thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১,  ২৫ রবিউল আউয়াল 1446

এবার বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করবেন কে?

২০১৮ ডিসেম্বর ২৭ ১১:৩৭:১৮
এবার বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করবেন কে?

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করবেন কে? রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নাকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- এখনও তা চূড়ান্ত করতে পারেনি আয়োজক সংস্থা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

রেওয়াজ অনুযায়ী বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি দেশের প্রধানমন্ত্রী বা সরকার প্রধান এই মেলার উদ্বোধন করেন। তবে এবার ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীসহ এই মেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। ফলে নির্বাচনের একদিন পর এই আয়োজনের উদ্বোধন করা অনেকটাই অসম্ভব হবে প্রধানমন্ত্রীর জন্য। তাই ইপিবির বোর্ড সভায় উদ্বোধনের তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে এই তারিখ পিছিয়ে ৯ জানুয়ারি ঠিক করা হলেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তা এখনও চূড়ান্ত করা যায়নি।

ইপিবি সূত্র জানিয়েছে, এই মেলা প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন ধরে নিয়েই আয়োজন চূড়ান্ত করা হচ্ছে। তবে তিনি সময় দিতে না পারলে হয়তো মহামান্য রাষ্ট্রপতি উদ্বোধন করবেন, সেভাইে এগুচ্ছে ইপিবি। ইতোমধ্যেই চিঠিপত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। কারণ এই মেলায় দেশি বিদেশি ব্যবসায়ী ছাড়াও অন্যান্য মেহমানরাও উপস্থিত থাকবেন। সে কারণেই মাসব্যাপী এই মেলার তারিখ আর বেশি পেছনো ঠিক হবে না। এবার এই বাণিজ্য মেলা ৯ জানুয়ারি শুরু হয়ে তা শেষ হবে ৯ ফেব্রুয়ারি। অথচ ফেব্রুয়ারির ১ তারিখেই দেশে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে গ্রন্থ মেলার, যা ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে চলে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে ভোলায় অবস্থানরত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হয়তো উদ্বোধন করবেন, যদি তিনি সময় দিতে না পারেন, তাহলে হয়তো মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই মেলার উদ্বোধন করবেন। বিষয়টি নিয়ে ইপিবি কাজ করছে।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইপিবি থেকে প্রস্তাব পাঠানোর পরেও ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা কে উদ্বোধন করবেন তা চূড়ান্ত করতে পারেনি মন্ত্রণালয়। মেলা উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এখনও কোনও সম্মতি পাওয়া যায়নি।

এই প্রসঙ্গে বঙ্গভবনে যোগাযোগ করা হলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এখনও এ জাতীয় কোনও প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির দফতরে আসেনি। প্রস্তাব পাওয়া গেলে পরবর্তীতে তা জানানো হবে।’

এ বিষয়ে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) উপ-পরিচালক ও ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আবদুর রউফ জানিয়েছেন, স্বাভাবিক নিয়মে প্রধানমন্ত্রী বা সরকার প্রধান এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। আমরা সেভাবেই কাজ করছি। তবে এ বছরের বিষয়টি ভিন্ন। তাই আমরা বিকল্প প্রস্তাব নিয়েও ভাবছি। প্রধানমন্ত্রী সময় দিতে না পারলে হয়তো মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই মেলার উদ্বোধন করবেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মেলার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খুব দ্রুত এগুচ্ছে। কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। স্টল নির্মাণের কাজ অনেকটাই শেষ হয়েছে। এখন চলছে সাজগোছের প্রস্তুতি। স্টলে চলছে রঙ মারার কাজ, আর ধুলো থেকে রেহাই পেতে মাঠে চলছে পানি ঢালার কাজ।

প্রতিবছরের মতো এ বছরও রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের গণপূর্ত বিভাগের ৩১ দশমিক ৫৩ একর জমির খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এবারের বাণিজ্য মেলা।

আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রউফ জানিয়েছেন, অতীতের মতো এবারের মেলায়ও তৈরি পোশাক, হোমটেক্সটাইল, ফেব্রিক্স পণ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি ও উপহার সামগ্রী, চামড়াজাত পণ্য, সিরামিকের তৈজসপত্র, প্লাস্টিক পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী ও আসবাবপত্রের স্টল থাকছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলার গেট। মেলার আয়োজক হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, এবার মেলার প্রধান প্রবেশদ্বার মেট্রোরেলের আদলে করা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রস্তুতি শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রউফ।

ইপিবি আশা করছে, গতবারের চেয়ে এবার বিদেশিদের আগ্রহ অনেক বেশি। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হবে। দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেবে। মেলার দুই প্রান্তে সুন্দরবন ইকোপার্ক,ভেতেরে থাকবে মা ও শিশু কেন্দ্র, শিশুপার্ক, ই-পার্ক ও এটিএম বুথ। এবারের মেলায় স্থান পাবে সংরক্ষিত নারী স্টল ২০টি, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬০টি, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৩৮টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৮, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়িন ২৯টি, প্রিমিয়ার স্টল ৬৭টি, রেস্টুরেন্ট ৩টি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ৯টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ৬টি ও বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৬টি। দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে বাণিজ্য মেলায়। মেলায় এবার এ পর্যন্ত ৪৩টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। গতবারের থেকে এবার বিদেশিদের আগ্রহ অনেক বেশি।

স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, চীন, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ভুটান, নেপাল, মরিশাস, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, রাশিয়া, আমেরিকা, জার্মানি, সোয়াজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও হংকং।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর