সফোর্ডের কুইন্স কলেজে ভর্তি হন। আন্ডারগ্রাজুয়েটে থাকা অবস্থায় সোলার সিস্টেম ও সানস্পটসের উপর তার প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়।

হ্যালি ব্রিটেনের প্রথম রাজকীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী জন ফ্লামস্টেডের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। ১৬৭৬ সালে তিনি সাউথ আটলান্টিক দ্বীপ সেইন্ট হেলেনায় ভ্রমণ করেন। সেখানে তিনি দক্ষিণ গোলার্ধের তারকা নিয়ে একটি ক্যাটালগ তৈরি করেন এবং বুধের পরিভ্রমণ পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি বুঝতে পারেন শুক্র গ্রহের একই ধরনের পরিভ্রমণের হিসাবকে সোলার সিস্টেমের আকার নির্ধারণে ব্যবহার করা যাবে।

১৬৭৮ সালের মে মাসে তিনি ইংল্যান্ড ফিরে আসেন। সেইন্ট হেলেনার পর্যবেক্ষণ থেকে প্রকাশ করেন ক্যাটালগস স্টেলারম অ্যাস্ট্রালিউম। যেখানে দক্ষিণ গোলার্থের ৩৪১টি তারার বর্ণনা আছে। সে বছর তিনি এমএ ডিগ্রি লাভ করেন অক্সফোর্ড থেকে এবং রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন।

১৬৮৬ সালে সেইন্ট হেলেনার আবিষ্কার নিয়ে তার দ্বিতীয় বইটি প্রকাশ পায়। সেখানে বাণিজ্য বায়ু ও মৌসুমী বায়ু নিয়ে চার্টও ছিল। তিনি ব্যারোমেট্রিক চাপের সাথে সমুদ্র উচ্চতার সম্পর্কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ এতে তুলে ধরেন।

১৬৮৪ সালে তিনি কেমব্রিজে স্যার আইজাক নিউটনের সাথে দেখা করেন। সেখানে তাদের মধ্যে ধুমকেতুর পরিভ্রমণ নিয়ে কথা হয়। পরবর্তীতে নিউটনের অন দ্যা মোশন অফ বডিস ইন এন অরবিট পড়ে তিনি আবারো তার সাথে দেখা করেন। ১৬৮৭ সালে নিজ খরচে নিউটনের ফিলোসফিয়ে নেচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা প্রকাশ করেন।

ফ্লামস্টেডের পর‌্যবেক্ষণকে ভিত্তি করে তিনি ১৬৮২ প্রথমবারের মতো কিচ ধুমকেতুর কক্ষপথ গণনা করে বের করেন। ১৬৯১ সালে অক্সফোর্ডের সাভিলিয়ান প্রফেসর অব এস্টোনমি’র নিয়োগ পেতে গিয়েও নাস্তিকতার অভিযোগে যোগ দিতে পারেননি।

১৬৯৩ সালে তার করা ব্রাসলু শহরের মৃত্যুহার সারণীই মৃত্যুসংখ্যা, বয়স ও জনসংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক বর্ণনার প্রথম প্রচেষ্টা এবং এ থেকেই পরে জীবনবীমা ধারণার সূত্রপাত হয়।

১৭০৫ সালে প্রকাশিত সিনোপসিস অব দি এস্টোনমি অব কমেটস বইয়ে হ্যালি ১৩৩৭ সাল থেকে ১৬৯৮ সাল পর্যন্ত ২৪টি ধুমকেতুর পরাবৃত্তাকার কক্ষপথের বর্ণনা দেন। তিনি প্রমাণ করেন, ১৫৩১, ১৬০৭ ও ১৬৮২ সালে দেখা যাওয়া তিনটি ধুমকেতুই একই। ১৭৫৮ সালে একই ধুমকেতুর আগমনের অগ্রিম ঘোষনা দেন। এই ধুমকেতুটিই হ্যালির ধুমকেতু নামে পরিচিত। এটি প্রতি ৭৫ বছর পর পর পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান হয়।

হযরত নূহ (আ.) এর সময়কালের বন্যা ধুমকেতুর কারণে হয়েছে এমন মন্তব্যের কারণে হ্যালি ১৬৯৪ সালে রয়্যাল সোসাইটি দ্বারা সমালোচিত হন।

১৭২০ সালে তিনি গ্রীনউইচের রাজ-জ্যোতির্বিদ হিসাবে ঘোষিত হন। তিনি আমৃত্যু এই পদে বহাল ছিলেন। ১৭৪২ সালের ১৪ জানুয়ারি ৮৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।

(দিরিপোর্ট২৪/ডব্লিউএস/জেএম/নভেম্বর ০৮, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

এই দিনে এর সর্বশেষ খবর

এই দিনে - এর সব খবর