thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ 25, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১,  ৬ রমজান 1446

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র ছায়াযুদ্ধ: সামরিক শক্তি কার কেমন?

২০২০ জানুয়ারি ০৪ ১২:২৩:৩৫
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র ছায়াযুদ্ধ: সামরিক শক্তি কার কেমন?

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বছরের একেবারে শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনা যুদ্ধের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। ইরানের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই ইরানপন্থী আরেক কমান্ডারকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হচ্ছে ৩ হাজার মার্কিন সেনা। অন্যদিকে ইরানও আকাশসীমায় যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। যেকোনভাবে সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। বিশ্বের দুই অঞ্চলের ক্ষমতাধর এই দুই দেশের মধ্যে চূড়ান্ত যুদ্ধ শুরু না হলেও ছায়াযুদ্ধ কিন্তু ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে দেখে নেওয়া যাক ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি কার কেমন?

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি

কোনো ধরনের বিতর্ক ছাড়াই বিশ্বে সামরিক শক্তিতে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। জলে, স্থলে, আকাশে মার্কিনিদের টেক্কা দিতে পারার মতো সক্ষমতা এখন পর্যন্ত কোনো দেশেরই নেই। এর কারণও আছে। মার্কিনিরা তাদের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিশাল এক বাজেট রাখে, যার পরিমাণ ৭১৬ বিলিয়ন ডলার। তবে নিজ দেশ থেকে বহুদূরে গিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের মুখোমুখি হতে হলে দেশটিকে বেশ বেগ পেতে হবে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সামরিক শক্তি-

সেনাবাহিনী
মার্কিন সেনাবাহিনীতে সক্রিয় সেনা সদস্যের সংখ্যা ১২ লাখ ৮১ হাজার ৯০০ জন। এছাড়া সংরক্ষিত রয়েছে আরও ৮ লাখ ১১ হাজার জন। সেনাবাহিনীতে ট্যাংক রয়েছে ৬ হাজার ৩৯৩টি। সাঁজোয়া যানের (আর্মরড ফাইটিং ভেহিকল) সংখ্যা ৪১ হাজার ৭৬০টি। সেনাসদস্যের ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কামান রয়েছে ৩ হাজার ২৬৯টি। পাশাপাশি ৯৫০টি সংক্রিয় কামান (সেলফ প্রপেলড আর্টিলারি) ও ১ হাজার ১৯৭টি রকেটচালিত কামান (রকেট আর্টিলারি) রয়েছে।

বিমানবাহিনী
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর ক্ষমতা বিশ্বে প্রথম স্থানে। দেশটির বিমানবাহিনীর মোট আকাশযানের সংখ্যা ১৩ হাজার ৩০৪টি। এর মধ্যে রয়েছে-ফাইটার বিমান ২ হাজার ৩৬২টি, অ্যাটাক বিমান ২ হাজার ৮৩১টি, হেলিকপ্টার ৫ হাজার ৭৬০টি ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে ৯৭১টি। যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্বের সেরা স্টেলথ ফাইটার (রাডারে ধরা না পড়ে আক্রমণ করতে সক্ষম) এফ-২২ ও এফ ৩৬। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও পরিবহনের জন্য উড়োজাহাজ রয়েছে বাহিনীটির।

নৌবাহিনী
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে মোট যানের সংখ্যা ৪১৫টি। এর মধ্যে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার রয়েছে ২৪টি, ফ্রিগেট রয়েছে ২২টি, ডেস্ট্রয়ার রয়েছে ৬৮টি, করভেট রয়েছে ১৫টি ও সাবমেরিন রয়েছে ৬৮টি। এছাড়া পেট্রোল বোট ১৩টি ও মাইন ওয়্যাফেয়ার রয়েছে ১১টি।

ইরানের সামরিক শক্তি
সামরিক শক্তিতে ইরানের অবস্থান ১৪তম। মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির অবস্থান খুবই শক্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোকে একহাত নেওয়ার ক্ষমতা আছে ইরানের। ইরানের ডিফেন্স বাজেট ৬৩০ কোটি ডলার। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দেশটির বর্তমান সামরিক শক্তি-

সেনাবাহিনী
ইরানের বর্তমান সক্রিয় সেনাসদস্য ৫ লাখ ২৩ হাজার। এছাড়া সংরক্ষিত সদস্য রয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার জন। দেশটির ট্যাংকের সংখ্যা ১ হাজার ৬৩৪টি। সাঁজোয়াযানের (আর্মরড ফাইটিং ভেহিকল) সংখ্যা ২ হাজার ৩৪৫টি। সেনাসদস্যের ব্যবহারের জন্য কামান (টোয়েড আর্টিলারি) রয়েছে ২ হাজার ১২৮টি। পাশাপাশি ৫৭০টি সংক্রিয় কামান (সেলফ প্রপেলড আর্টিলারি) ও ১ হাজার ৯০০টি রকেটচালিত কামান (রকেট আর্টিলারি) রয়েছে।

বিমানবাহিনী
ইরানের বিমানবাহিনীর মোট আকাশযানের সংখ্যা ৫০৯টি। এর মধ্যে রয়েছে-ফাইটার বিমান ১৪২টি, অ্যাটাক বিমান ১৬৫টি, হেলিকপ্টার ১২৬টি ও অ্যাটাক হেলিকপ্টার ১২টি। পাশাপাশি প্রশিক্ষণের জন্য ১০৪টি ও পরিবহনের জন্য ৯৮টি উড়োজাহাজ রয়েছে বাহিনীটির। ইরানের হাতে এখন পর্যন্ত স্বীকৃত কোনো স্টেলথ ফাইটার বিমান নেই।

নৌবাহিনী
ইরানের নৌবাহিনীতে এখন পর্যন্ত যোগ হয়নি কোনো এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার। বাহিনীটিতে ফ্রিগেট রয়েছে ছয়টি, করভেট রয়েছে তিনটি এবং সাবমেরিন রয়েছে ৩৪টি। নেই কোনো ডেস্ট্রয়ার। তবে ইরানের ৮৮টি পেট্রোলবোট ও তিনটি মাইন ওয়্যাফেয়ার রয়েছে।

পারমাণবিক শক্তির তুলনা
যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ হলেও এখন পর্যন্ত ইরানের বোমা নেই বলে ধারণা করা হয়। মার্কিনিদের হাতে ৭ হাজার ২০০টি পারমাণবিক বোমা রয়েছে। তাই পারমাণবিক শক্তির দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জানুয়ারি ০৪,২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর