thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৭ জমাদিউল আউয়াল 1446

বিদেশি শ্রমিকদের ‘কাফালা’ পদ্ধতির পরিবর্তন আনছে সৌদি

২০২০ নভেম্বর ০৫ ১৬:১৮:৪৩
বিদেশি শ্রমিকদের ‘কাফালা’ পদ্ধতির পরিবর্তন আনছে সৌদি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিদেশি শ্রমিকদের জন্য এতদিন কাফালা পদ্ধতি বাধ্যতামূলক থাকলেও এ বিষয়টির পরিবর্তন আনছে সৌদি আরব।সৌদি সরকার বলছে, এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে তারা কাজের পরিবেশের উন্নয়ন এবং দক্ষতা বাড়াতে চায়। খবর বিবিসির

সৌদি আরব ঘোষণা করেছে যে প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তিতে যেসব বিধিনিষেধ রয়েছে, সেগুলোর কিছু কিছু তারা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব চুক্তির বলে প্রায় এক কোটি বিদেশী শ্রমিকের জীবনের নানা সিদ্ধান্তের নিয়ন্ত্রণ ছিল নিয়োগদাতাদের হাতে।

যেসব সংস্কার আনা হচ্ছে, তাতে করে বেসরকারীখাতে কর্মরত বিদেশি কর্মীরা তাদের চাকরি পরিবর্তন এবং নিয়োগদাতার অনুমতি ছাড়াই সৌদি আরব ত্যাগ করার স্বাধীনতা পাবেন।

চলমান 'কাফালা' নিয়ে অভিযোগ আছে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর। তাদের মতে, বর্তমানে চালু কাফালা পদ্ধতি শ্রমিকদের নির্যাতন ও শোষণের সুযোগ করে দেয়।

একজন মানবাধিকার কর্মী বলেন, যে সংস্কার আনা হচ্ছে তা তাৎপর্যপূর্ণ। তবে তিনি সতর্ক করে দেন যে কাফালা পদ্ধতির কিছুটা রয়ে যাচ্ছে এবং এটি পুরোপুরি বিলুপ্ত করা উচিত।

সৌদি আরবের জনশক্তি মন্ত্রণালয় বলছে, শ্রম সংস্কারের এই উদ্যোগ বুধবারে ঘোষণা করা হয়েছে, যা বেসরকারীখাতের বিদেশি সব শ্রমিকের জন্য প্রযোজ্য হবে এবং এটি কার্যকর হবে আগামী মার্চ মাস থেকে। এর ফলে কোন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই শ্রমিকরা চাকরি পরিবর্তন করতে বা সৌদি আরব ত্যাগ করতে পারবেন। এছাড়া, এসব শ্রমিক নিয়োগকারীর অনুমতি ছাড়াই সৌদি আরবের বাইরে ভ্রমণ করতে পারবেন।

বিদেশি শ্রমিকরা সরকারী সেবার জন্য সরাসরি আবেদন করতে পারবেন, আর তাদের চুক্তি ডিজিটাল পদ্ধতিতে লিপিবদ্ধ থাকবে।

সৌদি আরবের জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন নাসের আবু থুনাইন সাংবাদিকদের বলেন, 'এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা একটি আকর্ষণীয় শ্রমবাজার গড়ে তুলতে চাই, আর চাই কাজের পরিবেশকে উন্নত করতে।'

তেল-নির্ভর এই দেশটির অর্থনীতি আরও বহুমুখীকরণ করতে যে ভিশন-২০৩০ নেয়া হয়েছে, তার লক্ষ্য অর্জনে এই সংস্কার কার্যক্রম সহায়তা করবে বলে তিনি মনে করেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জ্যেষ্ঠ গবেষক রোথনা বেগম বলেন, এই ঘোষণা তাৎপর্যপূর্ণ এবং এটা প্রবাসী শ্রমিকদের পরিস্থিতি উন্নয়নে সাহায্য করতে পারে। তবে এর মাধ্যমে কাফালা পদ্ধতির পুরো বিলুপ্তি ঘটেনি।

রোথনা বলেছেন যে, সৌদি আরবে ঢুকতে একজন শ্রমিককে এখনও একজন নিয়োগকারীর প্রয়োজন হবে বলে মনে হচ্ছে, এবং নিয়োগকারীরা শ্রমিকদের আবাসন অনুমতি নবায়ন বা যেকোনো সময় তা বাতিলের ক্ষমতা রাখবেন।

তিনি বলেন, 'এর মানে হচ্ছে শ্রমিকরা এখনও নির্যাতন ও শোষণের শিকার হতে পারেন, কারণ নিয়োগকর্তাদের এই ক্ষমতা থাকবে। এছাড়া, কাফালায় এই সংস্কার বাসাবাড়িতে কাজ করা বিদেশি শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বলে মনে হচ্ছে- এরা হচ্ছে দেশটিতে যারা সবচেয়ে বেশি নিগ্রহের শিকার হয়, তাদের মধ্যে অন্যতম।'

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে সৌদি আরবে বহু লোক তাদের গৃহকর্মীকে কোনো ছুটি না দিয়ে দিনের পর দিন কাজ করিয়েছে, বেতন দেয়নি, অথবা তাদের ঘরেই আটকে রাখে। তিনি বলেন, অনেক গৃহকর্মী আবার শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন।

তিনি বলেন, 'সৌদি আরবে কয়েক লক্ষ কর্মী আছে যাদের কাগজপত্র নেই এবং কর্তৃপক্ষ বলেনি যে তাদের ক্ষেত্রে ঠিক কী হবে। তাদেন নিয়মিত করা হবে কি-না, কিংবা তারা নতুন নিয়োগকর্তা খুঁজে পাবে কি-না।'

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৫নভেম্বর , ২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর