thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

ফেনীতে ৫ কোটি টাকা নিয়ে কর্মকর্তা উধাও!

২০১৯ মার্চ ১৯ ১১:৫৮:২০
ফেনীতে ৫ কোটি টাকা নিয়ে কর্মকর্তা উধাও!

ফেনী প্রতিনিধি: ফেনীতে ঢাকা ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার (ক্রেডিট) গোলাম সাঈদ রাশেব (৩৫) গ্রাহকদের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় সোমবার (১৮ মার্চ) দিনভর ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ব্যাংকে ভিড় করতে দেখা গেছে।

১২ মার্চ শেখ আহম্মদ নামের এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৭০ লাখ টাকা তোলার মেসেজ আসে তার মোবাইলে। তিনি ব্যাংকে এসে চিৎকার শুরু করলে ম্যানেজার বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। ওই সময় রাশেবের গতিবিধি সন্দেহজন হলে ব্যাংকের ম্যানেজার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে বিষয়টি অবগত করেন। পরদিন রাশেব অফিসে এসে সকাল সাড়ে ১০টার পর বাইরে বের হয়ে যান। এরপর থেকে তিনি উধাও।

মাহবুবুল হক রিপন নামের এক গ্রাহক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরলতার সুযোগ নিয়ে অসংখ্য গ্রাহকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তা রাশেব।’

তার দাবি, প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন রাশেব। তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরাধনা এন্টারপ্রাইজের অধীনে ব্যাংকের এ শাখায় ৫ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। ঋণ সমন্বয়ের কথা বলে দু’টি ব্ল্যাংক চেক নেন রাশেব। পরে অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখা যায় এ দু’টি চেক ব্যবহার করে টাকাগুলো তুলে নিয়েছেন তিনি। তার ছোট ভাই ফজলুল হক পলাশের মুনতাসির এন্টারপ্রাইজের নামে থাকা অ্যাকাউন্ট থেকে একই কায়দায় ৪২ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন রাশেব।

ফেনী শহরের কাপড় ব্যবসায়ী অজয় কুমার বণিকের লোকের সঙ্গে যোগসাজাশে ৭০ লাখ টাকা এবং চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাচ্চুটি গ্রামের মোশাররফ হোসেন মজুমদারের ৮ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া সৌদি প্রবাসী দাউদ হোসেনের দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় এক কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর গ্রামের মাহবুবুল হক রিপনের অ্যাকাউন্ট থেকে ৩৪ লাখ টাকা তোলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে ব্যাংকটির ফেনী শাখার ভিপি আখতার হোসেইন সরকার বলেন, ‘প্রায় ১৫ জন গ্রাহক তাদের টাকা খোয়া গেছে মর্মে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সে হিসাবে ব্যাংকিং লেনদের মাধ্যমে ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ হতে পারে বলে ধারণা করছি আমরা। তবে রাশেবের সঙ্গে অনেক গ্রাহকের ব্যক্তিগত কোটি কোটি টাকা লেনদেন রয়েছে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংকের এ শাখায় প্রায় ৫ হাজার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ঠিক কতটি অ্যাকাউন্ট থেকে কত টাকা উত্তোলন হয়েছে এটি বলা মুশকিল। গ্রাহকরা মৌখিক ও লিখিতভাবে জানাচ্ছেন।’

ভিপি বলেন, ‘প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে আইটি এক্সপার্ট টিম এসেছে। তারা কাজ শুরু করছেন। আশা করি বিষয়টি চিহ্নিত করা যাবে।’

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানায়, প্রিন্সিপাল অফিসার রাশেব ৯ বছর ধরে এই শাখায় চাকরি করায় স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীদের আস্থাভাজন ছিলেন। গ্রাহকরা নির্দ্বিধায় তার কাছে চেক, নগদ অর্থ ও ঋণের কিস্তির টাকা দিয়ে যেতেন। সেই সুবাদে রাশেদ গ্রাহকদের কয়েক কোটি গ্রাহকদের হিসাবে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন।

রাশেবের বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মার্চ ১৯, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর