thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

নির্বাচনের প্রস্তুতি আওয়ামী লীগের 

মনোনয়ন ফরম বিক্রি রবিবার

২০১৩ নভেম্বর ০৯ ২১:৫৬:২৮
মনোনয়ন ফরম বিক্রি রবিবার

আমানউল্লাহ আমান, দিরিপোর্ট২৪ : তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়; সর্বদলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের ওপর দাঁড়িয়ে আগামী ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করলেই ক্ষমতাসীন এই দলটি নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়বে। এ লক্ষে দলটি রবিবার থেকে মনোনয়নের আবেদনপত্র বিক্রিও শুরু করে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস।

তিনি বলেন, ওইদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু করে প্রতিদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত আগ্রহী প্রার্থীদের নিকট দলীয় মনোনয়নের আবেদনপত্র বিক্রি এবং জমা নেওয়া হবে। রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হতে নির্ধারিত ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মনোনয়নের আবেদনপত্র (ফরম) সংগ্রহ করতে এবং জমা দিতে পারবেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি সূত্রে জানা যায়, আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে দলের ইশতেহার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে ইশতেহার চূড়ান্ত করে ছাপানোর জন্য ছাপাখানায় পাঠানো হবে। প্রচার উপ-কমিটির অধিনে কাজ করছে ২৮টির মত বিজ্ঞাপন কোম্পানী।

সূত্রটি জানায়, এবার নির্বাচনী প্রচারণায় গুরুত্ব পাবে ইন্টারনেটভিত্তিক প্রচার। এই প্রচারের অংশ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান সিদ্দিকী ববি।

এ বিষয়ে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ দিরিপোর্ট২৪কে বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এবার ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, অনলাইন মিডিয়া, সোস্যাল মিডিয়াসহ সমস্ত মিডিয়া ব্যবহার করে বহুমাত্রিক প্রচার-প্রচারণা করা হবে। প্রচারণার মাধ্যমে সরকারের সফলতা তুলে ধরার পাশাপাশি বিরোধী দলের ধ্বংসাত্মক জ্বালাও-পোড়াও এবং অতীতে তাদের ব্যর্থতাগুলো তুলে ধরা হবে যাতে মানুষ তুলনা করতে পারে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সর্বদলীয় সরকার গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। আগামী সোমবারের মধ্যে মন্ত্রিসভার সকল সদস্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। ইতোমধ্যে বুধবার ও বৃহস্পতিবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দিরিপোর্ট২৪কে বলেন, শনিবার প্রধানমন্ত্রীর নিকট পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। নিয়ম অনুযায়ী সবারই পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। সর্বদলীয় সরকারে মন্ত্রী হিসেবে কাদের রাখবেন আর কাদের বাদ দেবেন- এটা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। কারণ সাংবিধানিকভাবে তিনিই এ সরকারের প্রধান হবেন।

সর্বদলীয় সরকারে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নাম শোনা যাচ্ছে।

এছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদও থাকতে পারেন।

জানা যায়, আগামী ১৪ নভেম্বর কলম্বোতে অনুষ্ঠেয় কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে শ্রীলঙ্কা যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন ১৭ নভেম্বর। তারপর ১৮ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠক করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া পারিবারিক চিকিৎসার কারণে দুদিনের জন্য দেশের বাইরে থাকবেন। তিনি দেশে ফিরলেই সর্বদলীয় সরকার গঠনের সকল আনুষ্ঠানিকতার কাজ শেষ হবে। তফসিল ঘোষণার পরপরই দায়িত্ব নেবেন সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রীরা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ দিরিপোর্ট২৪কে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী ১৪ নভেম্বর শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগেই মন্ত্রিসভার সব সদস্য পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।

আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকটি সূত্র জানায়, সর্বদলীয় ওই সরকারের সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট করতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবে বিরোধী দল সর্বদলীয় মন্ত্রিসভায় যোগ দিলে তা সর্বোচ্চ ১৮ সদস্যবিশিষ্ট করতে চায় দলটি। সবমিলিয়ে আগামী ২৪-২৬ নভেম্বর নাগাদ তফসিল ঘোষণার পাশাপাশি সর্বদলীয় মন্ত্রিসভাও গঠন করার পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ।

এক্ষেত্রে প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে না আসলে নির্বাচন দেশে-বিদেশে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে এব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টাম-লীর সদস্য বলেন, সরকারের মেয়াদে এ পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে কেউ সেগুলোতে কোন কারচুপি কিংবা অস্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলতে পারেনি। এছাড়া পৃথিবীর গণতান্ত্রিক চর্চার প্রত্যেক দেশে ক্ষমতাসীন সরকারে অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। তবে ২৯ ও ৩০ নভেম্বর শুক্র ও শনিবার হওয়ায় ২৮ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্রথমে না করা, এটা বিরোধী দলের স্বভাব। তারা শেষে হলেও নির্বাচনে আসবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো: শাহনেওয়াজ দিরিপোর্ট২৪কে জানান, নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে নয়তো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করতে হবে।

তিনি বলেন, তবে আমরা শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব যাতে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন করতে পারি। তবে এ সময়ের মধ্যে কোনো দল নির্বাচনে না এলেও আমাদের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। কারণ সংবিধানের বাইরে যাওয়া কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়।

(দিরিপোর্ট২৪/এসবি/ এমডি/নভেম্বর ০৯, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর