thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২২ জানুয়ারি 25, ৯ মাঘ ১৪৩১,  ২২ রজব 1446

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী যেমন কাটলো শাওনদের

২০২০ জুলাই ১৯ ২০:১২:৩৯
হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী যেমন কাটলো শাওনদের

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গাজীপুরের নূহাশপল্লীতে রোববার সকালে প্রয়াত লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, শাওনের বাবা, নূহাশপল্লীর কর্মচরী ও হুমায়ূন ভক্তসহ হিমু পরিবহনের সদস্যরা কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ করেন। পরে তারা হুমায়ূন আহমেদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এবার হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীতে সীমিত পরিসরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এবার তার ভক্তদের উপস্থিতিও তেমন বেশি ছিল না।

বেলা এগারটার দিকে মেহের আফরোজ শাওন তার দুই ছেলে নিশাত ও নিনিতসহ পরিবারের সদ্যদের নিয়ে নূহাশপল্লীতে আসেন।সাড়ে ১১টার দিকে মেহের আফরোজ শাওন, ছেলে নিশাত, নিনিত, শাওনের বাবা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী ও নূহাশপল্লীর কর্মচারী হুমায়ূন ভক্তরা কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং হুমায়ূনের কবর জিয়ারত করেন।

লেখকের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন স্থানীয় মসজিদের মাওলানা মজিবুর রহমান।

গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামে চির নিদ্রায় শায়িত প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নের নূহাশপল্লীতে সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হুমায়ূনভক্ত এবং তার শুভাকাঙ্খীরা আসতে শুরু করেন। নূহাশপল্লীর লিচু তলায় চির নিদ্রায় শায়িত প্রিয় লেখকের কবর জিয়ারত শেষে ঘুরে দেখছেন প্রিয় লেখকের নিজের হাতে গড়া নূহাশপল্লীর নানা স্থাপনা।দর্শনার্থীদের নানা প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন নূহাশপল্লীর কর্মীরা। তারা তাদের প্রিয় স্যারের সঙ্গে স্মরণীয় বিভিন্ন মূহুর্তের স্মৃতিচারণ করছেন।

নূহাশপল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং সৃজনশীল প্রকাশক ও পরিষদের কয়েকজন নেতৃবৃন্দ। এদের মধ্যে অন্য প্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজাহারুল ইসলাম, কাকলী প্রকাশণীর সেলিম আহমেদ, অন্বেষা প্রকাশনীর শাহাদাৎ হোসেন, কাঠপেন্সিল প্রকাশনীর এসকে চৌধুরী, অভিনেতা সিরাজুল কবির কমল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেন, প্রতিবছর বিভিন্ন এতিমখানার এতিমদের নিয়ে কোরআনখানির ব্যবস্থা করা হতো। এবার তা সীমিত আকারে হয়েছে। কোরআনখানি ও আপ্যায়ন করতে যে টাকা ব্যয় হতো সেই টাকাগুলো করোনাকালে মধ্যবিত্ত ও নিন্ম মধ্যবিত্ত লোক ইতোমধ্যে যারা চাকরি হারিয়ে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেছন এমন লোকদের এক মাস ধরে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে খুঁজে বের করে দুইশত পরিবারের মাঝে প্রদান করা হয়েছে।

তিনি নূহাশপল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের কবরের কাছে একটি যাদুঘর নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেন, নূহাশপল্লী একটি পারিবারিক সম্পদ। পারিবারিক সম্পত্তির মধ্যে এ রকম কিছু একটা করতে হলে পরিবারের সবার মতামত নিতে হবে। ওই জায়গাটিতে এখনও আমি অপারগ হয়ে আছি। আমি এখনও সবাইকে একত্র করতে পারিনি। পারিবারিক সমন্বয়হীনতার কারণে যাদুঘরটি নির্মাণ কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি পরিবারে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যাদুঘরটি নির্মাণ করার।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, যাদুঘর নূহাশপল্লীতেই হবে এটা নিশ্চিত করে বলছি।

হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতিচারণ করে শাওন বলেন, বর্ষাকে তিনি উদযাপন করতেন। আমরা বৃষ্টিতে ভিজি আর তিনি বর্ষা উদযাপন করতেন। যা তার ভক্তরাও জানে। বৃষ্টি নিয়ে তার অনেক গান রয়েছে, অনেক লেখা রয়েছে। তার চলচ্চিত্রেও বর্ষাকে তিনি তুলে ধরেছেন।

হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ডাক নাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। আর মা ছিলেন গৃহিণী। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।

কথাসাহিত্যিক জাফর ইকবাল তার ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক। হুমায়ূন আহমেদ ২০১২ সালের ১৯ জুলাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আমেরিকার নিউইয়র্কে একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৯জুলাই, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জলসা ঘর এর সর্বশেষ খবর

জলসা ঘর - এর সব খবর