thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১২ জুলাই 25, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২,  ১৬ মহররম 1447

যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠনের অগ্রগতি জানতে চায় হাইকোর্ট

২০১৯ মে ১৩ ১৭:২১:০৭
যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠনের অগ্রগতি জানতে চায় হাইকোর্ট

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠনের বিষয়ে কি অগ্রগতি হয়েছে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, আইন সচিব, নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাসচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১৮জন বিবাদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৩ মে) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ, সঙ্গে ছিলেন, আইনজীবী রেবেকা সুলতানা, ফিরোজা পারভিন লাকি, শরিফুল হক এবং ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম।

অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের সব কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ বিষয়ক কমিটি গঠন করতে এবং এ কমিটি কি ধরনের হবে এসব বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে একটি রায় দিয়েছিলেন। দীর্ঘ দিন পর ওই যৌন নীপিড়ন প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হয়েছে কিনা বা কি অগ্রগতি হয়েছে তা জানতে চেয়ে নতুন করে রিট দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে আদালত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে কমিটি গঠনের অগ্রগতি কেনো জানানো হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে কমিটি গঠন করা হয়েছে কিনা তার তালিকা চেয়ে গত ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। মানবাধিকার সংগঠন জেন্ডার প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট ছয়টি সংগঠনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ রিটটি দায়ের করেন।

২০০৯ সালের ১৫ মে যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞাসহ যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ কেন্দ্র গঠন এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ না করার কথাও বলা হয়েছে।

রায়ে বলা হয়, ‘দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে অভিযোগ কেন্দ্র থাকবে। এই অভিযোগ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে আর কমিটির প্রধান হবেন একজন নারী। এছাড়া, কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী সদস্য থাকবেন। কমিটি যৌন হয়রানির কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত ও অনুসন্ধান শেষে পুলিশের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠাবেন। এরপর দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অপরাধের ধরণ ও মাত্রা বুঝে বিচার বিভাগ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

রায়ে আরও বলা হয়, কমিটি নির্যাতন সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং পুলিশের কাছে অপরাধীকে না পাঠানো পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির কোনো পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না। রায়ে বলা হয়, যতদিন পর্যন্ত জাতীয় সংসদে যৌন হয়রানি রোধে কোনো আইন প্রণয়ন করা না হয় ততদিন বাংলাদেশ সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টের দেয়া এ নীতিমালা বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।

কর্মস্থল এবং শিক্ষাঙ্গনে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য দিকনির্দেশনা চেয়ে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের শুনানী শেষে ২০০৯ সালের ১৪ মে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।

(দ্য রিপেোর্ট/এনটি/মে ১৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর