thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ 25, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১,  ৬ রমজান 1446

করোনার প্রথম সতর্কবার্তা দেওয়া সেই চিকিৎসকের মৃত্যু

২০২০ ফেব্রুয়ারি ০৭ ১১:৩৫:০১
করোনার প্রথম সতর্কবার্তা দেওয়া সেই চিকিৎসকের মৃত্যু

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: মারাত্মক করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে যে চীনা চিকিৎসক সর্বপ্রথম সতর্ক বার্তা দিয়েছিলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। তিনি যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন, সেখান থেকে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। লি ওয়েনলিয়াং নামে ওই চিকিৎসক উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালে কাজ করার সময় ভাইরাসে আক্রান্ত হন।

তিনি ৩০শে ডিসেম্বর সহকর্মীদের কাছে একটি সতর্ক বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তবে পুলিশ তাকে ‘মিথ্যা মন্তব্য করা’ বন্ধ করতে বলে।

তার মৃত্যুর বিষয়ে পরস্পরবিরোধী সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল, কিন্তু পিপলস ডেইলি এখন জানিয়েছে যে শুক্রবার তিনটার দিকে তিনি মারা যান।

জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চীনের মূল ভূখণ্ডে ভাইরাসটির প্রকোপে এখন পর্যন্ত ৬৩৬জনের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে মোট ৩১ হাজার ১৬১জন।

কীভাবে পাওয়া গেল মৃত্যুর খবর?
গ্লোবাল টাইমস, পিপলস ডেইলি এবং অন্যান্য চীনা গণমাধ্যম বৃহস্পতিবার ডা. লি-এর মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল। ৩৪ বছর বয়সী ডা. লিকে, স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ প্রাথমিকভাবে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল এবং এই খবরটি চীনা সামাজিক মাধ্যম ওয়েইবোতে ঝড় তুলে দেয়।

পিপলস ডেইলি একটি টুইট করে করে জানিয়েছে যে ডা. লি এর মৃত্যু ‘জাতীয় শোক’ ছড়িয়ে দিয়েছে।

তবে গ্লোবাল টাইমস তখনও বলেছিল যে ড. লি`কে `ইসিএমও (এক্সট্রা-কর্পোরাল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন)` নামে পরিচিত একটি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

যার মাধ্যমে একজন রোগীর হার্টকে পাম্প করে সচল রাখা হয় এবং রক্তে অক্সিজেনের পরিবহন বজায় রাখা হয় যেন তা ফুসফুসের মধ্যে চলে না যায়।

গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছিল যে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিক এবং চিকিৎসকরা, যারা তাদের নাম ব্যবহার করতে চান না, তারা বিবিসি এবং অন্যান্য গণমাধ্যমকে বলেছেন যে সরকারী কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করেছেন।

সরকারী সংবাদমাধ্যমগুলোকে বলা হয়েছে যেন তারা তাদের প্রতিবেদন পরিবর্তন করে এবং জানায় যে, ডা. লিকে এখনও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পরে সংবাদমাধ্যমগুলো ডা. লি`র মৃত্যুর নতুন সময়টি জানায়। চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, করোনাভাইরাস দ্বারা নিহতদের বেশিরভাগের বয়স ৬০ বছরের উপরে। যারা অন্যান্য সমস্যায় ভুগছিলেন। তবে ডা. লি এর মেডিকেল ইতিহাস জানা যায়নি।

লি ওয়েনলিয়াং এর গল্প
চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. লি করোনাভাইরাস নিয়ে তার প্রাথমিক সতর্কবার্তা পাঠানোর এক মাস পরে তিনি হাসপাতালের বিছানা থেকে ওয়েইবোতে তাঁর গল্প পোস্ট করেন।

তিনি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সাতটি ঘটনা লক্ষ্য করে দেখতে পান যে সেটি অনেকটা সার্সের মতো - যে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ২০০৩ সালে বিশ্বব্যাপী মহামারী তৈরি হয়েছিল।

৩০শে ডিসেম্বর তিনি একটি চ্যাট গ্রুপে তার সহকর্মী ডাক্তারদের একটি সতর্ক বার্তা পাঠান। সেখানে তিনি সবাইকে সংক্রমণ এড়াতে প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরার কথা বলেন।

চার দিন পরে তাকে জননিরাপত্তা ব্যুরোতে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে তাকে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছিল। ওই চিঠিতে তাঁর বিরুদ্ধে "মিথ্যা মন্তব্য করার" অভিযোগ করা হয় যা "সামাজিক শৃঙ্খলাকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করেছে"।

তিনি ওই আটজনের মধ্যে একজন ছিলেন যাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ‘গুজব ছড়িয়ে দেওয়ার’ অভিযোগে তদন্ত করেছিল।

পরে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ডা. লি`র কাছে ক্ষমা চান।

ডা. লি তার ওই ওয়েইবো পোস্টে ব্যাখ্যা করেন যে ১০ই জানুয়ারি তিনি কীভাবে কাশি শুরু করেন, পরের দিন তার জ্বর হয় এবং দুদিন পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। ৩০শে জানুয়ারী তার শরীরে সনাক্ত হয় করোনাভাইরাস।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ফেব্রুয়ারি ০৭,২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর