thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৫ জমাদিউল আউয়াল 1446

মাইন্ড এইড হাসপাতালের কোনো অনুমোদন নেই: পুলিশ

২০২০ নভেম্বর ১০ ১৬:১৪:১৭
মাইন্ড এইড হাসপাতালের কোনো অনুমোদন নেই: পুলিশ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম হত্যায় জড়িত রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালের কোনো অনুমোদন নেই বলে জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ।

মঙ্গলবার শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

ডিসি হারুন বলেন, রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালের কর্মীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত আনিসুল করিমের আচরণে কিছুদিন ধরে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তিনি চুপ চাপ হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। কিন্তু কী করে তাকে আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে নেয়া হলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাকে যখন মাইন্ড এইড হাসপাতালে নেয়া হয়, তখন তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। কিন্তু কিছু সময় পরেই তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। একটু পরে তার শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়।

ডিসি হারুন বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে আমরা দেখলাম ১০ থেকে ১২ জন লোক কেউ তাকে মাথায় আঘাত করছে, কেউ তাকে দুই হাত পিছমোড়া করে বাঁধার চেষ্টা করছে। তাকে বিভিন্নভাবে জোর করে নিয়ে যাচ্ছে। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে স্পষ্টভাবে আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। যে ১০-১২ জন লোক তাকে বেঁধেছে তাদের মধ্যে একজন ম্যানেজিং ডিরেক্টর, একজন কো-অর্ডিনেটর ও হাসপাতালের আরও ৭ থেকে ৮ জনকে দেখা গেছে। তবে এদের মধ্যে কেউ ডাক্তার নেই। সরাসরি নির্যাতনের সঙ্গে যে ১০ জন ছিল তাদেরকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।

সংবাদ সম্মেলন ডিসি হারুন অর রশিদ আরও বলেন, এই হাসপাতালের মানসিক রোগীদের সেবার জন্য ডাক্তার নেই। হাসপাতাল চালানোর জন্য মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সসহ যা দরকার তার কিছুই নেই। মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থেকে একজন রোগী কীভাবে এই প্রাইভেট হাসপাতালে গেল সেটি তদন্ত করা হচ্ছে। এতে কোনো দালাল জড়িত আছে কি না সেটিও আমরা তদন্ত করছি।

ডিসি হারুন আরও বলেন, হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়, কো-অর্ডিনেটর, ম্যানেজারসহ যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আমাদের পুলিশের একজন কর্মকর্তা সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম নিহত হয়েছেন এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক আইনের আওতায় আনা হবে। এই হাসপাতালের পাশাপাশি যদি সরকারি হাসপাতালের কেউ জড়িত থাকে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। আদাবর, মোহাম্মদপুর, শেরেবাংলা নগরের বেশ কিছু অসাধু অ্যাম্বুলেন্স চালক রয়েছেন যারা সাধারণ রোগীদের সরকারি হাসপাতালে না নিয়ে এই সব ভূঁইফোড় হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে আনা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, আমরা বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি সরকারি হাসপাতালের অনেকেই জড়িত এখানে রোগী পাঠানোর সঙ্গে। তাদের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। আপনাদের সে বিষয়ে আমরা জানাবো। মাইন্ড এইড হাসপাতালে কিছু রোগী আছে। তারা চলে গেলেই আমরা হাসপাতালটি বন্ধ করে দেব।

আনিসুল করিম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মাইন্ড এইড হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন শেফ মাসুদ, ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান, ওয়ার্ডবয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজিব চৌধুরী, অসীম চন্দ্রপাল, মোহাম্মদ লিটন আহম্মদ ও সাইফুল ইসলাম পলাশ।

সোমবার মাইন্ড এইড হাসপাতালে বরিশাল মহানগর পুলিশে দায়িত্ব পালন করে আসা আনিসুলকে পিটিয়ে হত্যার দাবি করেন স্বজনরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১০নভেম্বর, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর