thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মে 24, ২০ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৪ শাওয়াল 1445

আবারও ইলিশ ধরা শুরু

২০১৮ অক্টোবর ২৯ ০৯:০৭:৪২
আবারও ইলিশ ধরা শুরু

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ইলিশের মা মাছ রক্ষা এবং ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে ২২ দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (২৯ অক্টোবর) থেকে আবারও নদ-নদীতে ইলিশ ধরা শুরু হচ্ছে।

গত ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন দেশের ৩৭ জেলার ৭ হাজার কিলোমিটার নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল মৎস্য মন্ত্রণালয়।

এই ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি করা, বাজারজাত করা, মজুত রাখাসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর নিষেধাজ্ঞার সময় ১৫ দিন থেকে বাড়িয়ে ২২ দিন করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় টাক্সফোর্সের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।

ইলিশ মূলত লোনাপানির মাছ। ডিম ছাড়ার আগে নদীর মিঠাপানিতে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে। একটি মা ইলিশ সর্বনিম্ন দেড় লাখ ও সর্বোচ্চ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম দেয়।

মৎস্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার শাহের খালী থেকে হাইতকান্দী পয়েন্ট, ভোলার তজুমুদ্দীন উপজেলার উত্তর তজুমুদ্দীন থেকে পশ্চিম সৈয়দপুর আওলিয়া পয়েন্ট,পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতা চাপালি পয়েন্ট ও কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর কুতুবদিয়া থেকে গণ্ডামার পয়েন্ট পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

সূত্র আরও জানায়, ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যেই চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, শরীয়তপুর, ঢাকা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, খুলনা, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও গোপালগঞ্জ জেলার সকল নদ-নদীতে এ সময় সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছিল।

এ ছাড়াও দেশের সুন্দরবনসহ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা এবং মোহনাসমূহেও এই ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছিল। ইলিশ ধরা রোধকল্পে দেশের মাছঘাট,আড়ত,,হাটবাজার,চেইন শপসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ২২ দিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযানও পরিচালিত হয়েছে।

মৎস্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৭-০৮ সাল পর্যন্ত জাটকা আহরণ নিষিদ্ধের সময়ে জেলে পরিবারপ্রতি মাসে ১০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হলেও বর্তমানে তা বাড়িয়ে ৪০ কেজি করে দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া ২০০৭-০৮ সালে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৫টি জেলে পরিবার এ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকলেও বর্তমানে তা ২ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭৪-এ উন্নীত হয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতাগ্রহণের আগের ৭ বছরে জেলেদের জন্য খাদ্যশস্য বরাদ্দ ছিল মাত্র ৬ হাজার ৯০৬ মেট্রিক টন। কিন্তু বিগত ২০১৬-১৭ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে এ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫৪৫ মেট্রিক টন। প্রকৃত জেলেদের শনাক্ত করে নিবদ্ধকরণ ও পরিচয়পত্র প্রদানের লক্ষ্যে জুন ২০১৭ পর্যন্ত ১৬ লাখ ২০ হাজার মৎস্যজীবী-জেলের নিবন্ধন ও ডাটাবেইজ প্রস্তুত এবং ১৪ লাখ ২০ হাজার জেলের পরিচয়পত্র বিতরণ সম্পন্ন করে সরকার ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদনবৃদ্ধিতে সচেষ্ট রয়েছে। এর মধ্যে ইলিশ আহরণে জড়িত প্রায় ৭ লাখ জেলে এবং মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে ২২ দিনের জন্য ৩ লাখ ৯৫ হাজার জেলে পরিবারকে পরিবারপ্রতি ২০ কেজি করে প্রায় ৭ হাজার টন খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬৮ হাজার ৩০৫ দশমিক ৬৮ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রফতানি করে ৪ হাজার ২৮৭ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে; যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ৩ হাজার ২৪৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ২৯, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর