নজরুল-সাহিত্য : বিশ্ববোধ (১ম কিস্তি)
ড. মো. মনজুর রহমান
কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯ খ্রি.-১৯৭৬ খ্রি.) বিশ শতকের বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। বাংলা ও বাঙালির নিবেদিত-প্রাণ নজরুল আমাদের প্রাণের কবি, অবহেলিত মানবাত্মার দুর্জয়-নিনাদ। স্বদেশের প্রতি তাঁর গভীর টান। নজরুল মনেপ্রাণে পরশাসন থেকে স্বজাতি ও স্বদেশকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। তাঁর এ স্বদেশ-অন্বেষণের অনুষঙ্গে যুক্ত হয়েছে মুক্ত সমাজ-অন্বেষণ। সমাজজীবনের ব্যাপক অভিজ্ঞতা এবং তার সঙ্গে বিপুল প্রাণপ্রবাহ যুক্ত করে লাঞ্ছিত-বঞ্চিত মানুষের প্রতিবাদী চেতনা নিয়ে নজরুল স্বদেশকেই নতুনভাবে দেখতে চেয়েছিলেন। অবশ্য এর জন্য তাঁকে নিজস্ব সৃষ্টিভূমিতে বিদ্রোহের অগ্নিবীজ ছড়াতে হয়েছিল। দেশ ও সমাজ-অন্বেষণে নজরুল কাব্য-কবিতায় যে মানবপ্রত্যয়, সাম্যবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, তার মধ্য দিয়েই কবির বিশ্ববোধ তথা বিশ্বমানস স্পষ্ট হয়েছে। এরই সঙ্গে তিনি হয়েছেন আন্তর্জাতিক এবং তাঁর সাহিত্যকর্মগুলোও যুগের গণ্ডি অতিক্রম করতে পেরেছে। এ প্রসঙ্গগুলো নজরুল-সাহিত্যে বিশ্ববোধের আলোচনায় মানদ- হিসেবে বিবেচিত হবে। আর এ বিবেচনার স্বরূপ উদ্ঘাটনই আলোচ্য প্রবন্ধে মূল উদ্দীষ্ট।
নজরুল-সাহিত্য : বিশ্ববোধ
বিশ্বসাহিত্য বলতে বিদগ্ধমহল এ বিশ্বের ক্ল্যাসিক সাহিত্যকেই মনে করেন। হোমার, বাল্মিকী, ব্যাস, শেক্সপিয়র, গ্যেটে, তলস্তয়, রবীন্দ্রনাথের রচনাকে বিশ্বসাহিত্যে শ্রেষ্ঠ অবদান বলে বিবেচনা করেন। তাঁদের মনে করার অন্যতম কারণ হলো, তাঁদের সৃষ্ট সাহিত্যকর্ম কালের অমোঘ প্রবাহ অতিক্রম করে মানবজীবনে স্বমহিমায় চিরভাস্বর। এর অন্যতম কারণ, তাতে মানবজীনের চিরন্তন রূপ প্রতিফলিত হয়েছে। হোমার বা বাল্মীকি অঙ্কিত চরিত্রের প্রত্যেকটি এক একটি প্রতীক এবং তারা মানবজীবনে এক একটি বিশিষ্ট দিকের প্রতিনিধি। হোমারের অঙ্কিত ট্রয়ের রাজকুমার দুঃসাহসী যুবক প্রায়াম বাসনা চরিতার্থের উদ্দেশে হেলেনকে জোর করে অপহরণ করায় সে মানব-মানসে ক্রিয়াশীল দুষ্প্রবৃত্তির প্রতিনিধি। রামায়ণ’র রাম মানবজীবনে অপর এক বৃত্তির প্রতিনিধি। রাম পিতৃসত্য পালনের জন্য চতুর্দশ বৎসর বনবাসক্লেশ সহ্য করেছে। সে গণমানুষের সন্তোষের জন্য পতিব্রতা সীতাকেও ত্যাগ করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেনি। শেক্সপিয়র অঙ্কিত চরিত্রগুলোও সেরূপ প্রতীকী চরিত্র হয়েছে। হ্যামলেট আপনার চাচা কর্তৃক নিহত পিতার সংশ্রবে আসার কোনো সুযোগ পায়নি। উচ্চাকাঙ্ক্ষা দ্বারা পরিচালিত ম্যাকবেথ এক উজ্জ্বল চরিত্র। আরব্য উপন্যাসে সিন্দাবাদ নাবিকের জীবনে অর্থলিপ্সার বাসনা প্রকাশ পেয়েছে এবং তা লাভ করার জন্য সে সাত সাগর পাড়ি জমিয়েছে। আবার সে ধন অতি সহজে লাভ করার প্রতীক হিসাবে দেখা দিয়েছে আলীবাবা। গ্যেটে তাঁর বিখ্যাত মহাকাব্য ফাউস্ট-এর মধ্যে একদিকে ফাউস্ট অপরদিকে মেফিস্টোফেলিসের চিত্র অঙ্কিত করে মানবজীবনের আদর্শিক দ্বন্দ্বের সত্যই প্রচার করেছেন। লেভ তলস্তয়ের আনা কারেনিনা এক হতভাগ্য মহিলার জীবনের করুণ কাহিনি। সে তার এক প্রেমিকের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে গর্ভবতী হয়েছে। অথচ সে অবস্থায়ও তার উদার হৃদয় স্বামীকে ক্ষমা করতে প্রস্তুত। তবে সামাজিক জীবনে তার স্থান নীচ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত হবে ভেবে সে আত্মহত্যা করেছে। রেজারেকশন-এ তলস্তয় তার নায়িকা ক্যাটেরিনা ম্যাসলোভাকে অতিশয় পতিত জীবনের মধ্যেও মানবতার এক জ্বলন্ত প্রতীক হিসাবে চিত্রিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী’র নন্দিনী মানব-মানসের এক সার্বজনীন আকাক্সক্ষার রূপ নিয়ে বিশ্বসাহিত্যে স্থান পেয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নজরুলের একটি বক্তব্য স্মতর্ব্য বলে মনে করছি। যুগবাণী’র ‘বাঙলা সাহিত্যে মুসলমান’ নিবন্ধে নজরুলের বক্তব্য-
যার প্রাণ যত উদার, যত উন্মুক্ত, তিনি তত বড় সাহিত্যিক। কারণ সাহিত্য হইতেছে বিশ্বের, ইহা একজনের হইতে পারে না। সাহিত্যিক নিজের কথা নিজের ব্যথা দিয়া বিশ্বের কথা বলিবেন, বিশ্বের ব্যথার ছোঁয়া দিবেন। সাহিত্যিক যতই কোনো সূক্ষ্মতত্ত্বের আলোচনা করুন না কেন, তাহা দেখিয়াই যেন বিশ্বের যে কোনো লোক বলিতে পারে, ইহা তাঁহারই অন্তরের অন্তরতম কথা। [ বাঙলা সাহিত্যে মুসলমান : যুগবাণী ]
উপর্যুক্ত উদ্ধৃতি থেকে আমরা নজরুলের বিশ্ববোধের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য অনুধাবন করতে পারছি। নজরুলের বিশ্ববোধ তথা বিশ্বসাহিত্যের প্রেক্ষাপটে তাঁর ভূমিকার বিষয়টিকে আমরা তিনটি দিক থেকে দেখতে পারি। প্রথমত, নজরুলের জন্মপ্রতিবেশ, দ্বিতীয়ত, সমসাময়িক কিছু আন্তর্জাতিক ঘটনা যা নজরুলের সাহিত্য-মানস ও রচনাদির উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল এবং তৃতীয়ত, বিদেশি কবি ও সাহিত্যিকারদের প্রভাব। এই তিনটি দিকের সঠিক মেলবন্ধনে আমরা খুঁজে পাবো নজরুলের বিশ্ববোধ তথা বিশ্বমানস।
নজরুলের জন্ম হয়েছে অত্যন্ত দরিদ্র কিন্তু অভিজাত পরিবারে। পরিবারের মধ্যে ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি-চর্চা থাকলেও দারিদ্র্যের কঠোর নিষ্পেষণে তাঁকে লেটো দলে বা রুটির দোকানের চাকরি গ্রহণ করতে হয়েছে। যে সমাজে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন, সে সমাজের মুসলিমের অবস্থান অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। বঙ্গবাসী মুসলিম সমাজ তখন ইংরেজ সরকারের অত্যাচারে অত্যন্ত দুরবস্থায় অধঃপতিত হয়। দেশের সর্বত্র বিরাজ করে অন্যায়-অত্যাচরের দূষিত প্রবাহ। ধনী কর্তৃক নির্ধনকে শোষণ রেওয়াজে পরিণত হয়। আশরাফ-আতরাফের ভেদ ধর্মের বিধান বলে গৃহীত হয়। হিন্দু অথবা ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে সতত বিবাদ-বিসংবাদ দেখা যায়। তথাকথিত পুরোহিত বা মোল্লা সমাজের লোকেরা এই বিবাদকে ধর্মীয় প্রেরণাজাত বলে প্রচার করে। সত্যিকার দেশপ্রেমিক লোকের সমাজে কোনো স্থান হয় না। বাংলায় অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের কঠোর হস্তে দমন করা হয়। এরূপ পরিবেশে জন্মগ্রহণ করে মানুষ মানবিক জীবনযাপন করতে পারে না। তার কাছে একমাত্র বিদ্রোহ ব্যতিত অন্য কোনো পথ খোলা থাকে না। এ কারণে নজরুল তাঁর কাব্যজীবনের সূচনাতেই প্রচণ্ড বিদ্রোহে গর্জন করে উঠেছিলেন।
সমকালীন কিছু আন্তর্জাতিক ঘটনা নজরুলের বিশ্ববোধের ধারণাকে প্রগাঢ় করতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল। নজরুল যখন সাহিত্যচর্চা শুরু করেছেন, তখন অবশ্য জাগতিক চিন্তা মুখ্যপ্রায় সবার কাছে। কেননা, ১৯১৪ সালের প্রথম মহাযুদ্ধ এবং তারপর তাবৎ পৃথিবীতে মারণাস্ত্র নিয়ে উৎকণ্ঠা। এই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা গ্রাস করে বিশ্বের চেতনাসম্পন্ন মানুষকে। ১৯১৯ সালে ভার্সাইয়ে প্রথম মহাযুদ্ধের সন্ধিপত্র স্বাক্ষরিত হয়ে মানুষ খানিকটা স্বস্তি পায়। এর আগেই ১৯১৭ সালে সংঘটিত হয় লেনিনের নেতৃত্বে রুশবিপ্লব, ১৯১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বিশ্বযুদ্ধের মিত্রপক্ষের সাময়িক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীকালে তুরস্কে জাতীয়তাবাদী নেতা হিসাবে কামাল আতাতুর্কের প্রতিষ্ঠা সুনিশ্চিত হয়। মাও-সে-তুঙের নেতৃত্বে চীনবিপ্লব সংঘটিত হয়। এসব কিছুই একজন সচেতন মানুষ হিসাবে নজরুল ইসলামকে আলোড়িত করে, শিল্পী হিসাবে তো বটেই। ১৯১৭ সালে নজরুল সেনাবাহিনীতে নাম লিখিয়েছেন এবং সে সূত্রে কবি গিয়েছিলেন করাচিতে। তাঁর মনের মধ্যে বিশ্বচেতনার উন্মেষ এ সময় থেকেই।
এ সময় নজরুল পাঞ্জাবি মৌলবি সাহেবের কাছ থেকে পাঠ নিয়েছিলেন দিওয়ান-ই-হাফিজ, মসনব-ই-রুমি’র পারসি কবিতার। কয়েক বছর আগে গ্রামে নজরুল নিজে ছিলেন মাজারের খাদেম, মক্তবের শিক্ষক, মসজিদের ঈমাম। হাফিজ, খৈয়াম নজরুলকে ডাক দিলেন বিশ্বপথে। কিছুদিন পর কবি কলকাতায় ফিরে এসেও সেই পথেরই পথিক হয়ে থাকলেন। পরে এই পথে নজরুল সাক্ষাত পেলেন বহু মনীষীর। অন্যদিকে, নজরুলের জীবন ও সাহিত্য সৃষ্টিতে আরবি-ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের ব্যাপক প্রভাব ছিল। তিনি অনুবাদ করেছিলেন রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম, রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজ, কাব্য আমপারা। নজরুলের উপর আলো এসে পড়েছিল বহু দিগন্ত থেকে। একদিকে রবীন্দ্রনাথ, নোগুচি, ইয়েট্স, পুশকিন, গোর্কি, তলস্টয়, দস্তভয়স্কি, চেকভ, যোহান, শেলি, কীটস, বোয়ার, কিপলিক, বার্নাড শ, বেনেভাঁতে, আনাতোল, এমিল জোলা, ফ্রয়েড, কার্ল মার্কস, হুইটম্যান; অন্যদিকে ইকবাল, ওমর খৈয়াম, রুমি, জামি ও হাফিজ। বিশ্বসাহিত্যের প্রায় সমস্ত বিখ্যাত লেখকদের লেখাই তিনি পাঠ করেছিলেন। এসব কাব্য পাঠের ফলেই নজরুলের মধ্যে বৃহত্তর, ব্যাপকতর ও উদারতর মানসিকতা গড়ে ওঠে। এসব কিছুই নজরুল ইসলামকে বিশ্বমানবতা শিখিয়েছিল এবং তাঁর বিশ্বদৃষ্টি খুলে দিয়েছিল। তাঁকে সমস্ত নীচতা, ক্ষুদ্রতা, স্বার্থপরতা, কুসংস্কারাচ্ছন্নতা, অসুন্দরতা, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, ধর্মীয় গোঁড়ামি, সীমাবদ্ধতা এবং জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে উঠতে সহায়তা করেছিল।
অগ্নি-বীণা, বিষের বাঁশী, সাম্যবাদী, ভাঙার গান কাব্যের প্রায় প্রতিটি কবিতায় সমকালীন চেতনার সঙ্গে সঙ্গে দেশ-কাল নিরপেক্ষ একটি সত্য-সুন্দর জীবনের আকুতি প্রকাশ পেয়েছে। অগ্নি-বীণা কাব্যের প্রথম কবিতা ‘প্রলয়োল্লাস’-এ যে চেতনা কবিকে উদ্দীপ্ত করেছে, তা বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের ক্রোধবহ্নিজাত পরাধীন বেদনা। এ কাব্যের ‘মোহররম’ কবিতায় একটি ধর্মীয় আবহ আছে, ‘কোরবনী’ কবিতাতেও তেমনি। ‘সাত-ইল-আরব’ কবিতায়ও ধর্মের প্রতি আবেগ প্রকটিত। কিন্তু ফোরাত নদীর তীরে যে ঘটনাটি ঘটেছিল, গঙ্গার তীরে সেই উদ্দীপনা যদি জাগে দেশমাতৃকার স্বাধীনতা অর্জনের জন্য কিংবা দেশ উদ্ধারের জন্য ‘শ্রেষ্ঠ পুত্রধন’ বলি দেবার আহ্বান যদি আসেই ‘কোরবানী’র আনুষ্ঠানিকতায়, তাহলে কেন সেটা স্থানিক গণ্ডি অতিক্রম করবে না। দজলা ও ফোরাত নদীর মিলনে যদি মানব-মিলনের গান শোনা যায়, তাহলে কেন উপেক্ষিত হবে সেটা। অগ্নি-বীণার ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মধ্যে আমরা যৌবনকে প্রত্যক্ষ করি। যাবতীয় দাসত্বকে কবি দুপায়ে মাড়িয়ে যান। তিনি বিধির বিধান ভেঙেছেন এবং তাঁর ‘চরণের তলে মরণের মার খেয়ে মরে ভগবান।’ অর্থাৎ কোনো প্রকার দাসত্ব-বন্ধনই তিনি স্বীকার করেন না। ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় তিনি শুধু ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ প্রাকশ করেননি; শুধু বাঙালি, ভারতবাসী বা মুসলমানের দুঃখ-দুর্দশা মোচনার্থেও বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন না, তিনি প্রতিশ্রুত হলেন নিখিলের নির্যাতিত মানুষের কাছে। নজরুল বললেন-
মহা বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না। [বিদ্রোহী : অগ্নি-বীণা]
বিশ্বভাবনা তথা বিশ্বমানবের প্রতি উৎসর্গীকৃতপ্রাণ কবির বিদ্রোহী সত্তার গভীরে নিহিত আছে। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মধ্যে তিনি এক স্থানে লিখেছেন-‘আমি বিশ্ব-তোরণে বৈজয়ন্তী মানব-বিজয় কেতন।’ আবার কবিতার সমাপ্তিতে লিখেছেন-
আমি চির-বিদ্রোহী বীর
আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির। [বিদ্রোহী : অগ্নি-বীণা]
বিশ্বের জনগণের স্বাধীনতা তথা বন্ধনদশা থেকে মুক্তির জন্য যেখানে বা যে কোনো দেশেই সংগ্রাম চলেছে, নজরুল তার সপক্ষে আত্মসমর্থন ঘোষণা করেছেন এবং নিপীড়িত জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের দুর্দশা থেকে মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন। ‘অন্তর-ন্যাশনাল-সঙ্গীত’-এ তাঁর উক্তি-
জাগো-
জাগো অনশন-বন্দী, ওঠরে যত
জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যহত। [ অন্তর-ন্যাশনাল-সঙ্গীত ]
নজরুল এক দিকে সহমর্মিতা, সহানুভূতি ও সমবেদনার বীণাবাদক; অন্যদিকে তিনি সত্য সুন্দর এবং সীমাহীন মানবপ্রেমের উপাসক। তিনি বন্ধনমুক্তি অন্যায় নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এবং সাম্য শন্তির পথপ্রদর্শক। নজরুল যা বলেছেন তা জগতের সব মানুষেরই প্রাণের কথা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে তাঁর প্রধান যে এলাকা বিদ্রোহ, সেই এলাকায় আজও তিনি জগতে দুঃখী বঞ্চিত মানুষের প্রেরণাদাতা। ‘ফরিয়াদ’ কবিতায় নজরুলের উক্তি-
প্রার্থনা কর-যারা কেড়ে খায় ৩৩ কোটি মানুষের গ্রাস
যেন লেখা হয় আমার রক্ত লেখায় তাদের সর্বনাশ।
এই কবিতার মাধ্যমে কবি ব্যক্তির ফরিয়াদকে সকল বঞ্চিত মানুষের ফরিয়াদে রূপান্তরিত করে তুলতে পেরেছিলেন। কবিতাটি ৭ অশ্বিন ১৩২২ সালে প্রকাশিত। শতবর্ষ পার হয়ে গেল। কবিতাটি পড়লে এখনো মনে হয়, বঞ্চিত মানুষের আজকের হাহাকারে সঙ্গে কবিতাটি গ্রথিত। এই বঞ্চনা দেশকালের উর্ধ্বে। ইংরেজ শাসনকে প্রতিপক্ষ জেনে কবিতাটি লিখেছিলেন নজরুল। কিন্তু প্রতিপক্ষ তো শুধু ইংরেজ নয়। ইংরেজ চলে গেছে, কিন্তু সমস্যা তো আজও সমাধান হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে উন্নয়নশীল বিশ্বের নানা দেশ থেকে ঔপনিবেশিক প্রভুরা বিদায় নিয়েছেন। তাতে একটি বাধা অপসারিত হয়েছে। কিন্তু অনেক দেশেই পুরনো প্রভুর জায়গায় নতুন প্রভুরা চলে এসেছেন। তাদের বিরুদ্ধেও চলছে বঞ্চিত মানুষের সংগ্রাম। ফলে নজরুল যখন তাঁর বিদ্রোহীভাবাপন্ন কবিতার স্বাধীন সমাজ, নতুন জীবনস্বপ্নের কথা বলেন, সেটা ইংরেজ শাসনাধীন ভারতবর্ষেই সীমাবদ্ধ থাকে না, তা শতবর্ষ পরবর্তী সমাজের জন্য প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ায়। (চলবে)
লেখক : অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/আগস্ট ২৭,২০১৮)
পাঠকের মতামত:
- কাঁচামালের অভাবে বন্ধ দেশবন্ধু গ্রুপের সুগার রিফাইনারি মিল
- বিশ্বখ্যাত ১ নম্বার ইলেকট্রিক স্কুটার প্রস্তুতকারী ব্র্যান্ড Yadea এখন পঞ্চগড়ে
- ২০ কোম্পানির পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা
- যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর গাজায় মিলল শতাধিক লাশ
- বড় জয়ে ‘সরাসরি’ বিশ্বকাপে খেলার আশা টিকিয়ে রাখল বাংলাদেশ
- সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ফের রিমান্ডে
- চাঁদাবাজি ও ঘুস বন্ধে ‘গুন্ডা প্রতিরোধ স্কোয়াড’ গঠনের সুপারিশ
- টাকা দিয়েও মালয়েশিয়া যেতে না পারায় মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের বৈঠক
- জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস আলম
- বোমা হামলার হুমকি পাওয়া সেই বিমানে তল্লাশি চলছে
- হাসিনার গোপন কারাগারে আটক থাকত শিশুরাও, দেওয়া হতো না মায়ের দুধ
- তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
- নাঈম নৈপুণ্যে রাজশাহীকে হারাল চিটাগং
- আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যার সমাধান করা উচিত: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
- হাসপাতালে গিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের ভোটার করবে ইসি
- ২৪৬ স্কোর নিয়ে ঢাকার বাতাস আজ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
- ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিলেন ট্রাম্প
- ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িত ১৫০০ জনকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প
- মেডিকেলে কোটায় উত্তীর্ণ ১৯৩ জনের ফল স্থগিত
- ছয় সংস্কার কমিশনের মেয়াদ বাড়ল
- সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত স্বাভাবিক, কৃষি কাজে ব্যস্ত কৃষকেরা
- বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ‘হিটম্যাপ’ প্রকাশ করল বিডা
- পালমাসকে উড়িয়ে চূড়ায় রিয়াল মাদ্রিদ
- বেস্ট হোল্ডিংসের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
- বিজয়ের সেঞ্চুরি ম্লান করে হাসানের দারুণ বোলিংয়ে খুলনার জয়
- ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ
- মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা : জাতীয় মেধা তালিকায় শীর্ষে যারা
- ঢাবিতে আবার ‘কোটা না মেধা’ স্লোগান, বিক্ষোভ
- চার শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান
- শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন, পদ পেলেন যারা
- পুরোনো ভাবাদর্শিক বন্দোবস্ত সক্রিয় হয়ে গেছে: মাহফুজ আলম
- ৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল
- পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফরে সম্পর্কে যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন মাত্রা
- রাতে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
- কাজী নজরুলের নাতি বাবুল লাইফ সাপোর্টে
- নতুন বাজারে ৬৩৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি
- বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস কারাগারে
- মঙ্গলবার থেকে অবৈধ অভিবাসীদের গণগ্রেপ্তার শুরু যুক্তরাষ্ট্রে
- ওষুধের ভ্যাট কমাতে সুপারিশ করা হয়েছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
- "যেকোনো উপায়ে সাধারণ মানুষের ভোট প্রদানের অধিকার থাকতে হবে"
- শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করা হবে: শফিকুল আলম
- ফ্যাসিস্ট যেন সংসদে ফিরে আসতে না পারে: বদিউল আলম
- ঋণ খেলাপিদের মনোনয়ন দেবে না বিএনপি, ফখরুলের অঙ্গীকার
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সংঘর্ষ: দুঃখ প্রকাশ করলো বিএসএফ
- "ব্যাংক খাত পেলেও পুঁজিবাজার পায়নি সংস্কার সহায়তা"
- যশোর জেলা জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের ২৭ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
- এআইবি পিএলসির উদ্যোগে কম্বল বিতরণ
- ইসলামী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলনের শুরু
- ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের ‘পার্টনার্স টুগেদার-২০২৫’ সমাপ্ত
- অবশেষে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করল ইসরাইল
- যোগ্যকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন পুতুল
- "দেশে আসেন, কাশিমপুরে ভালো ব্যবস্থা করা হবে"
- "পয়লা বৈশাখে স্থানীয় নামসহ নদ-নদীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ"
- ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে অভিমত জানাতে পারবেন সাধারণ নাগরিকরা
- শাপলা চত্বরে হেফাজত দমন: হাসিনার নির্দেশে ক্র্যাকডাউন
- আমদানি করায় কমছে চালের দাম
- "রক্তে যখন শরীর ভেসে যাচ্ছিল, তখন সিংহের মতো হাঁটছিলেন সাইফ"
- কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা, অপরিবর্তিত থাকবে রাতের
- বেশি খেলা হয়ে যাচ্ছে? বিশ্রাম নিয়ে যা ভাবছেন নাহিদ রানা
- রোহিত-কোহলিদের পাকিস্তানি আতিথেয়তার লোভ দেখালেন ফখর
- দুর্নীতির মামলায় ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
- ফেসবুকে নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন প্রেসসচিব শফিকুল আলম
- ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মান নিয়ে বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান শীর্ষে
- এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
- মিয়ানমার থেকে এলো ২২ হাজার মেট্রিক টন চাল
- আগের দামেই পেঁয়াজ, কমেছে সবজির
- অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে: জয়নুল আবদিন
- ৩ কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- নটিংহ্যামের বিপক্ষে লিভারপুলের ড্র
- আইসিসির ডিসেম্বর মাসের সেরা বুমরাহ
- গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা শেষ পর্যায়ে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হতে পারে চুক্তি
- সাড়ে ৫ কোটি লিটার ভোজ্যতেল কিনছে সরকার
- ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেপ্তার
- শাপলা চত্বরে হেফাজত দমন: হাসিনার নির্দেশে ক্র্যাকডাউন
- "রক্তে যখন শরীর ভেসে যাচ্ছিল, তখন সিংহের মতো হাঁটছিলেন সাইফ"
- অবশেষে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করল ইসরাইল
- ঢাবিতে আবার ‘কোটা না মেধা’ স্লোগান, বিক্ষোভ
- মঙ্গলবার থেকে অবৈধ অভিবাসীদের গণগ্রেপ্তার শুরু যুক্তরাষ্ট্রে
- আগের দামেই পেঁয়াজ, কমেছে সবজির
- নতুন বাজারে ৬৩৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সংঘর্ষ: দুঃখ প্রকাশ করলো বিএসএফ
- মিয়ানমার থেকে এলো ২২ হাজার মেট্রিক টন চাল
- যোগ্যকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন পুতুল
- ফেসবুকে নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন প্রেসসচিব শফিকুল আলম
- কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা, অপরিবর্তিত থাকবে রাতের
- পুরোনো ভাবাদর্শিক বন্দোবস্ত সক্রিয় হয়ে গেছে: মাহফুজ আলম
- অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে: জয়নুল আবদিন
- আমদানি করায় কমছে চালের দাম
- বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ‘হিটম্যাপ’ প্রকাশ করল বিডা
- ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের ‘পার্টনার্স টুগেদার-২০২৫’ সমাপ্ত
- দুর্নীতির মামলায় ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
- ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মান নিয়ে বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান শীর্ষে
- কাজী নজরুলের নাতি বাবুল লাইফ সাপোর্টে
- এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
- ঋণ খেলাপিদের মনোনয়ন দেবে না বিএনপি, ফখরুলের অঙ্গীকার
- রোহিত-কোহলিদের পাকিস্তানি আতিথেয়তার লোভ দেখালেন ফখর
- বেশি খেলা হয়ে যাচ্ছে? বিশ্রাম নিয়ে যা ভাবছেন নাহিদ রানা
- মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা : জাতীয় মেধা তালিকায় শীর্ষে যারা