thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি 25, ২৫ মাঘ ১৪৩১,  ৮ শাবান 1446

বেসরকারি হাসপাতালগুলো সরকারকে করোনা চিকিৎসায় সহযোগিতা দেবে

২০২০ এপ্রিল ১২ ২০:১৪:৫৭
বেসরকারি হাসপাতালগুলো সরকারকে করোনা চিকিৎসায় সহযোগিতা দেবে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত দেশের সব বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ক্লিনিক। একইসাথে সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে তারা সহায়তা করবে।

রোবাবার দুপুরে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে প্রতিষ্ঠানটির চেয়াম্যান ড. আনোয়ার হোসেন খান এমপির উদ্যোগে বিভিন্ন হাসপাতাল, ডায়গনস্টিক সেন্টারের মালিকবৃন্দ সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতার ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেন।

অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) সভাপতি এম এ মুবিন খানসহ সংঠনটির নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ আই হাসপাতালের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, পপুলার হাসপাতালের এমডি মোস্তাফিজুর রহমান, ল্যাব এইড হাসপাতালের এমডি ডা. শামীম, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজের এমডি আশিষ কুমার চক্রবর্তী, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মাহফুজুর রহমান, জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের এমডি প্রফেসর সরদার নাদিম, ল্যাব এইড হাসপাতালের এমডি ডা. শামীম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, করোনা চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট হাসপাতাল প্রয়োজন। সকল হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা প্রদান করলে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে। এজন্য করোনা পজেটিভ এবং সাধারণ রোগীদের আলাদা আলাদা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন।

দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, সরকারি-বেসরকারিভাবে যারা মেডিকেল সেক্টরে কাজ করছেন আমি আশা করবো তাদের যেন সময় মত বেতন দেয়া হয়। তাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, মমতা, আদর, স্নেহ তারা যেন পায়। কোভিড ১৯ এর ভীতি পৃথিবীর সবার মধ্যে আছে। এই ঝুঁকি জেনেই তারা কাজ করতে আসছে। বেরকারি মেডিকেলের পক্ষ থেকে আমরা ঘোষণা পেয়েছি, সরকার যখন যে নির্দেশনা দেবে, সেটা পালন করতে তারা প্রস্তুত। কোভিড ১৯ মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি তাদের সহযোগিতার হাত সব সময় প্রসারিত।

তিনি বলেন, একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে, কোভিড ১৯ এবং নন কোভিড ১৯ রোগী কোনোভাবেই এক করা যাবে না, কোনো ইনিস্টিটিউট বা কোনো প্রতিষ্ঠানে। তাহলে ক্রস ইনফেকশন হবে। সাধারণ রোগীরা ইনফেকটেড হবে। এজন্য এটা খেয়াল রাখতে হবে। যেখানে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা হবে, সেখানে অন্য কোনো রোগীর যাতায়াত না হয়। আর যেখানে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা হবে, সেখানে যেন করোনা রোগীকে কোনো একসেস না দেই। কারণ বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগী চারশ’র বেশি। কিন্তু সাধারণ রোগীর সংখ্যা লাখ লাখ। আমরা কয়েকশ রোগীর জন্য লাখ লাখ রোগীকে ইনফেকটেড করতে পারি না। এটা আমাদের একটি দায়িত্ব।

আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়াম্যান ড. আনোয়ার খান (এমপি) বলেন, সারা বিশ্ব আজ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, বাংলাদেশ আক্রান্ত। পৃথিবীর মানুষ এই ভাইরাস মোকাবেলায় সঠিক দিক নির্দেশনা পাচ্ছে না। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দশানা অনুযায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে করোনা মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছি। এটি মোকাবেলার ক্ষেত্রে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রষণালয়কে সহায়তা করে যাচ্ছি। আমরা বেসরকারি মেডিকেলের পক্ষ থেকে ৫ হাজার পিপিই এবং ৫০০ ডাক্তারের লিস্ট পাঠিয়েছি। সম্প্রতি আমাদেরকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। সেখানে বেসরকারি মেডিকেলগুলো করোনা মোকাবেলায় কী কী অবদান রাখতে পারে সে ধরনের দিক নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী আমাদের দিয়েছেন। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, সরকারি মেডিকেলের পাশাপাশি বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো দেশের একটা বড় অংশকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। তাই আমারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষের জন্য কিভাবে কাজ করবো, সরকারকে কিভাবে সহায়তা করবো সে বিষয়ে সরকারকে একটি রূপরেখা দেয়ার জন্য এবং সকলের মতামত নেয়ার জন্য আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি। আমরা সরকারকে সাহায্য করতে চাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় আমাদের রূপরেখার ভিত্তিতে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর বলেন, সেপারেড সেলের কথা আমরা আগেই চিন্তা করেছি। এটি আমরা দু-এক দিনের মধ্যেই এটি করবো। বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে কোরিলেশনের আওতায় নিয়ে এবং হেল্থের যে কোরিলেশন সেল রয়েছে তাদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাসপাতলে বিভিন্ন রোগী আসেন। করোনার উপসর্গ নিয়ে কোনো রোগী আসলে যিনি কনসালটেড করেন তার অবশ্যই সেল্ফ প্রটেকশনের প্রয়োজন রয়েছে। রোগীরও একইভাবে প্রটেকশনের প্রয়োজন রয়েছে। আমার কাছে ভালো লেগেছে যে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো সাধ্যমত সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে। আমি বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরেছি, অনেকের সাথে কথা বলেছি।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বলেন, করোনা পজেটিভ এবং করোনা নেগেটিভ রোগীদের সমন্বয় করা হবে। আমি মনে করি আমাদের ট্রিটমেন্টের অভাব নেই। এই সেক্টরের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে করোনা মোকাবেলা করতে পারবো। শুধু ডাক্তার বা নার্স নয়, এর সাথে জড়িত সবাই দক্ষভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।

বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) সভাপতি এম এ মুবিন খান বলেন,করোনা মোকাবেলায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসছে। এটা প্রমাণিত হয়েছে সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল ২৪ ঘন্টা খোলা রয়েছ এবং করোনা ছাড়া সব ধরণের সেবা দেয়া হচ্ছে। তবে একটা বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বেসরকারি মেডিকেল কোন রোগী দেখছে না। বেসরকারি মেডিকেলগুলো সেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি সরকারি বেসরকারি সবাই এক সাথে এগোতে হবে। যদি কোন কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয় তবে আমরা সবাই এক সাথে মোকাবেলা করতে পারবো বলে আশা করি।

এছাড়া অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, মডার্ণ গ্রুপ অব হেলথ কোম্পানিজ এর উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) আশরাফ আব্দুল্লাহ ইউসুফ, আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা, এখলাসুর রহমান, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতলের প্রধান নির্বাহী আল ইমরানসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়গনেস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১২এপ্রিল,২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর