thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউল আউয়াল 1446

রমজান প্রতিদিন

কোরআন পাঠে  অফুরন্ত কল্যাণ 

২০১৮ মে ২০ ০৪:৫২:৩১
কোরআন পাঠে  অফুরন্ত কল্যাণ 

একেএম মহিউদ্দীন, দ্য রিপোর্ট:

রোববার ৩ রমজান। রোজা বা সিয়াম খোদার একটা বড় নিয়ামত। তিনি উম্মতে মুহাম্মাদিরর জন্য রমজানের পুরো এক মাস রোজা পালনের বিধান প্রদান করে তাদের প্রতি একটি বড় দয়া প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং এই সময়টুকু হেলায় হারালে চলবে না। এখন ইনসানে কামিল বা পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার সুবর্ণ সময়। নিজের মনের আয়নায় নিজেকে একবার দেখে নেয়া দরকার। রহমতের বর্ষণে সিক্ত হবার আকাক্সক্ষা থেকে সিয়ামগুলি যাতে ঠিকমত পরিপালন করা যায় সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করা দরকার। এই সেই মাস যে মাসে নাজিল হয়েছে পবিত্র আল কুরআন। আল্লাহ বলেন, “আমি মানুষের হেদায়েতের জন্য পথ নির্দেশনার বিস্তারিত বর্ণনাসহ সত্য মিথ্যার মাপকাঠি হিসাবে এই রমজান মাসেই কুরআন নাজিল করেছি”।

সুতরাং এ মাসে কুরআনের শামিয়ানায় প্রয়োজন নিজেকে সামিল করা। মানুষ যেখানে তার মুক্তির পথ হারিয়ে হয়রান, মহামুক্তির পথ বাতলে দেয় পবিত্র আল কুরআন। এটাকে না বোঝার ভয়, না ছোঁয়ার ভীতি এমনভাবে আমাদের পেয়ে বসেছে যেন ছুলে এটি কিনা কি হয়ে যাবে। হ্যা, কুরআন ছুলে একটি ঘটনা-ই ঘটবে তা হচ্ছে, সোনার মানুষ হওয়ার অমিত সম্ভাবনা। আসুন এই রমজানে সে সম্ভাবনাকে কাজে লাগায়। বয়ান আমরা কম শুনছি না। কাজের কাজ কিচ্ছু হচ্ছে না। আসুন এবার তাহলে একটা কাজ করি বাংলা অনুবাদসহ ভাল একটা কুরআন সংগ্রহ করে পড়তে থাকি। মাস জুড়ে যতটুকু পারা যায় সময়টাকে কাজে লাগান। বাংলা ভাষায় যে কাজটা আমরা পারিনি তা করে দেখালেন গিরীশ চন্দ্র সেন পবিত্র কুরআনের বাংলা অনুবাদ করে। তার হাতেই প্রথম রচিত হয়েছিল মহানবীর [ সা.] জীবন চরিত। যে কাজ আমরা পারিনি তা করে দেখালেন রামপ্রাণ গুপ্ত, কৃষ্ণকুমার মিত্র, হরেন্দ্র চন্দ্র পালরা। সামগ্রিক ব্যর্থতাকে ঝেড়ে ইবাদতের এই মৌসুমে সুযোগটিকে আসুন কাজে লাগায় কী লেখা আছে কুরআনে- একবার পড়ে দেখি। কি সেই আকর্ষণ যার কারণে বুনো মানুষেরা সোনার মানুষে পরিণত হলো। কুরআনের অলৌকিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে একবার এটি পাঠ করে দেখুন না সকলে। শুধু ঘরে উঁচু স্থানে তুলে রাখার মধ্যে কোন ফজিলত নেই। কুআনের হক হলো,এটাকে অনুধাবন করা।
মসজিদে খতম তারাবিহতে হাফেজ সাহেবের পিছনে দঁড়িয়ে আমরা এই কুরআন শুনছি। যদি এর মানে জানা থাকতো কতই না ভাল লাগতো তা।
প্রিয় পাঠক, এ মাসটাকে কাজে লাগানোর ব্যাপারে মুফতীয়ে আজম হজরত মাওলানা মুহাম্মদ শফী (রহ.) বলতেন, রমজানকে স্বাগত জানানো এবং রমজানের প্রস্তুতির পদ্ধতি হলো এই যে, মানুষ প্রথমে চিন্তা করবে এ মাসে তার ব্যবসা বাণিজ্য এবং তার দৈনিক অন্যান্য কর্মকা-ের মধ্যে কোনটি স্থগিত করা যায়। যেসব কর্মকা- স্থগিত করা সম্ভব হয় সেগুলো রমজান মাসে স্থগিত করে নেবে। এর মাধ্যমে যে সময়টুকু বের হয়ে আসবে তা একমাত্র ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে কাটিয়ে দেবে।
এ মাসে রোজা তো রাখতেই হবে আর তারাবীহর নামাজও আদায় করতে হবে। এছাড়া যতদূর সম্ভব নিজের সময় ইবাদত বন্দেগীতে অতিবাহিত করবে। এ মাসে কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করবে। কেননা রমজান মাসের সঙ্গে কুরআনের একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং অধিকহারে কুরআন তিলাওয়াত করবে।
হজরত ইমাম আবু হানিফা (রহ.) রমজান মাসে দৈনিক দিনের বেলায় এক খতম এবং রাতের বেলায় এক খতম কুরআন তিলাওয়াত করতেন। এছাড়া তারাবিহর নামাজে তিনি এক খতম কুরআন তিলাওয়াত করতেন। এভাবে তিনি এক রমজানেই ৬১ বার কুরআন খতম করতেন। বড় বড় বুজুর্গানে দ্বীনের জীবনী অনুসন্ধান করলেও দেখা যায়, রমজানে তারা কুরআন তিলাওয়াতে বেশ গুরুত্বারোপ করেছেন। সুতরাং আমাদের জন্যও জরুরী অন্যান্য সময়ের তুলনায় রমজান মাসে কুরআন তিলাওয়াতের পরিমাণ বৃদ্ধি করে দেয়া।

(দ্য রিপোর্ট/একেএম/মে ২০, ২০১৮)



পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

ধর্ম এর সর্বশেষ খবর

ধর্ম - এর সব খবর