thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

নুসরাত হত্যা: খাল থেকে বোরকা উদ্ধার

২০১৯ এপ্রিল ২০ ১৭:০৬:২৭
নুসরাত হত্যা: খাল থেকে বোরকা উদ্ধার

ফেনী প্রতিনিধি: ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার সময় আসামি জোবায়ের যে বোরকা পরেছিল সেগুলো উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

রাফি হত্যা মামলার আসামি জোবায়েরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে বোরকাগুলো উদ্ধার করা হয়। শনিবার সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রার অদূরে কাশমির বাজার সংলগ্ন ডাঙ্গি খাল থেকে বোরকাটি উদ্ধার করে পিবিআই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পিবিআই’র পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানান, আসামির পরিহিত বোরকাটি এ হত্যা মামলার অন্যতম আলামত। উদ্ধার হওয়ায় এটি মামলাটির বিচার প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখবে।

এর আগে হত্যা মামলায় গ্রেফতার নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানা যায়,বোরকা পরে পাঁচজন এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল। তার একটি হচ্ছে এই বোরকা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) মনিকে নিয়ে তারা সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা ভবনের ছাদ ও বোরকার দোকান পরিদর্শন করেন।

নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা আসামি কামরুন নাহার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা।

এর আগে শুক্রবার দুপুর ১২টায় পিবিআই কর্মকর্তারা মনিকে নিয়ে প্রথমে উপজেলা সদরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় মানিক মিঞা প্লাজার একটি দোকানে যান, যেখান থেকে নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সময় আসামিদের পরনে থাকা বোরকাগুলো কেনা হয়েছিল। পরে তারা সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাদে যায়, যেখানে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়েছিল।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া পিবিআই দলের নেতৃত্বে দেন সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল।

এ ব্যাপারে মোহাম্মদ ইকবাল বলেন,‘মনিকে নিয়ে তদন্ত দল আরও কয়েকটি জায়গায় যাবে।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন। এ নিয়ে এখন আর কিছু বলা যাচ্ছে না।’

গত ১৬ এপ্রিল দুপুরে মনিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে আটক করা হয়। পরে গত ১৭ এপ্রিল দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফউদ্দিন আহমেদ মনিকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

গত ১৪ এপ্রিল রাতে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে আসামি নুর উদ্দিন জানায়, তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী উম্মে সুলতানা পপি গিয়ে নুসরাতকে মাদ্রাসা ভবনের ছাদে নিয়ে আসে। ওই সময় ছাদে মনিও ছিল।

প্রসঙ্গত গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করেছে, এমন সংবাদ দিলে সে (নুসরাত) ওই ভবনের তৃতীয় তলায় যায়। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫ জন ছাত্রী নুসরাতকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে কোরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজহারের আটজন গ্রেফতারসহ মোট ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন চারজন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাফি এ হত্যা মামলায় আটক সর্বশেষ আসামি। এ মামলায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকেও আটক করেছে পিবিআই।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/এপ্রিল ২০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর